বাংলা টেলিভিশন জগতে হঠাৎ করেই একের পর এক ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেক রকম কারণ উঠে আসলেও নেপথ্য কারণ কি তা বোঝা সাধারণ মানুষের কাম্য নয়। তবে একটি ধারাবাহিক শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে গেলে তার প্রভাব কলাকুশলী থেকে টেকনিশিয়ান সবার মধ্যে পরে। একটি ধারাবাহিক শুরুর সাথে সাথে শুধু অভিনেতা অভিনেত্রীরাই কাজ করেন না, তার সাথে জড়িত থাকে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজের মানুষ। সেই ধারাবাহিক থেকে তাদের সারা মাসের খরচ চলে। সেখানে হুট করে একটা সিরিয়াল বন্ধ হয়ে গেলে তার প্রভাব পরে সেই মানুষগুলোর উপর বেশি।
প্রসঙ্গত জি বাংলা, স্টার জলসার, সান বাংলা এই সবকটি চ্যানেলেই কয়েকদিনের মধ্যে দেখতে গেলে পরপর বহু ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে গেছে । এবং অনেক ধারাবাহিক বন্ধ হওয়ার দিকেও। ধারাবাহিক শুরু হলে তা যে একদিন শেষ হবে এটা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু যদি তার বেশিরভাগ ধারাবাহিক বেশি দিন না চলেই শেষ হয়ে যায় তাহলে সেটা চিন্তার। আর এই ভাবেই বহু ধারাবাহিকে এখন অল্প দিনেই ইতি টানতে হচ্ছে।
এর মধ্যে বাংলা টেলিভিশন এর জনপ্রিয় চ্যানেল গুলির একাধিক ধারাবাহিক রয়েছে যেমন “বৌমা একঘর”, “খড়কুটো”, “উমা”, “মনফাগুন” প্রভৃতি।
এদের মধ্যে বেশ কিছু ধারাবাহিক ছিল যা বেশি দিন শুরুই হয়নি,অল্প দিনের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে।এর ফলে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সাথে ছোট শিল্পীদেরও ওপর কি প্রভাব পড়ছে তাই নিয়ে কলাকুশলী এবং পরিচালক দুইজনই মুখ খুলেছেন।
যেমন ‘গৌরী এলো’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র ঈশান ওরফে বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, তিনি এক সংবাদমাধ্যম কে বলেন, “এটার নেপথ্যে অনেকগুলো কারণ কাজ করে কলাকুশলীর মাত্র কয়েক দিন আগে জানানোটা খুবই ভুল। ইন্ডাস্ট্রি কিছু মানুষ এটাকে প্রায় নিয়ম করে ফেলছে।
তারা বলে, এখনই শিল্পীদের জানিও না, তা হলে শট দিতে চাইবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো এমনটা সত্যিই ঘটে, কিন্তু সব ক্ষেত্রে তো আর ঘটে না। একটা নির্দিষ্ট সময় দেওয়া উচিত ধারাবাহিক বন্ধের ঘোষণা করার আগে। চ্যানেল বা প্রযোজকদেরও একটা ধারাবাহিক শুরুর পর কিছুটা সময়ে অন্তত ধৈর্য ধরে দেখা উচিত। দু’মাস গেল কী গেল না, আর বন্ধ করে দিলাম, এই প্রবণতা তো ঠিক নয়।”
আবার অন্যদিকে সেই নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,“না অবশ্যই নোটিস দেওয়া হয়। আগে থেকেই জানানো হয়। দিনের শেষে এটা সমাজ সেবা নয়, এর মধ্যে একটা ব্যবসা আছে। লাভের মুখ দেখা না গেলে কর্তৃপক্ষ সেই ধারাবাহিক চালাতে চান না। এটা একটা লড়াই। আমরা জেনে বুঝেই এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে নেমেছি। আমার শো নম্বর না দিলেও আমাকে সরে যেতে হবে। যে কোনও কর্পোরেট সংস্থাতেও এ ভাবেই কাজ হয়। তেমনই এখানে নিজেদের লক্ষ্যপূরণ না করতে পারলে কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”