টলিউডের নায়িকাদের মধ্যে বরাবর আলাদা কদর পেয়েছেন ‘কোয়েল মল্লিক’ (Koel Mallick)। তিনিও সবসময়ই ভেবেচিন্তে নিজের পথ বেছে নিয়েছেন, কখনও তাড়াহুড়ো বা অযথা সিদ্ধান্তে ভরসা করেননি। কেরিয়ারের শুরু থেকে যত কাজ করেছেন, প্রায় সবই দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে। জনপ্রিয় গানে নাচ বা চরিত্রের অভিনয়— প্রতিটিতেই তিনি নিজস্ব ছাপ ফেলেছেন। শুধু বাবার নামের ছায়ায় বড় হওয়া নয়, নিজের যোগ্যতায় জায়গা করে নেওয়ার ইচ্ছেটাই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে।
কিন্তু টলিকুইন কোয়েলের জীবন নিয়ে আলোচনায় বরাবরই উঠে আসে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা। এক সময় অভিনেতা জিৎ-এর সঙ্গে নাম জড়ালেও, তারা কখনওই সেটা স্বীকার করেননি। পরবর্তীতে দু’জনই বেছে নিয়েছে ভিন্ন জীবনসঙ্গীকে। তবে, কোয়েলের একান্ত নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার প্রশংসা আজও সবাই করেন। শুরুর দিকেই পরিবার থেকে বারবার চাপ এসেছিল বিয়ে নিয়ে। কিন্তু তিনি তখন মন দিচ্ছিলেন কেরিয়ারে। পরিবারের পরিচয়ের বদলে অভিনয়ের কৃতিত্বে নিজের নাম করতেই তিনি তখন ব্যস্ত।
তাঁর দৃঢ়তা এমন ছিল যে, যতক্ষণ না তিনি নিজে চাইছেন, ততক্ষণ কেউই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারেননি। ঠিক এই সময়েই নিসপাল সিং রানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। পরিবারও বিষয়টি জানত, তবে কেউই সেভাবে মন্তব্য করেনি। কারণ স্পষ্ট ছিল— কোয়েল যা চান, তাই হবে। সেই ইচ্ছেকেই তাঁরা সম্মান দিয়েছিলেন। কিন্তু সবাই অবাক হয়ে যান যখন কোয়েল হঠাৎ একদিন জানালেন, তিনি বিয়ে করবেন।
ঘটনাটা ঘটে এক সাধারণ সকালে। ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে আটটা। ঘুম ভাঙতেই হঠাৎ করে কোয়েল মাকে বলে বসেন, তিনি বিয়েতে আর অপেক্ষা করতে চান না। সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির সবাই খবর পান। প্রথম ধাক্কা খান রানে নিজেও। তখনও ঘুম থেকে ওঠেননি তিনি। আচমকা ফোনে শোনেন, কোয়েল বিয়ে করতে চান। কিছুটা অবাক হলেও পরে তিনি ফোন করে বিস্তারিত জানতে চান। তাঁর প্রশ্ন ছিল— এত তাড়াহুড়ো কেন? আর কোয়েল চোখ পাকিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করতেই, “মানে!” এর পরেই সবকিছু যেন ঠিক হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ‘অশিক্ষিতের মতো কথা, ক্লাউডবার্স্ট কখনো আগে থেকে বোঝা যায় না!’ উল্টে নেটপাড়ায় কটাক্ষের শিকার অভিনেতা
এইভাবে স্বল্প দিনের পরিকল্পনায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেন কোয়েল। কেরিয়ারের শীর্ষে থাকা অবস্থায়ও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি বা প্রচলিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নয়, বরং নিজের মনের টানে নেওয়া এক হঠাৎ সিদ্ধান্তেই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন তিনি। এভাবেই কোয়েল প্রমাণ করেছিলেন, জীবনে যত বড়ই কাজ হোক না কেন, নিজের বিশ্বাস আর সঠিক সময়ের সিদ্ধান্তই শেষ পর্যন্ত মানুষকে সুস্থ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।