“আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও রে’প হয়না, সবটাই সম্মতি নিয়ে মিউচ্যুয়ালি হয়। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েরা পণ্য নয়!”— টলিউডের অন্দরমহলে যৌ’ন লা’লসা নিয়ে বিতর্কে বি’স্ফো’রক মন্তব্য জিতুর!

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘গৃহপ্রবেশ’ (Grihapravesh) -এর ট্রেলার। ‘শুভশ্রী গাঙ্গুলী’র (Subhashree Ganguly) অনবদ্য অভিনয়ে ফুটে উঠেছে এক নববধূর নীরব হাহাকার আর দায়িত্বের কাঁধে চাপা পড়ে যাওয়া আবেগ। সম্পর্কের জটিল সমীকরণ, ভাঙন আর নতুনের যাত্রাপথে গড়ে উঠেছে ছবির আবহ। অভিনেত্রী শুভশ্রীর পাশাপাশি ছবিতে রয়েছেন অভিনেতা ‘জিতু কামাল’ (Jeetu Kamal), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সোহিনী সেনগুপ্ত ও রুদ্রনীল ঘোষের মতো অভিজ্ঞ শিল্পীরা। ১৩ জুন প্রেক্ষাগৃহে আসতে চলা এই ছবি নিয়ে ইতিমধ্যেই দর্শকদের কৌতূহল তুঙ্গে।

এই ছবির প্রোমোশন চলাকালীন এক সাক্ষাৎকারে ধরা দিলেন অভিনেতা জিতু কামাল। ব্যক্তিগত পছন্দ, কেরিয়ার এবং ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহল নিয়ে তিনি মুখ খুললেন অকপটে। বড়পর্দায় একের পর এক চরিত্রে সাফল্য পেলেও কেন তিনি ধারাবাহিকে ফিরে এলেন? এই প্রশ্নে জবাবে জানালেন, তিনি সবসময় স্রোতের বিপরীতে হাঁটতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। তাঁর মতে, কেবল জনপ্রিয়তা নয়, তিনি এমন কাজ করতে চান যেটা নিয়ে গর্ব করা যায়, নিন্দা নয়।

জিতু বলেন, এমন বহু সিনেমা তিনি নিজে থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন কারণ চরিত্রটা তাঁর হৃদয়ে পৌঁছায়নি। আবার বহু টিভি ধারাবাহিক থেকেও নিজে থেকেই সরে এসেছেন ঠিক যখন সেটি শীর্ষে। তাঁর কথায়, “শিল্পী হিসেবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেব না, যাতে দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগে— এটা কেন করল জিতু?” বরং চিরকাল মনে রাখার মতো কাজেই বিশ্বাস করেন তিনি। এই আত্মবিশ্বাস আর স্পষ্টভাষী মনোভাব তাঁকে আলাদা করে তুলেছে বাকিদের থেকে।

তবে সবচেয়ে বিতর্কিত বক্তব্যটি আসে, যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বিনোদন জগতের যৌন লালসা ও ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ সংক্রান্ত ইত্যাদির অভিযোগ ওঠে অভিনেতা অভিনেত্রী উভয়ের দিক থেকেই, এই নিয়ে তাঁর কি মত? এই বিষয়ে জিতু বলেন, “আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও রেপ হয়না, সবটাই সম্মতি নিয়ে মিউচ্যুয়ালি হয়। প্রথমে সম্মতি দিয়ে, পড়ে অভিযোগ করার তো কোনও মানে হয় না! আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে জোর করে কিছুই হয় না। সবটাই দু’পক্ষের সম্মতিতে ঘটে বলে আমি জানি।”

তিনি আরও বলেন, যদি একসময় সেটিতে নিজে রাজি হয়ে থাকেন, তবে এই সব নিয়ে কিছু বলার অবকাশ থাকে না। এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে সাহসী এবং অনেকের কাছে সমালোচনার কারণও হতে পারে, কিন্তু তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে এটা বাস্তব। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,”যারা মনে করেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়েরা পণ্য, ওদের নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করা যায়। তাদের বলবো খুব ভুল করছেন, আমাদের এখানে প্রত্যেকজন অনেক সংগ্রাম করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই এইসব বলে ইন্ডাস্ট্রিকে বা শিল্পীকে ছোট করবেন না।”

আরও পড়ুনঃ জীবনের অন্যতম কঠিন লড়াই শুরু কমলিনীর! বৌঠানের পাশে রইল না ঠাকুরপো! তবে, কী এতদিনের গুপ্ত ভালবাসাকে অস্বীকার করবে স্বতন্ত্র? কোন পক্ষ বেছে নেবে নতুন?

নিজের সমাজ মাধ্যম নিয়েও জিতু বলেন, সমাজ মাধ্যমে যে মুখ বা বক্তব্য তিনি তুলে ধরেন, তা সবসময় তাঁর বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি নয়। শাহরুখ খানের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা, সেই সঙ্গে মেয়েদের প্রতি সম্মানের দৃষ্টিভঙ্গিই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে বলে জানান তিনি। সাক্ষাৎকারে অভিনেতার এই স্পষ্ট ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গি যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনই নতুন করে বিতর্কের দরজাও খুলে দিয়েছে। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, জিতু কামাল নিজের চিন্তাভাবনা গোপন রাখেন না, বরং শিল্পীসুলভ দায়িত্ব নিয়ে তা প্রকাশ করেন নির্ভয়ে।