লিওনেল মেসির কলকাতা সফর ঘিরে যে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছিল, তার রেশ শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়াল প্রবল ক্ষোভে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রিয় তারকাকে একঝলক দেখার আশায় হাজার হাজার মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন। ভোররাত থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই মেসির দর্শন পাননি। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির এই তীব্র ব্যবধান থেকেই জন্ম নেয় অসন্তোষ। মুহূর্তের মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা স্টেডিয়াম চত্বর। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দর্শকাসনে, পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
এই অস্থির পরিবেশের মধ্যেই টলিউডের প্রতিনিধি হিসেবে যুবভারতীতে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। আগেই জানা গিয়েছিল তাঁর উপস্থিতির কথা। নির্ধারিত সময়ে মাঠে এসে ফুটবল কিংবদন্তি মেসি এবং লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। ক্যামেরার সামনে হাসিমুখে ছবিও তোলেন। সেই মুহূর্তে গ্যালারিতে বসে থাকা বহু দর্শক মেসিকে না দেখতে পাওয়ার হতাশায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলেন। মাঠের ভেতরের ঝলমলে মুহূর্ত আর বাইরের জনতার ক্ষোভ একেবারে বিপরীত ছবি তুলে ধরেছিল।
পরবর্তীতে শুভশ্রী সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিতেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। নেটপাড়ায় শুরু হয় প্রবল ট্রোলিং। অনেকেই অভিযোগ তোলেন, সাধারণ দর্শকের টাকায় তারকাদের বিশেষ সুবিধা ভোগ করা হচ্ছে। কেউ প্রশ্ন তোলেন সময়জ্ঞান নিয়ে, আবার কেউ সরাসরি কটাক্ষ করেন অভিনেত্রীর ফুটবল বোঝাপড়া নিয়ে। মেসিকে দেখতে না পাওয়ার দুঃখে ক্ষতবিক্ষত সমর্থকদের কাছে এই ছবি যেন নুনের ছিটে হয়ে ওঠে।
একাংশ নেটিজেন শুধু শুভশ্রী নন, উদ্যোক্তাদের দিকেও আঙুল তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, আয়োজনের দুর্বল ব্যবস্থাপনাই এই বিশৃঙ্খলার মূল কারণ। জনতার আবেগকে গুরুত্ব না দিয়ে ছবি তোলা আর অতিথি আপ্যায়নকে প্রাধান্য দেওয়ায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। অনেকে মন্তব্য করেন, এমন সময় তারকাদের উচিত ছিল সংযত থাকা এবং সাধারণ দর্শকের অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখানো। ক্ষোভ আর হতাশার সুরেই ভরে ওঠে মন্তব্যের পর মন্তব্য।
আরও পড়ুনঃ “আমার অভিজ্ঞতা আলাদা, তাই তুলনায় যাচ্ছি না” বড়দিনে বক্স অফিসে হাইভোল্টেজ লড়াইতে মুখোমুখি দেব-শুভশ্রী! ‘প্রজাপতি ২’-এর সামনে, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’র টক্করের আগেই কি সরে দাঁড়ালেন লেডি সুপারস্টার?
প্রসঙ্গত, শনিবার নির্ধারিত সময়েই যুবভারতীতে পৌঁছেছিলেন মেসি। কিন্তু বিপুল ভিড় এবং ছবি তোলার হুড়োহুড়িতে তাঁকে কার্যত দেখা যায়নি। গ্যালারির দিকে হাত নাড়লেও বেশিরভাগ দর্শক সেই মুহূর্ত ধরতেই পারেননি। নিরাপত্তা এবং বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তাঁকে মাঠ থেকে বের করে নেওয়া হয় বলে জানা যায়। এরপরই ক্ষোভ উগরে দেন সমর্থকেরা। বোতল ছোড়া, ব্যারিকেড ভাঙা, পোস্টার পোড়ানোর মধ্যে দিয়ে হতাশা প্রকাশ পায়। ফুটবল উৎসব শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় অশান্ত অধ্যায়ে।






