“আমার কাছে, আমার স্বামী ছাড়া বাদবাকি সবাই অস্তিত্বহীন!” নিজের জীবন থেকে মা, পরিবারের অস্তিত্ব মুছলেন অহনা?

পৃথিবীতে মা হওয়ার মুহূর্তটা প্রতিটা মেয়েদের কাছে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাতৃত্বের অনুভূতি মেয়েদের জীবনে যেন এক আলাদা পূর্ণতা প্রদান করে। স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে প্রায় প্রতিটা মেয়েই মা হতে চায়, সে পেশাগত জীবনে যতই ব্যস্ত থাকুক না কেন।

বর্তমানে, ইতিমধ্যে অনেকেই জানেন টলি অভিনেত্রী অহনা দত্ত অন্তঃসত্ত্বা। প্রথম সিরিয়াল ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র হাত ধরেই পরিচিতির আলোয় আসেন এই অভিনেত্রী। তবে, অহনার পেশাগত জীবন ঝাঁ চকচকে হলেও ব্যক্তিগত জীবন তাঁর অনেকটাই জৌলুসহীন। প্রসঙ্গত, অভিনেত্রীর বিয়ে সম্পর্কিত পারিবারিক নানান অশান্তি পরিস্ফুট হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি, মায়ের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে করায় মা-মেয়ের মধ্যে নানা ঝামেলার সৃষ্টি হয়। কিন্তু, এখন বিনোদন জগতের কাজ এবং নতুন মাতৃত্বের স্বাদ নিয়ে এক সংবাদ মাধ্যমের কাছে খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিলেন অভিনেত্রী।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অভিনেত্রীর এখন দিন কেমন কাটছে? জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বললেন, “ভালোই কাটছে। আসলে অতটা চাপ অনুভব করছি না এখনও। সব ঠিকঠাকই চলছে”। এরপর স্বামী অর্থাৎ দীপঙ্করের কাছ থেকে তিনি এখন কতটা স্পেশাল ট্রিটমেন্ট পাচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, মা হওয়ার আগে যেরকম ট্রিটমেন্ট পেতেন এখনও তেমনই পাচ্ছেন মা হওয়ার আগেও তিনি যথেষ্ট যত্নেই থাকতেন। অহনা জানান তিনি একজন ওয়ার্কিং ওম্যান, তাই মা হওয়াটা তার কাছে ঠিক যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাজ। দুটোকে সমানতালে চালানোটাই আসল কাজ।

Actress Ahona Dutta, Chandni Ganguly, Dipankar Roy, Dance Bangla Dance, Anurager Chhowa, Pregnent, অভিনেত্রী অহনা দত্ত, চাঁদনি গঙ্গোপাধ্যায়, দীপঙ্কর রায়, ডান্স বাংলা ডান্স, অনুরাগের ছোঁয়া, অন্তঃসত্ত্বা

শুটিং ফ্লোরে সবাই ঠিক কতটা খেয়াল রাখছে? এই প্রশ্নের উত্তরে অহনা বললেন, ফ্লোরে এখন সবাই জানে বিষয়টা। এমনকি, পরিচালকও তার কিছুটা বুঝে শুনে শিফট দিচ্ছে। তবুও কাজ করার সময় অভিনেত্রী নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করে। তাই, তিন করার সময় হয়তো কখনো লাফিয়ে ফেললেন আবার কখনো হয়তো বেশি জোরে চিৎকার করে ফেললেন। এমন সময় সেটে বলে, ‘এখন এতটা না! যতটা শরীর মেনে চলা যায়, ততটাই করবে। তার বেশি দরকার নেই’।

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরের পরিকল্পনা কী? জিজ্ঞাসা করলে অহনা বললেন, যতদিন পারবেন ততদিন শুটিং করবেন। তবে ডেলিভারির পর একটা লম্বা ছুটি নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। মাত্র ২২ বছর বয়সে মা হওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে কী কখনো মনে সংশয় হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০ থেকে ২৪ বছরই হলো গর্ভধারণের সঠিক সময়। তাই তিনি অনেক ভেবে চিন্তেই এই বয়সেই মা হচ্ছেন। এই বয়সে একজন মেয়ে শারীরিকভাবে অনেক শক্তিশালী থাকে বলে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

অভিনেত্রী প্রেগনেন্সির কথা যেদিন থেকে চারিদিক হয়েছে কবে থেকেই একটা নেতিবাচক প্রভাব তাঁর চারিদিকে ঘুরছে। তবে, এইসব নিয়ে অভিনেত্রীর অনুভূতি জিজ্ঞাসা করাতে বললেন, “আমার কাছে, আমার স্বামী ছাড়া বাদবাকি সবাই অস্তিত্বহীন। কে কী বলছে, কী লিখছে, কী ভাবছে, আমার কিছুই যায় আসে না। আর আমাদের লড়াইয়ের ভাগিদার কিন্তু আমরাই। আজ অবধি যা করেছি, সে লিভ-ইন হোক, বিয়ে হোক, বাড়ি কেনা হোক, যা করেছি নিজেদের দমে করেছি। নিজেদের টাকায় করেছি। রক্ত জল করে, ঘাম ফেলে করেছি। ভগবানের আশীর্বাদে কাওকে বলতে হয়নি, আমাদের সাহায্য করো। হয়তো আগামী দিনে বলতে হতে পারে। তবে আমাদের লড়াইটা আমাদেরই। এইটুকুই”।

প্রথমবারের মতো ইউএস-সি-তে নিজের সন্তানকে দেখার অনুভূতি কেমন ছিল? জিজ্ঞাসা করে অহনা বললেন, “আমি যখন প্রথমবার দেখেছিলাম যে, আমার মধ্যে একটা জীবন্ত প্রাণ, আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম। আমার ডাক্তার বলছে, ‘এ কী এরকম করতে নেই’! ওই মুহূর্তটা ভীষণ স্পেশাল। এটা না আসলে বলে বোঝানো অসম্ভব। যারা এই মুহূর্তটার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন। এই পুরো প্রেগন্যান্সি জার্নির সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত আমার কাছে ইউএসজি-র সময়টা। ওই সময়টাই তো দেখতে পাই ওকে। বাদবাকি সময়টা তো শুধু অনুভব করতে পারি”।

আরও পড়ুনঃ কী নাটক চলছে? ব‌উ ছড়াচ্ছে ডিভোর্সের খবর! এদিকে বর জানেই না ডিভোর্স হয়েছে! পৃথার সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর শুনে অবাক সুদীপ মুখোপাধ্যায়!

সন্তানকে নিজের মধ্যে অনুভব কেমন করছেন? জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, “সবে তো ৫ মাসে পা রাখছি। তবে হালকা কিছু যেন নড়াচড়া করছে, যেন কোনও প্রজাপতি উড়ে যাচ্ছে”। এক কথায় বলা যায় এই সাক্ষাৎকার যেকোনো নারীর অনুপ্রেরণা হতে পারে অনায়াসে।