টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়’ (Sabitri Chatterjee), জাতীয় স্তরে যাঁর খ্যাতি। আন্তর্জাতিক স্তরে বললেও হয়তো ভুল হবে না। বয়স ছুঁয়েছে ৯০, আজও অবিবাহিত তিনি একাই জীবনটাকে নিজের মতো করে বাঁচেন। সুচিত্রা সেনের পর, উত্তম কুমারের সঙ্গে যদি কারোর জুটি সবচেয়ে প্রশংসিত হয়ে থাকে, সেটা নিঃসন্দেহে ‘সাবু’র (সাবিত্রী দেবী) সঙ্গেই! এক সময়ে স্বয়ং মহানায়ক তাঁর প্রিয় সাবুকে বলেছিলেন চোখের দিকে না তাকাতে। তিনি নাকি সংলাপ ভুলে যেতেন ওই চোখে তাকিয়ে!
তাহলে ভাবুন, সেই সময় দাঁড়িয়ে ঠিক কতটা সুন্দরী ছিলেন সাবিত্রী দেবী! বরাবরই তিনি সাজগোজ করতে খুব ভালোবাসেন। উজ্জ্বল রঙের পোশাকের সঙ্গে মানানসই গয়না এবং চোখে কাজল আর গাঢ় লিপস্টিক লাগাতে একদমই ভোলেন না তিনি। কানে সব সময় তাঁর লম্বা দুল, গলায় রকমারি গয়না নজর কাড়ে সবার। এখনও কেউ প্রথম দেখতে ধরতেই পারবেন না তিনি জীবনের শেষ পর্যায় পৌঁছেছেন, ঠিক এতটাই সুন্দরী।
যদিও বয়সের ছাপ স্পষ্ট তাঁর শরীরে, তাতে কী! কোনও রকম অসুস্থতার পরোয়া না করেই তিনি রোজ হাজির হন শুটিং ফ্লোরে। এমনকি ইন্ডাস্ট্রির যেকোনও বিশেষ অনুষ্ঠানেও তাঁকে বিভিন্ন রকম সাজে দেখা যায়। তার প্রাণবন্ত উপস্থিতি দর্শকের ভালো লাগলেও, ইদানিং সাবিত্রী দেবীর সাজসজ্জা নিয়ে সমাজ মাধ্যম থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও শুরু হয়েছে নানান সমালোচনা। একটাই প্রশ্ন সবার, এই বয়সেও এতটা সাজতে ইচ্ছা করে?
সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে দেখা গেছে, লাল শাড়ি ও সোনার গয়নায়। এছাড়াও ছোটপর্দার এক অনুষ্ঠানে কালো রঙের পোশাকে তাঁর উপস্থিতি কটাক্ষের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। কেউ বলেছেন, “রুচিসম্মত হলে ক্যামেরায় আর ধরা দিতেন না। তাই সুচিত্রা সেন, সুচিত্রা সেনই। লিপস্টিকটা গোঁফে লেগেছে। কানে দিপালী পাগলির মতো দুল। কি দরকার? ঘরে বসে জপ তপ করুন। কেন আবার সিরিয়াল করে কে জানে?নিজেরই সম্মানহানী করছেন।
পুরোনো অভিনয়টা স্মৃতিতে থেকে যেতো, এটাই ভালো হতো। পুরো মাথা গন্ডগোল লাগছে!” আবার অন্যজন বলেছেন, “সাবিত্রী ম্যাডামকে একটাই অনুরোধ, এই বয়সে যদিও ওনার ব্যক্তিগত ব্যাপার লিপস্টিক পরার কোন দরকার নেই। বার্ধক্য মেনে নিতেই হবে। ওনার অভিনয় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ওইটাই আসল।” একজন আবার অভিযোগ তুলেছেন, বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বিকৃত সাজে উপস্থিত করা হচ্ছে।
তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, “সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় এর মতো এই উচ্চতার একজন শিল্পীকে নিয়ে কেন প্রতিদিন ছেলেখেলা করা হচ্ছে? তার অসহায়তা, অসুস্থতা, অবুঝতার সুবিধা নিয়ে তাকে অদ্ভুত অদ্ভুত সাজিয়ে উপস্থিত করানো হচ্ছে। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছেনা। চোখে দেখতেও কষ্ট হচ্ছে। কোনোদিন লাল, কোনোদিন কালো, কোনোদিন নীল রঙের অদ্ভুত বেশভূষায় তাকে প্রায় ডাইনির মতো সাজিয়ে উপস্থিত করানো হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবার বদলে গেল টিআরপির সমীকরণ! রাজত্ব ধরে রাখল পরশুরাম, পিছিয়ে গেল রাণী ভবানী! এই সপ্তাহে সেরা পাঁচ থেকে ছিটকে গেল চিরসখা!
খুব খুব খারাপ লাগছে। যারা এইসব কাজগুলো করছেন তাদের মা, দিদা, ঠাকুমার সাথে এরকম হলে ভালো লাগবে তো?” অধিকাংশ মানুষই বলেছেন, “কদাকার লাগছে”, “পুরো ডাইনির মতো”, “মাথা খারাপের লক্ষ্মণ!” কিন্তু একটা কথা কি অস্বীকার করা যায়, উনি টলিউড কে যা দিয়েছেন বা উনার মত ব্যক্তিত্ব কি আর হবে? একজন বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর কি এই নোংরা মন্তব্যই প্রাপ্য?