‘বাংলায় প্রশ্ন করার দরকার কী?’ – সাংবাদিকের বাংলা প্রশ্নের জবাবে বাঙালি ‘সুপারস্টার’ প্রসেনজিতের নির্লজ্জ উত্তর! পাশে বসে বাংলা ভাষার মুখরক্ষা করলেন অবাঙালি অভিনেতা রাজকুমার রাও! যে বাংলায় সুপারস্টার হলেন সেই ভাষাকেই অবজ্ঞা ফুঁসে উঠল নেটপাড়া!

জাতীয় মঞ্চে বাংলা ভাষার প্রতি ‘বুম্বাদা’র নির্লিপ্ততা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে বাঙালি দর্শক। সম্প্রতি ‘মালিক’ (Maalik) -এর ট্রেলার লঞ্চে এক মঞ্চে দেখা গেল ‘প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়’ (Prosenjit Chatterjee) এবং ‘রাজকুমার রাও’কে (Rajkummar Rao)। একদিকে যেখানে প্রসেনজিৎ তাঁর নতুন পুলিশ চরিত্র নিয়ে কথা বলতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, অন্যদিকে রাজকুমার হয়ে উঠলেন কার্যত বাংলার মুখপাত্র! কারণ? প্রসেনজিতের উদ্দেশে করা বাংলা প্রশ্ন হিন্দিতে অনুবাদ করলেন তিনি—এক নিখুঁত অনুবাদক যেন! আর এই দৃশ্য দেখেই গর্জে উঠেছে বাঙালি নেটিজেনরা।

প্রসেনজিতের দীর্ঘ কেরিয়ারে একাধিক ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। লালন ফকির থেকে ভবানী পাঠক, নেতাজি— প্রতিটি চরিত্রেই তাঁকে দেখা গিয়েছে বাঙালিত্বের মুখ হয়ে উঠতে। অথচ মুম্বইয়ের এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাঁড়িয়ে তিনি নিজেই যেন মুছে দিলেন সেই বাঙালিত্ব। তাঁকে প্রশ্ন করা হল বাংলায়, আর তিনি বললেন—“বাংলায় প্রশ্ন করার দরকার কী?” এখানেই যেন ট্র্যাজিক টার্ন! আর সেই মুহূর্তেই পাশ থেকে রাজকুমার রাও ঝাঁপিয়ে পড়লেন।

prasenjit chatterjee

তিনি বাংলায় প্রশ্নটি সম্পুর্ণ করে হিন্দিতে অনুবাদ করলেন। এমন পারফেক্ট উচ্চারণে যে, হাততালি পড়ে যায়। দর্শক বলছেন, এক অবাঙালি যখন বাংলা ভাষাকে সম্মান জানায়, তখন বাংলার আইকন হয়ে ওঠা সুপারস্টার কীভাবে জাতীয় মঞ্চে নিজ ভাষার প্রতিনিধিত্ব না করে মুখ ফিরিয়ে নেন? এই প্রশ্ন তুলেই ট্রোলিংয়ের ঝড় উঠেছে। কেউ লিখেছেন—”বাঙালি হয়ে বাংলা ভাষাকে অস্বীকার করা লজ্জার!” কেউ বলছেন—”রাজকুমার রাওই সত্যিকারের বাংলার প্রতিনিধি, প্রসেনজিৎ নয়।”

এমনকি, অনেকেই তাঁর চরিত্র নির্বাচনের সাহসিকতাকে স্বীকৃতি দিলেও ভাষা নিয়ে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মেনে নিতে নারাজ। ঘটনার মধ্যে হাইলাইট হয়ে উঠেছেন সাংবাদিক বিদিশা চট্টোপাধ্যায়ও। জাতীয় মঞ্চে স্পষ্ট বাংলায় প্রশ্ন করে তিনি যেন একাই তুলে ধরেছেন এই প্রজন্মের গর্ব—নিজের ভাষার প্রতি সম্মান। তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণে লুকিয়ে ছিল প্রতিবাদ, আত্মমর্যাদা এবং একরাশ হতাশা। আর সেখানেই স্পষ্ট হয়েছে—‘মালিক’ সিনেমায় পুলিশের চরিত্রে ‘বুম্বাদা’ দুঁদে হতেই পারেন।

আরও পড়ুনঃ দ্বিতীয় সংসারের পর্দা ফাঁস! টাকার জন্য প্রেম— চন্দ্রের মুখোশ খুলে দিল সোহিনী! চন্দ্রের কীর্তি সামনে আনল মিটিলের প্রমাণ! ধরা পড়তেই মায়ের আঁচলে আশ্রয় চন্দ্রের! ফুঁসে উঠল নতুন, চন্দ্রকে দিল কড়া হুঁশিয়ারি!

বাস্তবের মঞ্চে তিনি হয়তো ভুলে গিয়েছেন, তাঁর শিকড় কোথায়। এই ট্রেলার লঞ্চ পরিণত হয়েছে এক সামাজিক ভাষা বিতর্কে। যেখানে এক তরুণ অভিনেতা—রাজকুমার রাও বাংলা ভাষাকে সম্মান জানিয়ে বাঙালির হৃদয় জিতে নিলেন, আর এক ‘জাতীয় গ্রুমড’ সুপারস্টার—প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সেই মুহূর্তেই হয়ে গেলেন ট্রোলের শিকার। ভাষা যখন পরিচয়ের ভিত্তি, তখন বুম্বাদার এই নীরবতা নেটপাড়ায় যেন গর্জে উঠেছে এক অদৃশ্য আর্তনাদ হয়ে।