“জীবনটা ‘শকুন্তলা বড়ুয়ার মেয়ে’, ‘আশিস বিদ্যার্থীর স্ত্রী’ হিসেবেই বেঁচেছি, এবার নিজের পরিচয় বাঁচতে চাই!” “আশিসের স্ত্রী দরকার ছিল, বন্ধু না!”— এতদিন পর জীবনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুললেন আশিস বিদ্যার্থীর প্রাক্তন স্ত্রী পীলু! জানালেন কীভাবে সমাজের পরিচয় ছাপিয়ে নিজের অস্তিত্বকে ফিরে পেয়েছেন তিনি!

টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘শকুন্তলা বড়ুয়া’র (Shakuntala Barua) মেয়ে রাজশী, যিনি পীলু বিদ্যার্থী (Rajoshi Barua) নামেই একসময় পরিচিত ছিলেন। শুধুমাত্র কারও স্ত্রী বা কন্যা হিসেবেই যেন নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছিলেন ক্রমশ। অথচ তাঁর নিজের একটা জগৎ ছিল, নিজের কণ্ঠে ভর করে মানুষ চেনা এক সময়ের আরজে তিনি। কিন্তু ‘আশিস বিদ্যার্থী’কে (Ashish Vidyarthi) বিয়ের পর সেই স্বাধীনতা যেন হারিয়ে ফেলেছিলেন ধীরে ধীরে। সংসার, দায়িত্ব আর সমাজের নির্দিষ্ট কাঠামো তাঁকে গিলে ফেলেছিল প্রায়।

তাই তিনি আজ শুরু করেছেন জীবনের নতুন অধ্যায়। নিজের পরিচয়ে বাঁচার কথা বলছেন সবাইকে! প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৫ মে পীলুকে ডিভোর্স দিয়ে অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে করেন রূপালী বরুয়াকে। খবরটি সামনে আসতেই নেটপাড়ায় শোরগোল পড়ে যায়। অনেকেই তখন প্রশ্ন তুলেছিলেন— প্রাক্তন স্ত্রী পীলু বড়ুয়ার সঙ্গে হঠাৎ বিচ্ছেদ কেন? এত বছরের সম্পর্ক ভেঙে গেল কীভাবে? কিন্তু পীলুর গলায় কোনও অভিমান ছিল না, বরং পরিপক্ব শান্তি।

এতদিন সেভাবে কিছু না বললেও, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন বিচ্ছেদের আসল কারণ। তিনি এদিন বলেন, আশিস তাঁর সঙ্গে কখনও প্রতারণা করেননি। এমনকি বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তটিও ছিল দু’জনের যৌথ! পীলু বলেন, “আমরা কেউ কারও উপর জোর করিনি। বছরের শেষেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিভোর্স ফাইল করেছিলাম। কারণ আমাদের মতভেদ ছিল, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও একেবারেই আলাদা ছিল।”

তাঁর কথায় এদিন একধরনের দৃঢ়তা ছিল— এমন এক নারী, যিনি নিজের জীবনের হাল আবার নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন তিনি ‘শকুন্তলা বড়ুয়ার মেয়ে’ বা ‘আশিস বিদ্যার্থীর স্ত্রী’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর ইচ্ছে নিজের নামে, নিজের পরিচয়ে বাঁচার। তাঁর মতে, সম্পর্কের ভাঙনে কোনও তিক্ততা নেই। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, “কেউ কারও উপর মানসিক বা শারীরিক অত্যাচার করিনি।

আমরা বিচ্ছেদের আগেই অনেকদিন ধরে আলাদা থাকতাম।” এই কথাগুলোর মধ্যেই স্পষ্ট, পীলু অতীতকে দোষারোপ করতে চাননি। তিনি সেই অতীতকেই সম্মান জানিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার পথে হাঁটছেন। আশিসের নতুন বিয়ে নিয়েও তাঁর মনোভাব অত্যন্ত পরিণত। তিনি বলেছেন, “একা তো আর সারা জীবন বাঁচা যায় না, আমি আলাদা হতে চেয়েছিলাম কিন্তু আশিসের তো একজন সঙ্গী লাগতই, দোষারোপ করার কিছু নেই।”

আরও পড়ুনঃ ভক্তদের অতিরিক্ত ভালোবাসায় মেজাজ হারালেন যিশু সেনগুপ্ত! তারকারাও কি মানুষ নয়? নায়ককে ঘিরে সমালোচনার মাঝে উঠল নতুন প্রশ্ন

অন্যদিকে আশিসও তখন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “এই বয়সে রূপালীকে পেয়েছি, এটাই অনেক।” এটি শুধু এক দম্পতির বিচ্ছেদের গল্প নয়, এটি এক নারীর নিজের পরিচয় ফিরে পাওয়ার গল্পও বটে! সমাজের নির্ধারিত পরিচয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে পীলু আজ যেন নিজের মতো করে বলছেন, জীবন এখানেই শেষ নয়, বরং নতুন করে শুরু হতে পারে যেকোনও সময়। এই বিষয়ে আপনাদের কী মতামত? সম্পর্কে থেকে কি নিজের পরিচয় গড়া যায় না?