“অভিনেত্রীরা রাজনীতিতে এসে গায়ে হওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়!” “রাজনীতি কোনও ফ্যাশন নয়, এটা মানুষের জন্য লড়াই করার জায়গা…বিলাসিতা এখানে টেকে না!”— রাজনীতিতে আসা অভিনেত্রীদের সরাসরি খোঁচা সাংসদ-অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের!

বড়পর্দায় আসছে এক অন্যরকম গল্প ‘লক্ষীকান্তপুর লোকাল’ (Laxmikantapur Local)। নাম যেন ভেসে ওঠে প্রতিদিনের সেই লোকাল ট্রেনের ঠাসাঠাসি ভিড়, হাসি, রাগ, ক্লান্তি আর অজস্র জীবনের গল্প। পরিচালক সেই দৈনন্দিন যাত্রার ভেতরেই খুঁজেছেন সমাজের এক নতুন প্রতিচ্ছবি। এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তাঁর সঙ্গে পর্দায় দেখা যাবে অভিনেত্রী ও সাংসদ ‘সায়নী ঘোষ’কে (Saayoni Ghosh), এক গৃহপরিচারিকার ভূমিকায়— যা তাঁর পরিচিত গ্ল্যামার ইমেজ থেকে একেবারেই ভিন্ন।

সায়নীর এই চরিত্র বেছে নেওয়াই যেন এক সাহসী পদক্ষেপ। একদিকে সংসদ সদস্য হিসেবে মানুষের জন্য কাজের ব্যস্ততা, অন্যদিকে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা—দুটি দিক বজায় রাখতে গিয়ে তাঁকে সব সিদ্ধান্তই নিতে হয় সামলে। তাই অনেকদিনই তাঁকে কোনও নতুন ছবিতে দেখা যায়নি। তবে অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন, রাজনীতিতে এসেও অভিনয় তার ভালোবাসা। তাঁর কথায়, তিনি যখন রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেন, তখন একের পর এক ছবিতে কাজ করছিলেন তিনি।

অভিনয়ে সফল কেরিয়ার সত্ত্বেও তিনি একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন রাজনীতিকে। প্রসঙ্গত, এই ছবির গল্পে যেমন দেখা যাবে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও মানসিকতার নারীদের লড়াই, তেমনই বাস্তব জীবনে সায়নীর বক্তব্যও ঘুরে ফিরে আসে সেই একই জায়গায়— আত্মসম্মান, পরিশ্রম আর মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা। অনেকেই মনে করেন, টলিউড কাজ না পেলে রাজনীতিতে জায়গা খোঁজেন অভিনেত্রীরা। কিন্তু সায়নীর মতে, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তিনি বলেন, যখন শাসকদলের সদস্য হয়েছিলেন, তখন অধিকাংশ সদস্যরাই দল ছাড়তে ব্যস্ত ছিলেন।

রাজনীতিতে বিলাসিতা আসে— এই ধারণা সম্পর্কেও তিনি সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁর মতে, রাজনীতি কোনও গয়না নয়, এটা মানুষকে বোঝার এবং তাদের জন্য কাজ করার দায়িত্ব। “এটা অনেকেরই ভুল ধারণা যে, অভিনেত্রীরা রাজনীতিতে এসে গায়ে হওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আজ আমি এখন সংসদ, মানুষের জন্যই রোজ কাজ করছি। তাই রাজনীতিতে বিলাসিতার কোনও জায়গা নেই, মানুষকে বুঝতে ব্যর্থ হলে, তোমায় আর চাইবে না কেউ,” স্পষ্ট জানিয়ে দেন সায়নী। অভিনয় আর রাজনীতি— দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ক্ষেত্র হলেও সায়নীর জীবনে দুটোই যেন একে অন্যকে সম্পূর্ণ করেছে।

আরও পড়ুনঃ বিয়ের পর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই বুঝেছিলেন স্বামী সৌম্য পরকীয়া আসক্ত! মেয়ের জন্মের ১১ দিন পর থেকেই খবর নেননি বাবা! অকপট স্বরলিপি

তাঁর দাবি, রাজনীতি তাঁকে আরও সংবেদনশীল করেছে, যা তাঁর অভিনয়ে নতুন মাত্রা যোগ করছে। আর অভিনয়ের অভিজ্ঞতা তাঁকে মানুষের জীবন, যন্ত্রণা ও আবেগ আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করছে। সায়নীর কথায়, তাঁকে সব সময় আগলে রেখেছেন, রাজনীতি শিখিয়েছেন দলের সর্বময়ী নেত্রী। তাই ‘লক্ষীকান্তপুর লোকাল’-এর পর্দায় তাঁর নতুন চরিত্রের পাশাপাশি, বাস্তব জীবনের সায়নীও নিজের নতুন গল্প লিখছেন— যেখানে বিলাসিতা নয়, আছে দায়িত্ব!