আমি প্রচুর কাজ পাই না, খুব কম কাজ পাই যেটা পাই সেটা মন দিয়ে করার চেষ্টা করি! আমার কোন‌ও কৃতিত্ব নেই, আমি এখনও শিখে চলছি অকপট তৃণা

প্রতিদিনের একঘেয়েমি আর দৌড়ঝাঁপের মাঝে একটু শান্তির খোঁজ সকলেই করেন। কর্মব্যস্ত জীবনের শেষে সন্ধেবেলা পরিবারের সঙ্গে বসে একসঙ্গে ধারাবাহিক দেখা যেন হয়ে ওঠে একরাশ প্রশান্তি। আর সেই ধারাবাহিকে যদি ফের দেখা যায় কোনও প্রিয় মুখকে, তাহলে তার আনন্দই আলাদা। একটা চেনা হাসি, সহজভাষী অভিব্যক্তি— এ সবই যেন আমাদের ঘরের মেয়েকে মনে করিয়ে দেয়। ঠিক এমনটাই ঘটেছে সম্প্রতি এক জনপ্রিয় মুখকে ঘিরে, যিনি দীর্ঘদিন পর আবার ফিরেছেন ছোট পর্দায়।

কখনও তিনি ছিলেন হাসিখুশি মেয়ের চরিত্রে, কখনও মজার খেয়ালি বউ। তার অভিনয় সব সময়েই সহজাত, সৎ ও হৃদয়স্পর্শী। এমন একজন অভিনেত্রী বহুদিন টেলিভিশন থেকে একটু বিরতিতে ছিলেন। সেই অনুপস্থিতি ভরাট করেছিল তাঁর অসংখ্য অনুরাগীর মন খালি করে। কিন্তু সম্প্রতি তিনি আবার ফিরেছেন নতুন ধারাবাহিকে, আর সঙ্গে সঙ্গেই দর্শক যেন ফিরে পেয়েছেন তাঁদের হারিয়ে যাওয়া আপনজনকে। গল্পের মোড়, চরিত্রের জটিলতা— সবকিছু ছাপিয়ে সেই পরিচিত মুখটাই হয়ে উঠেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

Trina Saha, television update, tollywood, তৃণা সাহা, সিরিয়াল আপডেট, টলিউড

ছোট পর্দায় তৃণা সাহার প্রত্যাবর্তন হয়েছে ‘পরশুরাম’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে। ধারাবাহিকটির গল্পে রয়েছে এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ ছেলের অসাধারণ রহস্য। পরশুরাম নামের সেই চরিত্রের স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে তৃণাকে। ধারাবাহিকটি সম্প্রচার শুরুর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই টিআরপি তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে প্রথম পাঁচে। প্রতিটি পর্বেই রয়েছে টানটান উত্তেজনা, রহস্য আর অ্যাকশন। এই ধারাবাহিক নিয়ে ইতিমধ্যেই উচ্ছ্বসিত দর্শক, প্রশংসায় ভরছে সোশ্যাল মিডিয়া।

তৃণা সাহা যদিও এই সাফল্যকে একান্ত নিজের বলে মানতে নারাজ। তাঁর স্পষ্ট কথা, “আমার কোনও কৃতিত্ব নেই। যদি থাকত, তা হলে আমার সব ধারাবাহিকই হিট হত।” তাঁর মতে, একটি ধারাবাহিকের সাফল্য নির্ভর করে বহু মানুষের পরিশ্রমের উপর— পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সহ-অভিনেতা-সহ প্রত্যেকের। তিনি কেবল নিজের চরিত্রটিকে সততার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পরেও এই বিনয় ও বাস্তববাদিতা তৃণার বিশেষত্ব।

তৃণার বক্তব্যে ধরা পড়েছে শিল্পীজীবনের কঠোর বাস্তব। তিনি জানান, “আমার হাতে একগুচ্ছ কাজ থাকে না। যা পাই, সেটা মন দিয়ে করি।” দিনে ১৪ ঘণ্টা শুটিংয়ের পর নিজের জন্য সময় থাকে না বললেই চলে। স্বামী নীল ভট্টাচার্য এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে কাজের খোঁজে ব্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে একাই কাজ ও আবেগের ভার বইতে হয় তৃণাকে। অথচ তাঁর কণ্ঠে কোনও আক্ষেপ নেই, শুধু বিশ্বাস— “মন দিয়ে কাজ করলে তার ফল একদিন পাওয়া যাবেই।”

আরও পড়ুনঃ আদৃত মিথ্যে বলে শুভর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়লো! এদিকে আদৃতকে নিজের করে পেতে মরিয়া মোহনা! শুভ কি পারবে আদৌ আদির থেকে মোহনাকে দূরে রাখতে?

তৃণা সাহা হয়তো নিজের কৃতিত্ব মানেন না, কিন্তু দর্শক জানেন— পর্দায় তাঁর উপস্থিতি মানেই এক ধরনের বাস্তবতার ছোঁয়া। এই সত্যিকারের সংযম আর সাদামাটা মনোভাবই তাঁকে আলাদা করে তোলে। ‘পরশুরাম’ হয়তো টিআরপিতে এগিয়ে, কিন্তু তার থেকেও বড় বিষয়— তৃণা আবার দর্শকের ঘরে ফিরেছেন, মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো অভিনয় নিয়ে।