“ থাকত তো দমদম ক্যান্টনমেন্টে, আমি বিয়ে করে সাউথ কলকাতায় আনলাম, এখন বড় বড় কথা বলে… লোপামুদ্রা না থাকলে জয় সরকার হতো না!” দমদমে কী মানুষ থাকেনা? এত অহঙ্কার কীসের? লোপাকে কটাক্ষ নেটিজেনদের

বাঙালি সঙ্গীত শিল্পী ‘লোপামুদ্রা মিত্র’ (Lopamudra Mitra) শুধু সুরের সাধিকা নন, একজন অকপট শিল্পীও বটে। গানের জগতে তাঁর অবদান যেমন অনস্বীকার্য, তেমনই ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি এক স্পষ্টবাদী নারী। সুরকার ‘জয় সরকার’ (Joy Sarkar) -এর সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জীবন এবং সেখান থেকে উঠে আসা গল্পগুলো বহু মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা। তাঁদের প্রথম পরিচয় হয় এক মেলায়, যেখানে জয় মুগ্ধ হন লোপার গানে। সেই প্রেমে বিয়ে অবধি পৌঁছয় ২০০১ সালে। সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বহুবার প্রশ্নের মুখে পড়লেও, সঙ্গীতকেই তাঁরা সন্তানের জায়গা দিয়েছেন। এমন দৃঢ়চেতা শিল্পীর কথাতেই এবার ঝড় উঠেছে!

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে লোপা মিত্র মজার ছলে এমন এক মন্তব্য করেন, যেটা শুনে হাসির বদলে ভুরু কুঁচকেছে অনেকের। তিনি বলেন, “জয় থাকত দমদম ক্যান্টনমেন্ট, আমি বিয়ে করে সাউথ কলকাতায় আনলাম। এখন মোটামুটি সবটা চিনেছে, তাই নিয়ে আবার খুব ভাব দেখায়। সম্প্রতি সাউথ কলকাতা নিয়ে কিছু একটা লেখালেখি করেছে, আমি দেখে ফেসবুকে নিচে গিয়ে কমেন্ট করেছি— লোপামুদ্রা না থাকলে জয় সরকার হতো না!” ব্যস, এই মন্তব্যকে ঘিরেই শুরু হয়েছে চরম সমালোচনা।

নিজের স্বামীকে ‘নিজেই গড়েছি’ ধরনের মনোভাবকে ‘দম্ভ ও অশালীন’ মনে করছেন অনেকে। নেটিজেনদের একাংশ রীতিমতো ক্ষুব্ধ। একজন সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন দমদম ক্যান্টনমেন্ট কি থাকার মতন জায়গা না? খুবই অবাক লাগলো, কলকাতা মানে কিন্তু সাউথ কলকাতা নয়, এটাই হোচ্ছে সাউথ কলকাতার লোকেদের সমস্যা, কি যে মনে করে নিজেদের।” অনেকেই আবার বিষয়টিকে শ্রেণিবৈষম্যের দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখেছেন। একজন লিখেছেন, “মুর্শিদাবাদ চেনেন? সেখানে থেকেই অরিজিৎ সিং হয়েছে বুঝেছেন ম্যাডাম?

উনি কিন্তু সাউথ কলকাতায় থাকতেন না, আজও থাকেন না! তারপরেও অরিজিৎ সিং কিন্তু অরিজিৎ সিং হয়েছেন। আজব কথাবার্তা আপনার, বুঝতেই পারছি আপনি চরম ফ্রাস্টেশনে আছেন। আপনি একটু মানসিক চিকিৎসা করেন, আপনার ভীষণভাবে ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন!” আরও একজন লিখেছেন, “বাব্বা, নিজেকে তো বিরাট কিছু ভেবে ফেলেছেন। আপনি না থাকলে উনি ভালো সুরকার হতে পারতেন না? আর জীবনে উন্নতির জন্য দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে দক্ষিণ কলকাতাতে আসতে হবে এমনও কোনো কথা নেই।

নিজের স্বামী কে এতোটা অসম্মান করে প্লিজ কথা বলবেন না। জয় সরকার অত্যন্ত গুণী একজন মানুষ আর কথাবার্তাও আপনার থেকে অনেক মার্জিত, পরিশীলিত। আপনার মতো দাম্ভিক নন।” এমন মন্তব্য একবার নয়, একাধিকবার এসেছে, এমনকি কেউ আবার ভদ্রভাবেও নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “দিদি আপনি অত্যন্ত গুনী একজন শিল্পী। আপনার শিল্পী স্বত্বাকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আপনার এই মন্তব্য আমাকে ও আমার মতো আরও অনেক মানুষকে খুব আঘাত দিল।

আরও পড়ুনঃ আদালতে স্বামীর মুখোশ খুলে দিল কুর্চি, স্বীকার করল অয়নদীপই তাঁর অত্যাচারী স্বামী! কমলিনী-স্বতন্ত্রের নামে নোংরা ইঙ্গিতের সূত্রপাত করেছিল বর্ষা, মুখ খুলল কুর্চি! অয়নদীপের বিকৃত মনোভাবের রেকর্ডেড প্রমাণ জমা পড়তে চলেছে আদালতে!

কেন দমদম ক্যান্টনমেন্ট কি বসবাসের কোনও অযোগ্য জায়গা? স্বামীকে এতো নীচু করে কেন বলছেন? ওনার প্রতিভার জোরেই উনি সফল। ওনার প্রতিভা বাবা, মায়ের থেকে উনি পেয়েছেন। ওনার বাবাও একজন শিল্পী ছিলেন ‘সুধীন সরকার’ উনিও ভালো গান করতেন। আর যদি অবহেলা করবেন, তাহলে কেন বিয়ে করতে গেছিলেন ঐ ফালতু জায়গায় থাকা ছেলেটাকে?” লোপামুদ্রা হয়তো মজার ছলেই বলেছিলেন কথাগুলো, কিন্তু তাতেই উঠে এল মধ্যবিত্ত মানসিকতার ওপর তার বেমক্কা দম্ভ, যা শিল্পীর সৌন্দর্যকে এক লহমায় ধুলোয় মিশিয়ে দিল।