টলিউডের ব্যস্ততম অভিনেত্রীদের তালিকা করলে ‘শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়’-এর (Subhashree Ganguly) নাম হয়তো একেবারেই শুরুতে থাকবে। বড় পর্দা, ওয়েব সিরিজ, রিয়েলিটি শো– সব দিক সামলাতে সামলাতেও দুই সন্তানের মা হিসেবে তার দায়িত্ববোধ নেটিজেনদের নজর কাড়ে বারবার। বয়স এখনও মাত্র পঁয়ত্রিশ, কিন্তু সেই বয়সেই কাজের চাপ সামলে সংসারকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলা নিয়ে তাকে প্রায়ই প্রশংসা করেন অনুরাগীরা। শহরের বাইরে বিজ্ঞাপন হোক বা শহরে একের পর এক শুটিং, সব জায়গায় সাবলীলভাবে নিজেকে সামলে নেন তিনি।
শুভশ্রীর মা হওয়ার যাত্রাটাও কিন্তু কম আলোচিত নয়। করোনার সময় প্রথমবার মাতৃত্বের স্বাদ পান তিনি, সেই সময় লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি থাকতে হলেও সব নিয়ম মেনে ইউভানকে পৃথিবীতে এনেছিলেন। এরপর ইয়ালিনিকে গর্ভে ধারণ করার সময় পুরোপুরি উল্টো ছবি!নিয়মিত শুটিং, জিম আর প্রচুর কাজ– সবই চলেছে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে। বিয়ের আগেই তিনি বলেছিলেন, ভালো মা হওয়াটা তার কাছে বড় স্বপ্ন! তাই আজ তার সামাজিক মাধ্যমের বায়োতেও “প্রাউড মাম্মা” লেখা থাকাটা যেন একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়।
তবে শুধু যত্নশীল মা হিসেবেই নয়, সন্তানদের প্রতি আচরণ নিয়েও সম্প্রতি আলোচনায় আসেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে শুভশ্রী বলেছিলেন, রাগের মাথায় কোনোদিনই ছেলের-মেয়ের গায়ে হাত তোলেননি তিনি। তার কথায়, সন্তান হলেও তারা আলাদা মানুষ। তাই কারণে অকারণে শারীরিক শাস্তি তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। নিজের সিদ্ধান্তকে এভাবে খোলাখুলি জানানোয় বহু অভিভাবক তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, অনেকেই আবার উল্টো কথাও বলেছিলেন। তবে, অভিনেত্রীর এই ভাবনা অনেকের কাছেই অনুকরণীয়।
কিন্তু আরও একটি সাক্ষাৎকারই আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে তাঁকে নিয়ে সমাজ মাধ্যমে! সেখানে শুভশ্রী বলেন, তার দুই সন্তান নাকি সাধারণ সময়ের আগেই বেশ কিছু বিকাশগত মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছে। যেমন– চার মাসে বসা, ছয় মাসে দাঁড়ানো, নয় মাসে হাঁটা, এমনকি পাঁচ-ছয় মাসের মাথায় ‘মা’-‘বাবা’ বলা শুরু! শুভশ্রীর নিজের ভাষায়, “চার মাস বয়সে ও বসতে শিখে গিয়েছিল, যেগুলো অন্যদের ক্ষেত্রে ছয়-সাত মাসে হয়ে থাকে। আমার সন্তানের ক্ষেত্রে সেগুলো দু-এক মাস আগে আগেই হয়েছে। ছয় মাসে আবার দাঁড়াতে শিখে গিয়েছিল, নয় মাসে প্রথম হাঁটতে শুরু করে।
কথা বলাটাও তাড়াতাড়ি ওর। পাঁচ, ছয় মাস থেকেই মা-বাবা বলত।” অভিনেত্রীর এই মন্তব্য নিয়েই চলছে বিভক্ত মত। কেউ বলছেন, আজকাল বাচ্চারা দ্রুত শিখে ফেলে অনেক কিছু, তাই বিষয়টা অসম্ভব নয়। অন্যদিকে, অধিকাংশ মানুষের মতো, এই ধরনের দাবি করার আগে একটু সংযম থাকা উচিত। কারণ, সব শিশুর শেখার গতি আলাদা। তাই নিজের সন্তানকে ‘অ্যাডভান্স’ বলে ঘোষণা করলে সেটা অন্য অভিভাবকদের ওপর অযথা চাপ তৈরি করতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, তার কথাগুলো হয়তো বাড়াবাড়ি শোনাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ এতকিছুর পরেও লক্ষ্মীমণি দেবীর দ্বিচারিতা দেখে হতবাক কমলিনী! ছেলের অপরাধ মাফ, নিরপরাধ বৌমার সুখকে ছোট করার চেষ্টায় নাতি-নাতনিদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি! মিঠি-বাবিলের তীক্ষ্ণ প্রতিবাদে জব্দ হলেন ঠাকুমা!
অভিনেত্রীকে সমর্থন করে অনেকে বলছেন বর্তমানে বাচ্চারা যুগ অনুযায়ী অনেক বেশি এগিয়ে, সেই কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যে বলা যায় না অভিনেত্রীর কথাকে। আবার অন্যরা বলছেন, সত্যিই এত অ্যাডভান্স হয় কি সাধারণত বাচ্চারা? নাকি অভিনেতা-অভিনেত্রী সন্তান বলেই এত তাড়াতাড়ি! একজন বলেছেন, ‘মিথ্যে বলা ভালো কিন্তু সেটার উপর একটু পড়াশোনা করে নিতে হয়।’ অন্যজনের মতে, ‘নিজের কৃতিত্ব জহির করতে এতটাও না বলাই ভালো।’ সব মিলিয়ে, মা হিসেবে শুভশ্রীকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই সমাজ মাধ্যমে।






