“দিল্লিতে ধর্ষ’কও তো অনেক, তাদেরও নির্বীজ করা হবে?”— সুপ্রিম নির্দেশের পর পথকুকুরদের পক্ষ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তথাগত-শ্রীলেখা!

পথকুকুরদের হয়ে ফের সরব টলিউড। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে ক্ষুব্ধ শিল্পীরা। আদালতের রায় অনুযায়ী, শহরের স্কুল, রেলস্টেশন ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে ফেলতে হবে। এমনকি নির্বীজকরণের পর আর তাদের আগের এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া চলবে না, আশ্রয় হবে সরকারি শেল্টারেই। এই রায়ের পরই সামাজিক মাধ্যমে থেকে সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পরিচালক-অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।

তথাগত কটাক্ষ করে বলেন, “দিল্লিতে ধর্ষকের সংখ্যাও তো বেশি। তা হলে কি তাদেরও ধরে এনে নির্বীজ করা হবে?” তাঁর প্রশ্ন, এই রায় কি আদৌ বাস্তবসম্মত? দেশে হাতে গোনা কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র আছে, যেখানে অসুস্থ বা আহত পথকুকুরদেরই ঠিকমতো জায়গা হয় না। তাহলে সুস্থ কুকুরদের রাখবে কোথায়? শ্রীলেখারও একই আক্ষেপ— “আমার বিল্ডিংয়ের মানুষ যেমন আমাকে নিয়ে লাগাতার খোঁচা দেয়, তেমনই এখন সুপ্রিম কোর্ট পথকুকুরদের পিছনে লেগেছে!”

শিল্পীদের মতে, এই সিদ্ধান্ত হিংসা কমাবে না, বরং উসকে দেবে। মানুষ আইনকে অস্ত্র বানিয়ে পথকুকুরদের সমাজছাড়া করবে, তাড়াবে এলাকা থেকে। শ্রীলেখা আরও বলেন, “রাস্তার কুকুর যদি রাস্তায় থাকতে না পারে, তাহলে কোথায় থাকবে? ওদেরও তো বাঁচার অধিকার আছে।” তথাগত আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “জায়গা দেওয়ার নাম করে যদি ওদের সরিয়ে নিয়ে মেরে ফেলা হয়? বিদেশে তো কুকুরের মাংসের চাহিদা প্রচুর!”

তথাগত ও শ্রীলেখা দু’জনেরই মত— এ সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আদালতের ‘অহং’ থেকে এসেছে। আগেও পুনর্বাসনের নামে অর্ধেক কুকুরকে মেরে ফেলা হয়েছিল, এবারও সেই ভয় ফিরছে। তাঁদের কথায়, “আজ পথকুকুরদের তাড়ানো হচ্ছে, কাল হয়তো পথবাসীদের ওপরই নামবে কোপ।”

আরও পড়ুনঃ স্বস্তিকার নতুন ধারাবাহিকের কারণে সরছে রাজনন্দিনীর ‘রাণী ভবানী’? মাত্র পাঁচ মাসেই যাত্রা বন্ধ হচ্ছে সফল ধারাবাহিকের?

টলিউডের আরও অনেক মুখ— দেবলীনা দত্ত, ঋষভ বসু, তনিকা বসু— এক সুরে বলছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে দরকার হলে তাঁরা আবারও পথে নামবেন। তাদের দাবি, মানুষ যেমন নিজের জন্মস্থানের উপর অধিকার রাখে, তেমনই অধিকার পথপশুদেরও আছে। কারণ, ঠাঁইনাড়া হলে মানুষও বাঁচে না, পশুও না।