“প্রতিভা নয়, শু’য়েই কাজ পেয়েছেন অনেকে। এখনো অনেক প্রযোজক-পরিচালকেরা না শু’য়ে কাজ দেন না”—টলিউডের হিং’স্র বাস্তবতা তুলে ধরে সরব ঋতাভরী!

টলিউড অভিনেত্রীদের মধ্যে সৌন্দর্য আর প্রতিভার মেলবন্ধন মানেই অনেকে মনে করেন ‘ঋতাভরী চক্রবর্তী’ (Ritabhari Chakraborty) । ছোট পর্দার ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ থেকে আজকের বলিউড যাত্রা, পথটা সহজ ছিল না। অভিনয় হোক বা নিজের মত প্রকাশ ঋতাভরী বরাবরই স্পষ্ট, আপোষহীন। আর ঠিক সেই কারণেই কখনও প্রশংসা, কখনও আবার জুটেছে কড়া সমালোচনা। সমাজ-ইন্ডাস্ট্রির রুচিহীন মানসিকতা তাঁকে আজও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। শুধু অভিনয় নয়, টলিপাড়ার অন্দরমহলের কালো কীর্তি ফাঁস করলেন অভিনেত্রী।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঋতাভরী জানান, অভিনয় দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কাজ পাওয়ার জন্য নিজের শরীর বিলিয়ে দিয়ে হয় কিছু পরিচালক এবং প্রযোজকদের কাছে, এমন বাস্তবতা টলিউডে আজও বদলায়নি। নাম না করেই তিনি এদিন বলেন, এমন কিছু লোক আছে যারা শরীর না দেখে কাজ দেন না, সেক্ষেত্রে নারীরাও কিছু কম যান না। নারী পুরুষ নির্বিশেষে ইন্ডাস্ট্রিতে এই কুকীর্তি চলে। তিনি আরও বলেন, “এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে, যেখানে অভিনয় মানেই শরীর, পোশাক মানেই সম্মতি।”

Body needs in Tollywood

এদিন অভিনেত্রীর কথায়, এই ‘শরীর কেন্দ্রিক’ দৃষ্টিভঙ্গি এতটাই গোঁড়া যে, একটি রিভিলিং পোশাক পরলেই কেউ কেউ ধরেই নেন অভিনেত্রী ‘সব কিছু’ করতে পারে, যদিও অনেকের ক্ষেত্রে সেটা ভুল নয়। তবে এই মানসিকতা নাকি আজও শিল্পীদের সম্মানহানি করছে। ঋতাভরীর মতে, দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মতো যদি বাংলাতেও হেমা কমিটির আদলে কোনও সুরক্ষা কমিটি গঠনের চেষ্টা হয়, তবে সেটা যেন লোকদেখানো না হয়। তিনি নিজের উদ্যোগেই টলিউডে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষায় কাজ শুরু করেছেন।

তবে বাস্তবতার কড়া চেহারা তুলে ধরে জানিয়েছেন, শুধু কমিটি গঠন নয়, মানুষের মানসিকতাই মূল শত্রু। যতক্ষণ না সে বদলাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত লিঙ্গ বৈষম্য থেকে শুরু করে ‘শুয়ে কাজ পাওয়া’র তকমা ঘোচানো যাবে না। এই সাহসী স্বীকারোক্তির পরেই নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছেন ঋতাভরী। অনেকে তাঁর বক্তব্যে একমত হলেও, কেউ কেউ বলছেন, ইন্ডাস্ট্রির ‘অন্ধকার’ নিয়ে এতদিন চুপ থেকে এখন হঠাৎ এমন মন্তব্য শুধু আলোচনায় আসার চেষ্টামাত্র।

আরও পড়ুনঃ “কাজ না পেয়ে অভিনয় ছাড়লেন?” এবার ট্রোলারদের কড়া জবাব দিলেন ভালোবাসা ডট কম-খ্যাত মধুবনী গোস্বামী!

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি ঋতাভরীও কোনওদিন এই ব্যবস্থার শিকার ছিলেন? নাকি তিনিও কোনও সময় এই ব্যবস্থার অংশ ছিলেন? তবে ঋতাভরী জানিয়ে দিয়েছেন, এ লড়াই একদিনে শেষ হবে না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই লড়াইয়ে যুক্ত হলে তবেই ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েরা একদিন নিরাপদ হবেন। আর সেই জায়গায় পৌঁছানোর আগে প্রতিবাদ জারি থাকবে। আপাতত ঋতাভরী কেবল অভিনেত্রী নন, বরং হয়ে উঠেছেন প্রতিবাদী এক কণ্ঠস্বর।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।