সত্যজিতের চারুলতা আজও উপেক্ষিত! বাংলা চলচিত্রের স্বর্ণযুগের কান্ডারী হয়েও মিলল না পদ্মভূষণ! আজ‌ও না পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের?

বাংলা চলচিত্রের ইতিহাসে এমন কিছু নাম জড়িয়ে আছে যাদের অবদান চিরকাল অমলিন হয়ে থেকে যাবে। তেমনই বাংলার স্বর্ণযুগের এক নাম ‘মাধবী মুখোপাধ্যায়’ (Madhabi Mukherjee)। শিশুশিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন ষাটের দশকে, তারপরের অধ্যায়টা যেন ছিল শুধুই ছোঁয়া লাগানো কিংবদন্তিতে। ছোটবেলার থিয়েটারের মঞ্চ থেকে শুরু করে বাংলা সিনেমার সেরা পরিচালকদের সঙ্গে কাজ—প্রতিটি ধাপে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন অনন্যা অভিনেত্রী হিসেবে।

‘চারুলতা’, ‘মহানগর’, ‘বাইশে শ্রাবণ’—এই সব চলচ্চিত্র শুধুমাত্র গল্প নয়, অনন্য শিল্পকর্মও বটে। সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের মতো পরিচালকদের প্রিয় মুখ হয়ে ওঠা তো আর সহজ কথা না! নিজের প্রতিভার জোরেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন সবার চোখে এক আদর্শ অভিনেত্রীর সংজ্ঞা।
তবে দীর্ঘ কর্মজীবনে একের পর এক সাফল্য পেলেও, সরকারিভাবে কোনও পদ্ম সম্মানে ভূষিত হননি মাধবী মুখোপাধ্যায়। একাধিক জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হলেও, পদ্মভূষণ আজও অধরা।

এই নিয়ে কোনও আক্ষেপ রয়েছে কি? সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী। তাঁর উত্তর ছিল সরল এবং সংযত—“পুরস্কার তো একটা বস্তু, ঘরের কোণায় পড়ে থাকে। কাজই আমার সব।” তাঁর এই মন্তব্যে উঠে এসেছে প্রকৃত শিল্পীর মানসিকতা। পুরস্কার না পেলেও, দর্শকের ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাই তাঁর আসল প্রাপ্তি, তাঁর কথাকে এটা স্পষ্ট।বাংলা সিনেমার একেকটি যুগ মাধবীর উপস্থিতিতেই হয়ে উঠেছে সোনালী অধ্যায়।

আরও পড়ুনঃ শুধু কি দাদা? এবার ‘দাদা’র ডবল ইনিংসে দাদার সঙ্গে মঞ্চ মাতাবেন টেলিভিশন এর দুই ভীষণ জনপ্রিয় নায়িকা! জানেন কারা তারা? জানলে চমকাবেন !

তাঁর মতে, অভিনয় শুধু তাঁর পেশা নয়, ছিল এক রকমের সাধনা। পুরস্কার না পাওয়ার দুঃখ তাঁর চোখে নেই, কারণ তিনি জানেন, প্রত্যেক চরিত্রে তিনি যা দিয়েছেন দর্শকদের, তা কোনো পদক দিয়ে মাপা যায় না! আজকের প্রজন্ম যেখানে স্বীকৃতি খোঁজে পদে বা পদকে, সেখানে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মতো এক শিল্পী প্রমাণ করে দিলেন—নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থে কাজ করেই জায়গা করে নেওয়া যায় ইতিহাসের পাতায়।

You cannot copy content of this page