“একমাত্র সুস্থ রুচিবোধ এবং শিক্ষার অভাবেই মানুষ এমন মন্তব্য করে!” মুর্শিদাবাদের র’ক্তা’ক্ত প্রেক্ষাপটেও মীর মত্ত দিলীপের বিয়ে নিয়ে রসিকতায়! ধুয়ে দিল নেটপাড়া

বি’কৃত রুচি, তীব্র শিক্ষার অভাব!’ মীরকে আয়না দেখালো সমাজ

রাজ্যে এখন একের পর এক জেলা জ্বলছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন, এই পরিস্থিতিতে ‘মীর আফসার আলি’ (Mir Afsar Ali) মেরুন পাঞ্জাবি, ঘিয়ে রঙের ধুতি আর মাথায় টোপর পড়ে পোজ দিয়ে দাঁড়িয়ে ছবি দেখিয়ে জানালেন— “আজ আমি নীতবর! কার বিয়েতে যাচ্ছি বলুন তো?” দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নতুন জীবনের সূচনা উপলক্ষে এমন একটি পোস্ট করে কার্যত কটাক্ষের আ’গু’নে ঘি ঢাললেন তিনি নিজেই। টোপর মাথায়, পাঞ্জাবি-ধুতি পরে মীরের হাস্যরসের ছবিতে হাসলেন অনেকেই, তবে কেউ কেউ ফেটে পড়লেন ক্ষো’ভে।

এই ঘটনার নেপথ্যে রাজ্য, রাজনীতি ও ধর্ম নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে এই রকম পোস্টের রসিকতা অনেকের চোখে ঠাট্টা নয়, অসংবেদনশীলতার এক নির্লজ্জ নিদর্শন মনে হয়েছে অনেকের। মুর্শিদাবাদে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার রক্তাক্ত প্রেক্ষাপটে যখন রাজ্যর মানুষ থরথর করে কাঁপ’ছে, নিরীহ মানুষের ঘর পুড়’ছে, জীবন তছ’নছ হয়ে যাচ্ছে—তখন একজন তথাকথিত সেলিব্রিটি হয়ে কীভাবে নির্লজ্জ ঠাট্টা করেন, সেই প্রশ্নে ক্ষুব্ধ নেটপাড়া। একজন প্রতিভাবান শিল্পী হয়ে কিভাবে অহেতুক বিষয় হাস্যরস সৃষ্টি করলেন এমন পরিস্থিতিতে, ভাবছেন অনেকেই। রাজ্য যখন মুর্শিদাবাদের ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠছে সকলে,

এমন পরিস্থিতিতে মীরের এই পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নেটিজেনরা— “আপনি এখনো বেঁচে আছেন?” অভিনেতা ও উপস্থাপক মীর নানা বিষয়ে সোচ্চার হলেও নিজের রাজ্যের জ্বলন্ত পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কুলুপ! অনেকেই বলছেন, সাহিত্য পাঠ করে যিনি সকল মানুষের মন জয় করেন, তিনিই কিভাবে এভাবে সামাজিক ঘটনার দিক থেকে পিঠ ফিরিয়ে অহেতুক হাস্যরসে অংশ নেন? একজন মুসলিম হিসেবে মীরের পোস্ট যে বাড়তি নজরে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ঝড়,

তখন একজন মুসলিম শিল্পীর পক্ষ থেকে এমন ‘বিয়ের নিয়ে রসিকতা’ অনেকেরই সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।অনেকেই বলছেন, “একমাত্র সুস্থ রুচি, শালীনতাবোধ এবং শিক্ষার অভাব হলেই মানুষ এইরকম জঘন্য কথাবার্তা বলে”, তো আবার অনেকেই বলছেন, “যাক, সুস্থ আছেন, রসে বসে আছেন। আপনাদের থেকে শেখার আছে, কিভাবে নিজের রাজ্য, জেলা জ্বললেও চুপ থাকতে হয়। আচ্ছা যাদের বাড়ি জ্বলল, ভিটেমাটি ছাড়া হলো, সর্বস্ব লুট হলো তাদের মধ্যেও তো আপনার ভক্ত ছিলেন হয়ত কেউ।” অন্যদিকে, রিঙ্কু মজুমদার ও দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কটাক্ষ করায় অন্যজন

লিখেছেন,”প্রত্যেক মানুষের নিজের নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার আছে অবশ্যই ভদ্র ভাবে, যোগ্য মর্যাদা দিতে লুকোচুরি করে বেলেল্লাপনা না করে সন্মান জনক সম্পর্ক তৈরী করে। দু জন প্রাপ্তবয়স্ক তারা সামাজিক ভাবে একসাথে থাকা র সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে কার কি বলুন দেখি??” আবার কেউ কেউ তো সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, “আপনি বেঁচে আছেন?? আপনার জেলার বিশেষ বিশেষ খাস খবর কি??” কেউ কেউ তো ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে বলেছেন, “মুর্শিদাবাদ, মোথাবাড়ি, রাজ্যের দাঙ্গা, দুর্নীতি এসব নিয়ে বলতে গেলেই এরা বোবা হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ “এখনও স্বপ্নে এসে মহানায়ক উত্তম কুমার আমায় আদর করেন, স্বপ্নে তাকে চুমু থেকে বিছানায় টেনে আনা যায় না!”— মহানায়ক’কে নিয়ে অপূর্ণ ভালোবাসার বেফাঁস স্বীকারোক্তি মানসীর!

ভালো গল্প পাঠ করেন আপনি কিন্তু মুর্শিদাবাদ ঘটনা নিয়ে চুপ করে থেকে নিজের সন্মান নিজেই হারালেন।” এখন প্রশ্ন উঠছে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থেই কী মীর ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যের পরিস্থিতিকে এড়িয়ে যাচ্ছেন? সব মিলিয়ে বলাই যায়, ‘আজ আমি নীতবর’ হয়ে যে মীরের এই ব্যঙ্গাত্মক পোস্টে আসলে তিনি নিজেকেই সমালোচনার পাত্র করে ফেললেন, তা নিয়ে কারোরই দ্বিমত নেই। হাস্যরসের মোড়কে রাজ্যবাসীর যন্ত্রণাকে এড়িয়ে যাওয়া, সেটাই যেনো মীরের বিরুদ্ধে সমালোচনার মূল কেন্দ্রে।