‘একটু আঙুল টিপে দিলাম, উনি সাড়া দিলেন,’ মুখ্যমন্ত্রী ডাকতেই সারা দিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়

হাসপাতালের করিডোরে পা রাখতেই যেন ভক্তদের মনে আশার আলো ফুটলো। স্বয়ং মমতা ব্যানার্জি এলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে দেখতে! মুখ্যমন্ত্রী যে শুধু রাজনীতি বোঝেন তা নয়, ডাক্তারিও বোঝেন বটে! তাই তো হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই বিশ্লেষণ দিলেন— “সব অরগ্যান ঠিকভাবে কাজ না করলে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়।” ডাক্তারবাবুরা তো এমন বিশদ ব্যাখ্যা দেন না! দুই দিন ধরে কোনো সাড়া দিচ্ছিলেন না প্রতুল, কিন্তু আজ মমতার ডাক শুনেই হাত বাড়িয়ে দিলেন! এমন ঘটনা যদিও শুধু সিনেমাতেই দেখা যায়।

এ তো গেল ডাকাডাকির গল্প, এবার আসল ব্যাখ্যাটা শোনা যাক। মমতা বললেন, “মানসিক শক্তি থাকলে মানুষ ফিরে আসে, নাহলে শত চেষ্টা করলেও ফেরানো যায় না।” মমতার এমন বক্তব্যকে গভীর দার্শনিক বাণী হিসেবে বিবেচনা করেছেন অনেকে। তারা মনে করছেন এমন হলে ডাক্তারদের এত ওষুধ-পথ্যের দরকারই নেই, শুধু মানসিক শক্তি আর ইচ্ছে থাকলেই হলো। মুখ্যমন্ত্রীর এই থিওরি যদি মেডিক্যাল সায়েন্স মানতো, তাহলে হাসপাতালগুলোতে শুধু ‘মনোবল বাড়াও’ কর্মশালা চলত, আইসিইউ, ভেন্টিলেশন এসবের কোনো দরকারই পড়ত না।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের অবস্থা সত্যিই গুরুতর, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই যেন সাড়া দিতে শুরু করলেন। ডাক্তাররা যেখানে রীতিমতো চিন্তায়, সেখানে মমতা এক মুহূর্তেই রোগ নির্ণয় করে ফেললেন। এদিকে সাংবাদিকরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে মেডিক্যাল বুলেটিন পাওয়ার পর যেন একটু হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। ডাক্তারদের কথায় তো অত বিশ্বাস নেই, কিন্তু নেত্রী যখন বলছেন, তখন নিশ্চয়ই নির্ভরযোগ্য।

আরও পড়ুনঃ ‘দেবী’ শ্রেয়ার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম বাদশা-বিশালের! ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে ঘটলো বিরাট কান্ড! কিন্তু কেন?

তবে মমতা ব্যানার্জি শুধু হাসপাতালে গিয়ে চুপচাপ থাকবেন, সেটা তো আর হয় না! জানা গেছে প্রতুলের আঙুল টিপে দিয়েছিলেন তিনি, যেন ‘ভালো হয়ে যাও’ ওষুধ প্রয়োগ করলেন। এমন স্পর্শ চিকিৎসা যদি সত্যিই কাজ করত, তাহলে তো উনি হাসপাতালে গেলেই সব রোগী সুস্থ হয়ে যেতেন। রোগীদের আর কিছু লাগবে না, শুধু একবার মমতা ব্যানার্জির আশীর্বাদ পেলেই হলো! এই ঘটনাকে অনেকেই কটাক্ষ করেছেন।

অনেকেই মনে করছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায় সত্যিই সংকটজনক অবস্থায় আছেন, সেটার গুরুত্ব অস্বীকার করার নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই “আমি ডাকতেই সাড়া দিলো” নাটকীয়তা না থাকলেই বরং ভালো হতো। অনেকেই ওনার সুস্থতা কামনা করেছেন, তবে নেতানেত্রীদের হাসপাতালে গিয়ে মিরাকলের গল্প বানানো বন্ধ হওয়া দরকার বলেও মনে করেছেন। চিকিৎসা চিকিৎসকের হাতে থাক, রাজনীতির খেলা না হোক!

You cannot copy content of this page