মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে থাকেন মা। ছোট-বড় যেকোনও পরিস্থিতিতে মায়ের স্নেহ, সঙ্গ, আর আশ্রয়ই জীবনের আসল শক্তি। কিন্তু যাঁরা হঠাৎ সেই আশ্রয় হারান, তাঁদের শূন্যতা বোধের ব্যথা কথায় প্রকাশ করা যায় না। এমনই এক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। স্বাধীনতা দিবসের দিনেই চিরবিদায় নিলেন তাঁর মা।
দীর্ঘ দিন ধরে মারণ ব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন রূপার মা। মাঝেমধ্যেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হত। চিকিৎসার পরেও দিন দিন শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। শুক্রবার সেই লড়াই শেষ করে চিরবিদায় নেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, সেদিন রাতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। স্বাধীনতা দিবসের দিন মায়ের চলে যাওয়া রূপার জীবনে এক অন্যরকম শূন্যতা তৈরি করে দিল।
রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মায়ের উপস্থিতি ছিল দৃশ্যমান। একাধিক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন, ছোট থেকে একা হাতে তাঁকে মানুষ করেছেন মা। কারণ, রূপার বাবা তখন বাংলাদেশে থাকতেন। সংসার চালানোর পাশাপাশি মেয়েকে মানুষ করার ভার একাই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। রূপার নিজের কথায়, তাঁর মা হাতের কাজ জানতেন অসাধারণ। সংসার চালাতে সেই দক্ষতাই হয়ে উঠেছিল একমাত্র সম্বল।
অভিনেত্রীর মা বড়বাজার থেকে কাপড় কিনে এনে তৈরি করতেন সায়া, পর্দা, কুশন কভার, কিংবা বালিশের কভার। এগুলো বিক্রি করেই সংসার চলত। শুধু তাই নয়, পরিচিত-আত্মীয়দের ব্লাউজ, পোশাক, এমনকি কাপড়ের পুতুল পর্যন্ত বানিয়ে দিতেন তিনি। এই পুতুলই ছোটবেলায় রূপার সবচেয়ে প্রিয় খেলার সঙ্গী ছিল। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, পড়াশোনার ফাঁকে মায়ের কাজে হাত লাগাতেন তিনিও।
আরও পড়ুনঃ “আমার গায়ে হাত দিলে ওই হাত ভেঙে দেবো…সম্মান দাও, সম্মান পাবে!” “সম্পর্কে যতই ঝড় আসুক, গায়ে হাত তোলার তুমি কে?”— প্রাক্তন প্রেমিককে ইঙ্গিত করে ফের দেবচন্দ্রিমার তীব্র প্রতিক্রিয়া, নেটিজেনদের সমর্থনের বন্যা!
আজ মা নেই, কিন্তু তাঁর ছায়া, অবদান ও স্মৃতি রূপার জীবনে চিরকাল থেকে যাবে। হাতের কাজের মাধ্যমে সংসার চালানো, মেয়েকে মানুষ করার জন্য নিরলস পরিশ্রম—এই সবকিছুই হয়ে উঠেছে রূপার জীবনের প্রেরণা। স্বাধীনতা দিবসের দিন যে মা-শক্তিকে হারাতে হল তাঁকে, সেই শূন্যতা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তবে মায়ের হাতের তৈরি জিনিস, শিখিয়ে দেওয়া শিক্ষা আর স্নেহ আজও রূপাকে পথ দেখাচ্ছে।