অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে খুব ছোটবেলাতেই যাত্রা শুরু করেছিলেন ‘মানসী সিনহা’ (Manasi Sinha)। মাত্র তিন বছর বয়সে থিয়েটারের মঞ্চে পা রাখা মেয়েটিই আজ বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতের এক অত্যন্ত পরিচিত এবং প্রিয় মুখ। নাট্যমঞ্চেই যার প্রথম পরিচিতি, সেই মানুষটির অভিনয় আজ দর্শকদের মনের গভীরে ছাপ ফেলে চলেছে। থিয়েটারের পরিবেশেই বড় হওয়া মানসীর বেড়ে ওঠার প্রতিটি ধাপে অভিনয় ছিল এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর প্রতিটি চরিত্রে রয়েছে বাস্তবতার ছোঁয়া এবং আবেগের নিখুঁত প্রকাশ।
অভিনয়ের জগতে একজন অভিনেত্রী হিসেবে যে পরিপক্বতা থাকা উচিত, মানসী ঠিক তার উদাহরণ। নাটক, সিনেমা এবং এখন পরিচালনার জগতে নিজের জায়গা করে নেওয়া মানসী সিনহা বাস্তব জীবনেও এক অসাধারণ মানুষ। পর্দায় যিনি ‘মা’ চরিত্রে এতটা সাবলীল, তিনি বাস্তবেও যেন একজন আদর্শ মা, একেবারে পাশের বাড়ির হাসিখুশি প্রতিবেশীর মতো। তাঁর প্রাণবন্ত উপস্থিতি, মিষ্টি হাসি এবং সহজাত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে করে তুলেছে আরও আপন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সমাজের বর্তমান চিত্র এবং মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে নিজের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেন মানসী। তাঁর মতে, মানুষকে পাশে না রাখলে জীবন একাকীত্বে ভরে যায়। মানসীর কথায়, “আজকের যুগে মানুষ মানুষের পাশে না দাঁড়ালে খুব মুশকিল। তুমি যত বেশি স্বার্থপর হতে থাকবে, তত বেশি তোমার জগৎ ছোট হতে থাকবে। কাজেই স্বার্থপর হওয়ার মধ্যে কোন গর্ব বা সুবিধা নেই। কারণ স্বার্থপর হয়ে তুমি নিজের জন্য যেটা জড়ো করছো, একদিন কিন্তু ছেড়ে চলেই যেতে হবে। সবার জন্য না ভাবলে জীবনে অনেক সমস্যা।”
শুধু কথায় নয়, নিজের জীবন দর্শনেও এই মনোভাব প্রতিফলিত করেন মানসী। পরিবার, সমাজ, কর্মক্ষেত্র – সব জায়গাতেই তিনি নিজেকে একজন সহমর্মী এবং দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর মতে, “আমি কখনও স্বার্থপরতা শিখে বড় হইনি, আমার মা-বাবার মানসিকতা এমন ছিল না। আমি থিয়েটারের মেয়ে, কাজেই কোনদিনও ভাবতেই পারিনি যে একা বা আলাদা বলে কিছু হতে পারে।” এই কথার মধ্যেই তাঁর চিন্তাধারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে – একার জন্য নয়, সবার সঙ্গে মিলেই বাঁচতে শেখা।
আরও পড়ুনঃ নাতনি হওয়ার খবরই জানেন না! মেয়ের মা হওয়ার সংবাদ শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাঁদনী গঙ্গোপাধ্যায়!
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। আত্মীয়-পরিজন হোক বা অচেনা কেউ – মানুষের প্রয়োজনে এগিয়ে আসাকে জীবনের মূলমন্ত্র মনে করেন মানসী। তিনি বলেন, “বাড়িতে যদি কারোর রক্তের প্রয়োজন হয়, তাকেও আমি যতটা রক্ত দেবো, ঠিক যতটা বাইরের কারোর প্রয়োজন হলে দেবো। আমি এটা শিখেই বড় হয়েছি।” এই একবাক্যেই যেন তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর জীবনের শিক্ষা মানবিকতার মাটিতে দাঁড়িয়ে। একজন অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও মানসী সিনহা তাই সবার থেকে আলাদা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।