বিয়ে মানেই যেন এক নতুন অধ্যায়, নতুন পথচলা। সেই পথচলায় যেমন খুশির রং মিশে থাকে, তেমনি মাঝেমধ্যে উঠে আসে কিছু না বলা অনুভূতি। অভিনেত্রী ‘সোহিনী সরকার’ (Sohini Sarkar) সমাজ মাধ্যমে নিজের জন্মদিনে এক পোস্টে তেমনই কিছু কথা ভাগ করেছেন। বয়স, অভিজ্ঞতা আর বিশ্বাস নিয়েই নিজের আবেগকে প্রকাশ করেছেন তিনি। এই লেখায় খুব একটা বিয়ের প্রসঙ্গ না থাকলেও, মনোভাবটা ছিল গভীর। সেটাই তৈরি করে নানা প্রশ্ন, আসলে কি তিনি সংসারে ততটা সুখী নন? না কি শুধুই নিজের মনের কথা ভাগ করে নিয়েছেন সবার সঙ্গে?
প্রসঙ্গত, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে, একেবারে হঠাৎ করেই সঙ্গীত শিল্পী শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে। অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন, কারণ তার আগ পর্যন্ত সম্পর্ক নিয়ে সেভাবে প্রকাশ্যে কিছুই বলেননি দু’জনে। যদিও ইন্ডাস্ট্রিতে কানাঘুষো চলছিল অনেকদিন ধরেই। প্রেম নিয়ে রাখঢাক থাকলেও, বিয়ের পর থেকে তাঁদের ছবির ক্যাপশনে, কথাবার্তায় একটা খোলামেলা আন্তরিকতা দেখা গেছে বারবার। নিজেদের সম্পর্ককে আড়াল না করে বরং জীবনযাপন এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা নিয়েই মুখ খুলেছেন তাঁরা।
অভিনেত্রীর জীবনে এর আগে ছিল আরও একটি সম্পর্ক, যার ভাঙনের গল্পও বহু চর্চিত। আর শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ও অতীত সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন ঠিক একই সময়ে। সেই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁদের সম্পর্ক। কিন্তু এসবের বাইরেও একটা বিষয় চোখে পড়ে যে, কিছু সম্পর্ক হয়তো নিজের সময়েই জায়গা করে নেয় জীবনে, কাউকে না জানিয়ে। সোহিনী শোভনের সম্পর্ক এতটাই গভীরতা লাভ করে যে, দেখা হওয়ার এক বছরের মধ্যেই তাঁরা আইনি বিয়ে করে ফেলেন।
সম্প্রতি সোহিনীর জন্মদিন পড়ে যায় দুর্গাপুজোর মধ্যেই, ফলে সেভাবে কোনও বড়সড় উদযাপন হয়নি। শুভেচ্ছা জানানো বহু মানুষকে তিনি তখন আলাদা করে কিছু বলেননি। পরে বিজয়ার সময়, এক পোস্টের মাধ্যমে তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের প্রার্থনার কথাও লেখেন। আর এখান থেকেই শুরু হয় আলোচনার। মানুষের মন বোঝা যেমন কঠিন, তেমনই সমাজ মাধ্যমের ভাষাও অনেকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেন। তবে এটাও ঠিক যে, মনের কথা প্রকাশ করলেই যে দাম্পত্যে সমস্যা, এমন ভাবা উচিত নয়।
অভিনেত্রী সেই পোস্টের কিছু লেখা স্বাভাবিকভাবেই ভক্তদের মনে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল অভিনেত্রী কি সংসার জীবনে সুখী নন? আসলে অভিনেত্রী লেখেন, “ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা যেন বয়সের সঙ্গে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে, ভালো-মন্দ সবকিছু সহজে মানার ধৈর্য বাড়ে অন্তরে, বিশ্বাস যেন কখনওই হারিয়ে না ফেলি।” অন্যদিকে, সেই দিনেই স্বামীও নিজের ভালোবাসায় ভরা একটি পোস্ট করেন। সেখানেও ছিল অনেক গভীর অনুভব, ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া।
আরও পড়ুনঃ উত্তরবঙ্গে মৃ’ত্যুমিছিল তবু কলকাতায় উৎসবের নাচে মেতে টলিউড! “আপনারা সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন না আমরাও বাংলা সিনেমার পাশে থাকবো না” “এরা সরীসৃপ প্রজাতির প্রাণী!”, “অমানবিক, লোভী, অমেরুদণ্ডী শিল্পী সব!” নেটপাড়ায় উঠল টলিউড বয়কটের ডাক
স্ত্রীকে ‘রাজকন্যা’ বলে সম্বোধন করে শোভন জানান, জীবনে কিছু ভালো কাজের জন্যই এমন একজন মানুষকে পাশে পেয়েছেন। তাই তাঁর জীবনসঙ্গীকে তিনি কোনওভাবেই হারাতে চান না। সব মিলিয়ে, যতোই আলোচনা থাক, তাঁদের সম্পর্কের ভিত যে মজবুত, সেটা বুঝিয়ে দেন দু’জনেই নিজেদের মতো করে। সংসার মানে সবসময়ই তো নিখুঁত সুখের ছবি নয়, বরং একসঙ্গে সমস্ত খারাপ দিককেও মেনে নেওয়ার ক্ষমতাই তার প্রকৃত সৌন্দর্য।