“স্বাভাবিক শৈশব হারিয়ে যাচ্ছে! বাচ্চাদের নৃত্যশিল্পীর বদলে অ্যাক্রোব্যাট বানানো হচ্ছে” – বর্তমান নাচের ধারা নিয়ে কড়া বার্তা মমতা শংকরের!

আজকের দিনে টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো গুলি শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, শিশুদের প্রতিভা তুলে ধরার বড় মঞ্চও হয়ে উঠেছে। গান, নাচ, অভিনয়—সব ক্ষেত্রেই ছোট্ট শিল্পীরা নজর কাড়ছে দর্শকদের। তবে এর মধ্যেই উঠছে এক নতুন বিতর্ক। অনেকেই মনে করছেন, এসব অনুষ্ঠানে শিশুর স্বাভাবিক শৈশব ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গেই মুখ খুলেছেন বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী মমতা শংকর, যার বক্তব্যে টলিপাড়ায় শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়।

মমতা শংকর দীর্ঘদিন ধরেই শিশুদের নাচ ও সৃজনশীলতার পক্ষে কথা বলেছেন। তবে এবার তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে এক ভিন্ন সুর। তিনি মনে করেন, এখনকার রিয়েলিটি শো গুলিতে শিশুদের নাচের ধরন অনেকটাই বদলে গেছে। ছোটদের বয়স অনুযায়ী সহজ, স্বাভাবিক নাচের পরিবর্তে সেখানে দেখা যাচ্ছে অতিরিক্ত বড়দের মতো শারীরিক অঙ্গভঙ্গি। এই পরিবর্তন নিয়ে তাঁর উদ্বেগ স্পষ্ট। কিন্তু কেন তিনি এতটা কঠোর মতামত দিলেন?

এক সাক্ষাৎকারে মমতা শংকর জানান, শিশুদের নাচে সরলতা ও শৈল্পিকতার জায়গায় এখন জায়গা নিচ্ছে অ্যাক্রোবেটিকস। তাঁর ভাষায়, “বাচ্চাদের নৃত্যশিল্পীর বদলে অ্যাক্রব্যাট বানানো হচ্ছে।” তিনি মনে করেন, এই ধরণের প্রশিক্ষণ ও উপস্থাপন শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য সব সময় ইতিবাচক নয়। তাঁর মতে, শিশুদের নাচ হওয়া উচিত তাদের বয়স ও স্বাভাবিক শারীরিক সক্ষমতার সঙ্গে মানানসই।

মমতা শংকর আরও বলেন, প্রতিযোগিতার চাপে অনেক শিশুই এমন কিছু স্টেপ ও ভঙ্গি শিখছে, যা তাদের শরীরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। শুধু তাই নয়, বড়দের মতো পোশাক, মেকআপ ও এক্সপ্রেশন ছোটদের স্বাভাবিক ভাবমূর্তিকে বদলে দিচ্ছে। দর্শক আকর্ষণের জন্য এই কৌশলগুলি জনপ্রিয় হলেও, তা শিশুদের সৃজনশীলতার স্বাভাবিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে তাঁর মত।

আরও পড়ুনঃ গ্রেফতার হতে পারেন অরিজিৎ সিং? শান্তিনিকেতনে শুটিংয়ের ফাঁকে স্থানীয় শিল্পীকে হেনস্থার অভিযোগ! পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পীর ভাবমূর্তিতে প্রশ্নচিহ্ন!

এই কারণেই তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, কোনও রিয়েলিটি শো-র বিচারকের আসনে বসতে তিনি আগ্রহী নন। তাঁর মতে, শিশুদের প্রতিভা বিকাশের জন্য দরকার সঠিক দিশা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ, যেখানে তারা আনন্দের সঙ্গে শিখতে ও নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। মমতা শংকরের এই বক্তব্য নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে—আমরা কি বিনোদনের নেশায় শিশুদের শৈশবকে বদলে দিচ্ছি?

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।

You cannot copy content of this page