বাংলা টেলিভিশনের এক পরিচিত মুখ তিনি, বড়পর্দাতেও বেশ জনপ্রিয়তা। কথা হচ্ছে, অভিনেত্রী ‘সংঘশ্রী সিনহা মিত্র’কে (Sanghasri Sinha Mitra) নিয়ে। একসময় পড়াশোনার জন্যই কলকাতায় আসেন। সেখান থেকেই অভিনয়ের স্বপ্ন দেখা এবং পরবর্তীতে নানান প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আজকে তিনি দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। একটা সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের কাজ করেছেন বহু ছবিতে। সেই সময় চোখে পড়েন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর। অভিনেত্রী হিসেবে বড় পর্দায় তার আত্মপ্রকাশ ‘লে ছক্কা’ ছবিতে অভিনেতা দেব এবং পায়েলের বিপরীতে।
শেষবার ‘ফাটাফাটি’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একটা সময় ব্যক্তিগত জীবনের অস্থিরতার জন্য অভিনয় থেকে কিছুটা সরে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১১ বছরের অভিশপ্ত প্রেম নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তখন। দেখাশোনা করে বিয়ে হলেও বর্তমানে যথেষ্ট সুখী তিনি এবং স্বামীর অনুপ্রেরণায় পর্দায় দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন। বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন তিনি। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘মিত্তির বাড়ি’ ধারাবাহিকও দেখা গিয়েছিল। ছোট পর্দায় কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে এদিন একটি সাক্ষাৎকারে অকপটে কিছু বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন তিনি।
অভিনেত্রী এর আগেও বহুবার বলেছিলেন যে, পর্দার পিছনে যারা কাজ করে তারা সাধারণত অনেক বেশি সহজ হয়। কিন্তু যেই মুখদের পর্দার সামনে দেখা যায়, তারা অনেকাংশেই অত্যন্ত জটিল হয়ে। এই অভিজ্ঞতার সূত্র ধরেই এদিন তিনি বললেন, “আমি একটি ধারাবাহিকে অনেকদিন আগে অভিনয় করতাম, নাম ছিল ‘এক আকাশের নিচে’। সেখানে একজন অভিনেত্রী ছিলেন, অত্যন্ত সুন্দরী এবং প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিত্বদের, বিশেষত পুরুষদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল। সেই জন্য তাঁর প্রতিটা কথায় গুরুত্ব ছিল আলাদাই। খুব ভালো ‘মেকআপ-রুম পলিটিক্স’ জানে।
আমাদের থেকে বয়সে বড়, কিন্তু বিকৃত মস্তিষ্ক। আমার সঙ্গে যা করেছে সেটার জন্য আমি ক্ষমা করলেও, পরবর্তীতে যে কতজনের সঙ্গে অপমানজনক ব্যবহার করেছে তার কোনও ঠিক নেই। আমি একটা চ্যানেলে চার থেকে পাঁচ বছর কোনও কাজ করিনি, শুধুমাত্র তাঁর জন্য! তিনি নিজের রূপ নিয়ে অত্যন্ত অহংকারী। যেভাবে চোখ এবং ঠোঁটের মেকআপ করে, সত্যি বলতে ঠোঁট আঁকে সেটা নিয়ে কিছুই বলার নেই। কিন্তু বাস্তবে তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসহীন একজন। তাঁর সামনে সেটে যদি তাঁর পছন্দের পুরুষ কোনও অভিনেত্রীর প্রশংসা করে, সেই দিন থেকেই ওই অভিনেত্রী তাঁর শত্রু তালিকায় পরে যায়।
আমি সেই ধারাবাহিকে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি চরিত্র ছিলাম। সে আমায় ওই ধারাবাহিক থেকে বের করে দিয়েছিল, ক্ষমতার জোরে। বাকিদের আমার বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়ে, আমাকে মেকআপ রুমে বসতে দিত না। আমি জুনিয়ার আর্টিস্টদের ঘরে বিশ্রাম করেছি। এমনকি বাথরুম ব্যবহার করতে দিত না। আমার মতে ‘শি ইজ আ ক্রোকোডাইল ইন আ শিফন শাড়ি’, যে কিনা ‘সেট দিদি’ বা ‘সেট বৌদি’। এরা ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর, প্রডিউসারদের সাথে প্রেম করে বলে, সারাদিন খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ রাখে, এদের কথাই চলে।”
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকা জিৎ হঠাৎ রাজনৈতিক আঙিনায়! দ্বন্দ্ব উড়িয়ে দেব, কুনাল আর জিৎ একই মঞ্চে– রাজনীতির রঙে টলিউডে নতুন গুঞ্জন! সুপারস্টার জিৎ-এর ভলবদল, নেপথ্যে কি ভোটে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত?
অভিনেত্রী আরও যোগ করলেন, “মেকআপ রুম পলিটিক্স, কত ভালো শিল্পীদের জীবন শেষ করে দিয়েছে। সামান্য একটা ঘর নিয়ে কিছুজন এমন করে যেন, ব্যক্তিগত সম্পত্তি। দীর্ঘদিন এদের সঙ্গে অভিনয় করলে, আসল চরিত্রটা একসময় বেরিয়ে আসে। মেয়েরাই মেয়েদের নিচে টানে, কিন্তু ওই একজনকে ছাড়া আমি যাদের সঙ্গে মিশেছি, সবাই অত্যন্ত ভালো। যেমন– সুদেষ্ণা রায়, দেবলীনা দত্ত, কমলিকা ব্যানার্জি, আরও অনেকে। এদের কোনও তুলনা হয় না। আপনাদের মতে, সংঘশ্রী নিজের বক্তব্যে কোন অভিনেত্রী দিকে ইঙ্গিত করলেন?






