নতুন মায়ের জীবনে একদিকে যেমন চলছে মাতৃত্বের নরম অনুভব, তেমনই শুরু হয়েছে জীবনের আর এক নতুন অধ্যায়ের প্রস্তুতি। অভিনেত্রী ‘রূপসা চট্টোপাধ্যায়’ (Rupsa Chatterjee) এবং স্বামী ‘সায়নদীপ সরকার’ (Shayandeep Sarkar) -এর পরিবারে খুশির হাওয়া। কারণ, তাঁদের সাড়ে পাঁচ মাসের ছেলে ‘অগ্নিদেব’ (Agnidev) এর অন্নপ্রাশনের দিন এগিয়ে এসেছে। আদরে তাঁকে ডাকা হয় ‘ডুগ্গু’ নামে। এই ছোট্ট সদস্যকে ঘিরে এখন রূপসা-সায়নের ঘরজুড়ে একরাশ আনন্দ আর ব্যস্ততা।
মা হিসেবে রূপসার চোখে ঝলমলে ভালোবাসা আর যত্ন, একরত্তি সন্তানকে কোলে পাওয়ার স্মৃতি এখনও তাঁর কণ্ঠে ঝরে পড়ে আবেগে। ডুগ্গুর জন্মের স্মৃতি ভাগ করে নিতে গিয়ে রূপসা বলেন, অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার আগে পর্যন্ত কোনও দিনই তাঁর এ ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু সেই মুহূর্তে ভয় নয়, বরং কৌতূহল ছিল তাঁর মন জুড়ে। চিকিৎসকের সঙ্গে গল্প করতে করতে অপারেশন শেষ হয়। আর যখন ছেলের মুখটা প্রথম দেখলেন, তখনকার সেই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে।
এই অনুভূতির সঙ্গে জীবনের কোনও কিছুই তুলনীয় হতে পারে না। ঠিক সেইদিনই ছিল ২৬ জানুয়ারি, তাই চিকিৎসকও মজা করে বলেছিলেন, “তোমার কোলে নেতাজি এসেছেন!” সেই জন্মদিনই এখন রূপসার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত। ‘পুত্রসন্তান’ হবে এই নিয়ে নাকি সায়নের ছিল সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস। যদিও রূপসা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সন্তান মেয়ে হলেও ভালোবাসা বা অনুভূতিতে কোনও রকম হেরফের হতো না। তবে ছেলে জন্মাবে এই ভেবে সায়ন নাকি আগেভাগেই পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন।
কীভাবে ছেলেকে বড় করবেন, কী পড়াবেন। একরত্তি ডুগ্গুর প্রতিটি দিন, প্রতিটি বদল এখন তাঁদের সংসারের গল্প। যদিও রূপসা টুকটাক কাজ শুরু করেছেন, তবে পাকাপাকিভাবে অভিনয়ে ফিরতে চান ছেলের ছয় মাস পূর্ণ হলে। কারণ, এখন তাঁর সময় কাটে মূলত ছেলেকে নিয়েই— খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, রাতজেগে দেখাশোনা সবটাই নিজেই সামলান। মজার কথা, রূপসার ছেলের জন্য কোনও ন্যানি নেই। একদম ছোটবেলা থেকেই তিনি চেষ্টা করছেন নিজের হাতে ছেলেকে বড় করতে।
কারণ, শিশুদের জন্য বাইরের সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে একটা অদৃশ্য ভয় সবসময় তাঁর মধ্যে কাজ করে। সেই কারণে একেবারে শুরু থেকেই ডুগ্গুকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছেন। রূপসা বিশ্বাস করেন, এই যত্নের মধ্যে যে ভালোলাগা লুকিয়ে থাকে, সেটার তুলনা হয় না। তাঁদের ইচ্ছা, ছেলে যেন বড় হয়ে সহজলভ্যতার মধ্যে নিজেকে না হারায়, বরং জীবনকে মূল্যকে ঘাম ঝরিয়ে অর্জনের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাক। রূপসা ও সায়নের অভিমত, আর পাঁচটা তারকাদের মতো নয়।
আরও পড়ুনঃ ফের ধাক্কা স্টার জলসায়! রাণী ভবানীর জন্য সরানো হল এই জনপ্রিয় মেগাকে! ক্ষিপ্ত দর্শকরা!
তাঁদের মত, সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রে আদর ও শাসনের সঠিক ভারসাম্য থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাঁরা চায় না, ডুগ্গু ভেবে নিক— জীবনের সবকিছু এমনিতেই হাতের মুঠোয় এসে যাবে। বরং শিখুক, জীবনের প্রত্যেকটি জিনিসের পেছনে লুকিয়ে থাকে কঠোর পরিশ্রম ও মূল্যবোধ। তাঁরা চান, তাঁদের সন্তান ভবিষ্যতে কী হবে সেটা সে নিজেই ঠিক করুক, কিন্তু সেই আত্মনির্ভরশীলতার বীজটা যেন তাঁদের কাছ থেকেই পায়। কারণ, শিকড় যতটা মজবুত হবে, ভবিষ্যৎ ততটাই সাফল্যময় হয়ে উঠবে।