“বৌদিদের জায়গায় থাকলে খাবারে বি’ষ মিশিয়ে দিতাম!”— সুদীপার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য! কেন এমন বললেন অভিনেত্রী? এমন মন্তব্যের পেছনে লুকিয়ে আছে সংসারের কোন গল্প? জানলে চমকে যাবেন!

অভিনেত্রী, সঞ্চালিকা, উদ্যোক্তা— সব ভূমিকাতেই আলাদা আলো ছড়িয়েছেন ‘সুদীপা চট্টোপাধ্যায়’ (Sudipa Chatterjee)। ছোট পর্দায় তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল অভিনয়ের মাধ্যমে, কিন্তু দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন মূলত ‘জি বাংলার রান্নাঘর’-এর সঞ্চালিকা হিসেবেই। সহজ-সরল কথা, সাবলীল উপস্থাপনা, আর রান্নার প্রতি ভালোবাসা— সব মিলিয়ে এক সময় প্রায় প্রতিটি ঘরের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। আজও টেলিভিশনের পাশাপাশি ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থেকে নিজস্ব পরিচিতি ধরে রেখেছেন।

বর্তমানে নিজের বুটিক ব্যবসা নিয়েও তিনি সমান মনোযোগী। ব্যস্ত কাজের মধ্যেও পরিবারের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও টান যেন আরও গভীর হয়ে উঠেছে। আজ তিনি স্বামী অগ্নিদেব ও ছেলে আদিদেব নিয়ে সুখে আছেন, কিন্তু শিকড়ে এখনও সেই বড় একান্নবর্তী পরিবারের মেয়ে সুদীপা। পাঁচ দাদার একমাত্র বোন হিসেবে ছোটবেলাটা কেটেছে ভালোবাসা আর শাসনের মিশেলে। দাদাদের কড়া নিয়মের মধ্যে যেমন বড় হয়েছেন, তেমনই তাঁদের কাছেই শিখেছেন স্নেহ আর রক্ষার মানে।

এখনও প্রতিদিন তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা না বললে দিনটাই অসম্পূর্ণ লাগে তাঁর। সুদীপা নিজেই হাসতে হাসতে বলেছেন, কখনও কখনও তাঁর স্বামী অগ্নিদেব নাকি রেগে গিয়ে বলেন, “আমি যদি বৌদিদের জায়গায় থাকতাম, খাবারে বিষ মিশিয়ে দিতাম!” আসলে দাদাদের সঙ্গে এত সময় কাটানোয় মাঝে মধ্যেই সংসারে মজার ঝামেলা হওয়ার একটা সম্ভবনা থেকেই যায়। তবে, সুদীপা মতে তার বৌদিরা এমন নন। দাদাদের পাশাপাশি জীবনের এক বড় জায়গা দখল করে আছেন বৌদিরাও।

মায়ের অনুপস্থিতিতে তাঁরা যেন দ্বিতীয় মায়ের ভূমিকাই নিয়েছিলেন। ছোটবেলায় বৌদিদের হাতেই স্নান থেকে শুরু করে চুলে শ্যাম্পু করা—সব হতো। সেই যত্ন, সেই স্নেহ আজও অটুট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের সংজ্ঞা বদলেছে, কিন্তু মমতার রঙটা একটুও ফিকে হয়নি। এখন তিনি যখন বাপের বাড়ি যান, তখন সেই টানেই যান—বৌদিদের টান, তাঁদের স্নেহই যেন তাঁকে টেনে নিয়ে যায় পুরোনো সেই ঘরে। আজ ৪৫ বছর বয়সে এসে সুদীপা যেমন একজন সফল নারী, তেমনই গভীরভাবে পারিবারিক একজন মানুষ।

আরও পড়ুনঃ শাশুড়ির মৃ’ত্যুতে হারানো সংসার ফিরে পেলেন অভিনেত্রী রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়! দূরত্ব ভুলে স্বামীর কাছে ফিরলেন অভিনেত্রী?

আজও দাদারা তাদের আদরের বোনকে আগলে রাখতে ভোলেন না। খ্যাতির ভিড়ে থেকেও তিনিও কখনও ভোলেননি নিজের শিকড়, নিজের মানুষদের। হয়তো সেই কারণেই তাঁর কথায় এত সহজ উষ্ণতা, তাঁর জীবনের গল্পে এত পরিচিত এক মানবিক সুর। খ্যাতি, কাজ, সংসার— সবকিছুর মধ্যেও যিনি প্রতিদিন দাদাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, সেই সুদীপা যেন আজও সেই ছোটবেলার বোন— যিনি পরিবারে থেকেই নিজের পৃথিবী তৈরি করেছেন, আর ভালোবাসায় তাকে পূর্ণ করে তুলেছেন।