“বাই দ্যা ওয়ে ইউ লুক গুড ইন শাড়ি!”, একাধিক নারীর পাশাপাশি অভিনেত্রীদেরও ইনবক্সে একই বার্তা ঋজুর! “অনেকদিন কাজ না পেয়ে মানসিক ভা’র’সা’ম্য হারিয়েছে!” ” সব নারীকে একই প্রশংসাটা অস্বস্তিকর বিষয়!”, কটাক্ষ নেটিজেনদের!

একসময় বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ‘বউ কথা কও’ থেকে ‘তোমায় আমায় মিলে’— দুটি ধারাবাহিকেই নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখে গিয়েছিলেন অভিনেতা ‘ঋজু বিশ্বাস’ (Riju Biswas)। সেই জনপ্রিয় মুখই আজ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। গত কয়েকদিন ধরে সমাজ মাধ্যমে তাঁর নামে অভিযোগে সরব হয়েছেন একাধিক তরুণী। কেউ কেউ জানিয়েছেন, অভিনেতা ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের ইনবক্সে বারবার মেসেজ পাঠাতেন। সবচেয়ে সাধারণ ম্যাসেজ ছিল— “বাই দ্যা ওয়ে ইউ লুক গুড ইন শাড়ি!” (Btw you look good in saree) এই মন্তব্যই এখন নেটদুনিয়ার ট্রেন্ডিং আলোচ্য বিষয়।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ২৮ অক্টোবর রাতে, এক তরুণী বৃষ্টির পোস্ট থেকে। তিনি সমাজ মাধ্যমে কিছু ব্যক্তিগত কথোপকথনের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, ঋজু তাঁকে অশা’লীন প্রস্তাব দিয়েছেন। এই পোস্টের পর আরও একাধিক নারী এগিয়ে এসে একই ধরনের অভিযোগ তোলেন। এক সময় যিনি দর্শকের ভালোবাসায় ভেসেছেন, সেই অভিনেতাকে ঘিরে এমন অভিযোগে হতবাক হয়ে পড়েছে পুরো ইন্ডাস্ট্রি। অনেকেই মজা করলেও, কেউ কেউ বিষয়টিকে মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত করে দেখছেন।

Actor Riju Biswas Breaks Silence On Sexually Explicit And Vulgar Messages Controversy

সমাজ মাধ্যমে খুললেই এখন এই একটা খবর ট্রেন্ডিং তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এই নিয়ে হাসি মজার পাশাপাশি, অনেকেই কিছু স্পর্শকাতর কারন বা অত্যন্ত জরুরি বিষয় খুঁজে পেয়েছেন। কেউ বলেছেন, “আমার ব্যক্তিগতভাবে একটু খারাপ ই লাগছে! আমার প্রশ্ন – একজন জনপ্রিয়, পরিচিত অভিনেতা কেন হঠাৎ এমন করবেন? মনে হচ্ছে, অনেকদিন কাজ না পেয়ে হয়তো মানসিকভাবে ভা’র’সা’ম্য হারিয়েছে!” একজনের মতে, “অনেকদিন ধরেই তো পর্দায় তাকে দেখা যায় না, হয়তো অবসাদে এইসব ভুলভাল কাজ করছে!”

অন্যজন বলেছেন, “অবশ্যই কোনো নারীকে শাড়িতে সুন্দর লাগছে বলা একটা সুন্দর প্রশংসা, কিন্তু যখন সেটা প্রায় সব মেয়ের ইনবক্সে পাঠানো হয় তখন সেটা আর প্রশংসা নয় বরং অস্বস্তিকর বিষয়! এটা করাও অন্যায়! যদি সত্যিই তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে এমন আচরণ করে থাকেন, তাহলে আমার একটাই প্রার্থনা ঋজু বিশ্বাস যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে কাজে ফিরুক আর এসব কাজকর্ম বাদ দিক।” উল্লেখ্য, বৃষ্টির অভিযোগের পর একাধিক নারীর পাশাপাশি, একাধিক অভিনেত্রীও স্ক্রিনশট প্রকাশ করে জানান তারাও একইভাবে ভুক্তভোগী!

কথাটি জানাজানি হতেই, সংবাদ মাধ্যমকে ঋজু সাক্ষাৎকারে জানান, “আমি কোনও অশা’লীন মন্তব্য করিনি, প্রমাণ থাকলে পুলিশে গিয়ে অভিযোগ করুক! মিথ্যা কথা আমি বলি না। কাউকে শাড়িতে ভালো লাগছে বলাটা কি খুব অন্যায়? কয়েকদিন আগে আমি আমার মাকেও এই কথাটা বলেছি। আমি হাজার মেয়েকে মেসেজ করতেই পারি, কিন্তু কু’প্রস্তাব কাউকে দেয়নি! ” তাঁর মতে, সব কিছুই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তবে এই বিতর্কের পর থেকে শিল্পীজগতের অনেকেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

আরও পড়ুনঃ “তোমার মত চরিত্রে’র দোহাই দিয়ে ভাতে মা’রা হচ্ছে আমাদের!” “লেবারের থেকেও বাজে ব্যবহার করে, আমার প্রাপ্য সম্মান চাই!”— দীর্ঘ ২০ বছর টলিউড থেকেও দুর্ব্যবহার, কাজের খিদে নিয়ে সমাজ মাধ্যমে অসহায়তা প্রকাশ রূপালির! ইন্ডাস্ট্রির গোষ্ঠীবাজি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনিও?

কেউ সরাসরি মন্তব্য না করলেও, নেপথ্যে চলছে নানা আলোচনা। দীর্ঘদিন ধরে পর্দা থেকে দূরে থাকা এই অভিনেতার জীবনে এই বিতর্ক নিঃসন্দেহে একটি কঠিন অধ্যায়। এখন দেখার বিষয়, তিনি কীভাবে এই অভিযোগের পর ফের নিজের জায়গায় ফিরে আসেন। দর্শকরা আপাতত অপেক্ষায়— পর্দার সেই প্রিয় নায়ক কি আর কখনও আগের মতো ফিরে আসতে পারবেন? এই বিষয়ে আপনাদের কী মতামত? জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!