“বিয়েটা সত্যি গোপন করেই দেওয়া হয়েছিল, ওর সঙ্গে সংসার করা যায় না…একজন বাবা হয়ে ছেলেকেই বাঁচিয়েছি!” “আমি মরে গেলেও মনোবীণার যত্ন বা টাকার অভাব হবে না!”— শ্যামল মিত্রের মেয়ে মনোবীণাকে ঘিরে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঞ্চল্যকর মন্তব্যে সরগরম বিনোদন জগৎ!

“বিয়ের আগে বলাই হয়নি, স্ত্রীর পরিবারে মানসিক রোগের ইতিহাস আছে! আমি মরে গেলেও মনোবীণার চিকিৎসার অভাব হবে না”— কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়!

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী শ্যামল মিত্রের (Shyamal Mitra) মেয়ে মনোবীণার (Monobina) জীবনের করুণ বাস্তবতা, আবার উঠে এসেছে আলোচনায়। এক সময়ে বাইপাসের ধারে অসহায়, বি’বস্ত্র অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে আনা হয় ভবঘুরেদের আশ্রমে। অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kaushik Banerjee) প্রথম স্ত্রী তিনি, তাঁদের ছেলে সুস্নাত বড় হলেও মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না। আজ মনোবীণার ঠিকানা শুধু সেই আশ্রম, আর জীবনে রয়ে গেছে নিঃসঙ্গতা ও বিস্মৃত অতীত। এই নিয়ে বহুবার কটাক্ষের শিকার হয়েও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ থেকেছেন। অবশেষে এদিন তিনি মুখ খুললেন!

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, “আমার প্রথম বিয়েটা অনেক কিছু গোপন করেই দেওয়া হয়েছিল। আমাকে বলাই হয়নি যে, আমার স্ত্রীর পরিবারে বংশগতভাবেই মানসিক রোগের ধারা আছে। বিয়ের পর আমি জানতে পারি, স্ত্রীর দাদা সিজোফ্রেনিয়া রুগী এবং তার বছর তিনেক পর আমার স্ত্রীও একই রকম আচার আচরণ শুরু করে। প্রথমে আমি চেষ্টা করেছিলাম সবটা মানিয়ে নেওয়ার, ততদিনে আমাদের ছেলেরও জন্ম হয়ে গেছিল। আমি চাইনি ও মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হোক, তাই দশ বছর পর্যন্ত সম্পর্কটা চালিয়ে গেছি।

অভিনয়ের সূত্রে আমায় বাইরে বাইরে থাকতে হতো, একদিন ফিরেই জানতে পারি যে ছেলের উপরেও শারীরিক আঘাত করতে শুরু করেছে স্ত্রী। আমার কাছে তখন দুটো রাস্তা ছিল, হয় ছেলেকে বাঁচাতে সম্পর্কটা শেষ করা, না হয় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই সবটা চালিয়ে যাওয়া। আমি একজন বাবা হয়ে ছেলেকে ফেলে দিতে পারিনি, ফলে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে বাপের বাড়ি রেখে আসি। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিমাসের এক তারিখ উকিলের ঠিক করে দেওয়া টাকা পৌঁছে যায় ওর খোরপোশ হিসেবে। তারপর লাবনীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়।

একদিন খবর পাই, বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে মনোবীণা। আমি আগেই বলেছিলাম ওদের, এমন রুগীকে বাড়িতে রাখা ঠিক নয়। তারপর খুঁজে পাতেই আমি সৈকতকে বলি, এতদিন তো টাকা ওর জন্য দিচ্ছি, এবার থেকে আমিই ওর দায়িত্ব নেব। এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে তার হোমে রাখি ওকে, প্রতি মাসের খরচ খোরপোশের তিনগুণ বেশি। আমিও তাও ঠিক করি যে আমৃত্যু ওর দায়িত্ব নেব, ও যেন ভালো থাকে। এতদিন এসব কথা কাউকে বলিনি। ২৫ বছর লোকে একপাক্ষিক গল্পটা জেনে আমাকে দোষী ভেবেছে। এবার সবাইকে সবটা জানানো প্রয়োজন।

যাঁরা সহানুভূতি দেখাচ্ছেন তাদের বলবো, আমি মরে গেলেও মনোবীণার যত্ন বা টাকার অভাব হবে না কোনদিনও। যারা বিয়ে করতে চলেছে তাদের মা-বাবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ, দয়া করে বিয়ে দেওয়ার আগে দুই পক্ষের মেডিকেল হিস্ট্রিটা একটু দেখে নেবেন। যাতে ভবিষ্যতে আমার মতো পরিণতি না হয়!” তবে তাঁর এই স্বীকারোক্তি সহানুভূতির থেকে বেশি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সমাজ মাধ্যমে অনেকেই বলেছেন, “আপনি যদি ওই রকম হতেন আপনার স্ত্রী কিন্তু যেমন করেই হোক সাথে থাকত।

আরও পড়ুনঃ ব্যক্তিত্বহীন, মেরুদণ্ডহীন দর্শকদের অপছন্দের তালিকায় থাকলেও মায়ের প্রতি বুবলাইয়ের ভালোবাসাই প্রকৃত বলছেন দর্শকরা! বর্ষার বিপক্ষে যেতেই বুবলাইয়ের প্রশংসা নেটপাড়ার

মানসিক রোগী না হয়েও যদি ক্যা’ন্সারের রুগী হতেন, তাহলেও কি ওইভাবে ছেড়ে দিতেন শুধুমাত্র আর্থিক দায়িত্ব নিয়ে? মানসিক রোগ নিয়ে ছুতমার্গ কবে যাবে? তাছাড়া সব সময়যে কোনও রোগ, হেরিডিটি থেকে আসবে কে বলেছে? ঠিকুজি কুষ্টি যাচাই করে লাভ হবে কি? ভগবান না করুন আপনার ছেলেরও যদি ওই রোগ হয় তাকেও কি এটাই করবেন?” একাংশ আবার বলছে, “আসল কথাটাই তো বললেন না! বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক থাকলে তো স্ত্রীর মাথা ঠিক থাকার কথা না! আমরা ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না, আপনার চরিত্র সবার জানা।” এই বিষয়ে আপনাদের কী মতামত?