মাকে ছাড়া একটি মেয়ের জীবন কতটা অপূর্ণ, সেটা কেবল যে হারিয়েছে সেই-ই বোঝে। ছোটপর্দার অভিনেত্রী ‘কৌশাম্বী চক্রবর্তী’র (Kaushambi Chakraborty) জীবনে মায়ের অনুপস্থিতি ঠিক তেমনই এক শূন্যতা। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই আচমকাই মাকে হারিয়েছিলেন তিনি। জীবনের সুখের মুহূর্তগুলো যেখানে মায়ের হাসি ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল, সেখানেই রয়ে গেল এক গভীর হাহাকার। সময় যতই এগিয়েছে, ক্ষত যেন আরও বেশি করে মনে দাগ কেটে গেছে।
অভিনেত্রী হিসেবে কৌশাম্বী বেশ পরিচিত মুখ, বিশেষ করে ‘মিঠাই’ ধারাবাহিকে দিদিয়ার চরিত্রে এবং ‘গৃহপ্রবেশ’ ধারাবাহিকে খলনায়িকা মোহনার জন্য। তবে, দর্শকেরা যতই তাঁকে শক্ত খলনায়িকার চরিত্রে দেখে থাকুন, বাস্তবে তিনি একেবারেই নরম মেয়ে। এই আনন্দ-উৎসবের দিনগুলোতে, যখন চারপাশে হৈ-হুল্লোড় ভরপুর, তখনই মা-শূন্য জীবনের যন্ত্রণা তীব্র হয়ে ওঠে তাঁর। গত বছর বিয়ের পরেই মা চলে যাওয়ায় বরণ করতে পারেনি তিনি।
এই বছর দশমীতে প্রথমবার দেবী দুর্গাকে বরণ করতে গিয়ে সেই মনের ভারই ভাগ করে নিলেন তিনি। দেবীকে বরণ করার কিছু ছবি সঙ্গে স্বামী আদৃত রায় এবং নিজের মায়ের ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে লিখলেন, “মায়েরা আমাদের ছেড়ে আসলে কোথাও যায় না, সবসময় সঙ্গেই থাকে আমাদের। শুভ বিজয়া!” সমাজ মাধ্যমে এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে সমবেদনা জানিয়েছেন অভিনেত্রীকে।
ভক্তদের কাছে তাঁর এই পোস্ট নিছক আবেগ প্রকাশ নয়। অনেকেই সমাজ মাধ্যমে তাঁকে সমবেদনা জানিয়ে লিখেছেন, “চিন্তা করো না তুমি, মা সত্যিই কোথাও যান না। সবসময় তোমার সঙ্গেই আছেন উনি।” আবার অন্যজন লিখেছেন, “তোমার কথা শুনে আমারও মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। আজ কত বছর দেখি না তাঁকে।” এইসব প্রতিক্রিয়াই যেন বলে দিচ্ছে, কৌশাম্বীর দুঃখ তাঁর নিজের সীমানা ছাড়িয়ে অনুরাগীদেরও ছুঁয়েছে।
উল্লেখ্য, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে পর্দায় দেখছেন, তাঁরা অনেকেই জানেন না, মায়ের হাত ধরেই প্রথম স্টুডিয়োতে পা রেখেছিলেন অভিনেত্রী। তাই মায়ের স্মৃতি তাঁর কাছে আজও শিল্পীজীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। মা চলে যাওয়ার পর, সেই কঠিন সময়ে কৌশাম্বীর মানসিক দৃঢ়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। মায়ের মৃ’ত্যুর মাত্র পাঁচ দিন পরেই শুটিং ফ্লোরে ফিরেছিলেন তিনি। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, “মনের জোরেই পাঁচ দিনের মাথায় শুটিংয়ে ফিরেছি।
আরও পড়ুনঃ কথা-এভি ভক্তদের জন্য দারুন সুখবর! সমাপ্তি ঘোষণার পরেও থামছে না ‘কথা’র পথচলা! বদল হচ্ছে সময়, তবে এখনই বিদায় নয়! কবে থেকে দেখা যাবে নতুন সময়ে?
মা সবসময় এটাই চাইত, যেন আমি কাজটা মন দিয়ে করি। তাই মায়ের কথা রাখতেই মনের জোর পেয়েছি।” আজও যখন সেটে দাঁড়ান, বা ক্যামেরা ঘোরে তাঁর দিকে, মনে হয় মা-ই যেন অদৃশ্য হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। কৌশাম্বীর কাছে সেই উপস্থিতি অমূল্য। যতই কাজের ব্যস্ততা থাক, মায়ের অভাবের ক্ষত তিনি এড়াতে পারেন না। তবুও জীবন থেমে থাকে না। অভিনয়ই তাঁর পথ, আর মায়ের ভালোবাসাই সেই পথের একমাত্র চালিকাশক্তি।






“আগে মা-বাবারা গল্প পড়ে শোনাতেন, এখন বাচ্চারা বিরক্ত করলেই মোবাইল ধরিয়ে দেয়!” “বাচ্চারা চুপ করলেও জ্ঞানের বিকাশ কি হয়?”— বর্তমান প্রজন্মের অভিভাবকদের সংবেদনশীলতা নিয়ে খোঁচা শ্রীকান্ত আচার্যের! প্রজন্মের বদলে যাওয়া শিক্ষার ধরণেও কি খেদ পড়ছে?