“মমতা শঙ্করের মতন মা পেলে সন্তান এমনই হয়”— মায়ের স্পষ্টভাষী মনোভাবই জীবনের শিক্ষায় আলো এনে দিয়েছে, অকপট প্রশংসা ছেলে রাতুল শঙ্করের!

মা, এই শব্দটার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভালোবাসা, শাসন, শিক্ষার মিশেল। কিন্তু মায়ের মতো স্পষ্টভাষী, অনমনীয়, জেদি একজন মানুষের সঠিক অভিভাবকত্ব হয়ে দাঁড়ায় এক সন্তানের শক্তিশালী গঠনের ভিত্তি। এমনটাই বিশ্বাস করেন অভিনেতা ও শিল্পী ‘রাতুল শঙ্কর’ (Ratul Shankar)। মা ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar) –এর স্পষ্ট মতাদর্শ, কঠোর অনুশাসন এবং সাহসী বক্তব্যই আজ তাঁর জীবনের চালিকা শক্তি—এই কথা অকপটে স্বীকার করে নেন রাতুল।

রাতুল কখনওই ক্যামেরার সামনে নিজেকে দেখার স্বপ্ন দেখেননি। বরং তিনি সবসময়ই ক্যামেরার পেছনের কাজের প্রতি উৎসাহী ছিলেন। পড়াশোনার সময় ভিডিওগ্রাফির জগতে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলছিলেন। সেই সময়েই পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ তাঁকে ‘উৎসব’ ছবিতে এক প্রকার জোর করেই অভিনয় করান। তবে পরবর্তীতে দীর্ঘদিন তিনি অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন।

সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমকে তিনি মায়ের শিক্ষা এবং তাঁকে নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। বরাবরই একটা প্রশ্ন ওঠে, শুধু সেলেব সন্তান বলেই কী সুযোগ পেয়েছিলেন ঋতুপর্ণের ছবিতে? এই প্রসঙ্গে রাতুলের উত্তর স্পষ্ট—তিনি এই সুযোগ অর্জন করেছেন নিজের যোগ্যতায়। মা মমতা শঙ্করের মতাদর্শকেও তিনি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। তাঁর মতে, অনেকেই মনে সাহস রাখেন না সত্য কথা বলার।

কিন্তু তাঁর মা সবসময় নির্ভয়ে মুখ খুলেছেন। আজকের যুগে এমন সত্যভাষী মানুষই প্রয়োজন, যাঁরা দায়িত্ব নিয়ে মত প্রকাশ করতে পারেন। মায়ের স্পষ্টভাষী মনোভাব, সততা ও আত্মবিশ্বাসই তাঁকে গড়ে তুলেছে বলেই জানান তিনি। শুধু মতামত নয়, রাতুলের জীবনে মায়ের শাসনও এক বড় শিক্ষা। তিনি জানান, ছোটবেলায় বন্ধুদের স্বাধীনতা দেখে তাঁর হিংসা হতো। কিন্তু তাঁদের মা সেই সব কিছুতেই রাশ টেনেছিলেন।

আরও পড়ুনঃ ‘মেজোবউ’ হিসেবে সবার মন জিতেছেন তিনি, তবে চুমকি চৌধুরীর প্রথম পছন্দ ছিল না অভিনয়! নায়িকা হতে চাননি অঞ্জন কন্যা! তবে কোন পেশার স্বপ্ন দেখতেন ছোটবেলায়? অজানা ইচ্ছে ফাঁস করলেন স্বয়ং নিজেই!

আজ তিনি বুঝতে পারেন, সেই শৃঙ্খলাই তাঁকে গড়ে তুলেছে। এখন যাঁরা ছেলেবেলায় অতিরিক্ত স্বাধীনতা পেয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ হারিয়ে গেছে। রাতুল শঙ্করের মতে, তাঁর জীবনের প্রতিটি মোড়ে মায়ের কঠোর ভালোবাসা এবং অকপট সততার ছায়াই তাঁকে পথ দেখিয়েছে। আজ তিনি যে মানুষ, পেছনে একার কৃতিত্ব তাঁর মায়ের। ঝগড়া হয়েছে, মতবিরোধ হয়েছে, কিন্তু ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার বাঁধন কখনও আলগা হয়নি।