টলিউডে বরাবরই সোজাসাপটা বক্তব্যের জন্য পরিচিত ‘দেবলীনা দত্ত’ (Debolina Dutta)। একসময় শাসক দলের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে মুখ খোলার জেরে তিনি একাধিক কাজ হারিয়েছেন বলেই নিজেই জানিয়েছিলেন। আবারও বিতর্কে নাম জড়াল অভিনেত্রীর। সম্প্রতি তাঁকে দেখা গিয়েছে আরএসএস (RSS) ঘনিষ্ঠ ‘সংস্কার ভারতী’-র একটি নববর্ষ অনুষ্ঠানের অতিথির আসনে। জাতীয় গ্রন্থাগারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেবলীনার উপস্থিতি ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে সমাজ মাধ্যম।
এই বিতর্কের কেন্দ্রে আছে এক পুরনো ঘটনা। ২০২১ সালে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মহাষ্টমীর দিনে গোমাংস খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এক অতিথি। সেই বক্তব্যে সহমত প্রকাশ করে দেবলীনা জানিয়েছিলেন, তিনি নিজে নিরামিষভোজী হলেও কেউ চাইলে মহাষ্টমীর দিন গোরুর মাংস রান্না করে খাওয়াতেও তাঁর আপত্তি নেই। এই মন্তব্য ঘিরে সে সময় রীতিমতো বিতর্কে জড়ান অভিনেত্রী। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা বহু সমর্থকের মনে।
ফলে আরএসএসের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের মঞ্চে দেবলীনার উপস্থিতি ভালভাবে নেননি সঙ্ঘ পরিবারের একাংশ সমর্থক। এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই মুখ খোলেন সংগঠনের এক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী নীলাঞ্জনা, যিনি জানান— দেবলীনার উপস্থিতি নিয়ে মূল আয়োজকরা অবগত ছিলেন না। জনসংযোগ বিভাগের তরফে ‘কৃতী শিল্পী’ হিসেবে দেবলীনা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। তবে এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্বকে আমন্ত্রণ কেন?
আমন্ত্রণ জানানোর পেছনে আদতে কার মতামত কার্যকর ছিল? বিতর্ক প্রসঙ্গে নিজে থেকে ফের মুখ খুলেছেন দেবলীনা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২০২১ সালের মন্তব্য থেকে আজও তিনি সরেননি। বরং এখনও বিশ্বাস করেন, অন্যের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করা অনুচিত। দেবলীনা বলেন, “আমি নিজে কি খাই, তাতে কারও কী আসে যায়? ঈশ্বর তো মৎস্যরূপেও এসেছিলেন, তাহলে প্রকৃত হিন্দুদের মাছ খাওয়া কি উচিৎ?”
আরও পড়ুনঃ “বাংলার থেকে হিন্দিতে কাজ করা অনেক বেশি সহজ!” ২২ বছর বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়েও, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রতি অকৃতজ্ঞ জিৎ? প্রশ্ন তুলছে নেট পাড়া
পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, গো- মাতার প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও সেবা করার বহু উদাহরণ রয়েছে তাঁর জীবনে, এমনকি সমাজ মাধ্যমে সেই প্রমাণও আছে। সব মিলিয়ে বলা চলে, যে মন্তব্যে হিন্দু ধর্মকে ছোট করেছিলেন দেবলীনা দত্ত, সেই তিনিই আজ দেখা গেলেন হিন্দুত্ববাদী মঞ্চে। আর এতেই ক্ষুব্ধ সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠদের একাংশ। আর আবারও আলোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন সাহসী এই অভিনেত্রী।