ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসকের নামে বিশেষ ডুডল প্রকাশ করল গুগল। আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক মহীয়সী নারী। যিনি সমাজে প্রথম মহিলা ডাক্তার হওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন। ডঃ কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়।
এমন একজন স্বাধীনচেতা নারী কাদম্বিনী দেবী, যার উদাহরণ সকলেই দিয়ে থাকেন। ব্রাহ্মসমাজের নেতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন কাদম্বিনী দেবী। প্রথা ভেঙে কাজ করা ছিল তাঁর স্বভাব। সেরকমই নিজের বিয়ে নিয়েও, অনেকের কাছে অনেক মন্তব্য শুনতে হয়েছিল তাঁকে। তবে তিনি সেসব কিছুর তোয়াক্কা না করে এগিয়ে গেছেন নিজের পথে।
সাল ১৮৮৪। কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম মহিলা ডক্টর হিসেবে ভর্তি হয়েছিলেন। সেই সময়ে সেটা ছিল এক অভূতপূর্ব কাজ। উনিশ শতকের শেষভাগে তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁকে দেখে মহিলাদের মধ্যে চিকিৎসক হওয়ার অনুপ্রেরণা জাগে। পরবর্তীকালে ভারতীয় মহিলাদের তিনি নতুন পথ দেখিয়েছিলেন। যদিওবা ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার কে? এই বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।
কারণ সেই সময়ে দুজন মহিলা একই সঙ্গে নিজেদের মেডিকেল ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। একজন ছিলেন কাদম্বিনী দেবী এবং অন্যজন ছিলেন আনন্দীবাঈ জোশী। একদিকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেন কাদম্বিনী দেবী। অন্যদিকে আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করেন আনানন্দীবাঈ। তবে আচমকাই ১৮৮৭ সালে মারা যান আনন্দীবাঈ। ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার হিসেবে সকলের কাছে থেকে গিয়েছে একজনের নাম। তিনি হলেন কাদম্বিনী দেবী
আজ ১৬০ তম জন্মবার্ষিকীতে গুগলের তরফ থেকে কাদম্বিনী দেবীকে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছে। এর আগে একটি রিপোর্ট করা হয়েছিল। যাতে জানা যায় কাদম্বিনী দেবীকে সম্মান জানায়নি গুগল। যাতে বিপুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় গুগলকে। উল্লেখ্য আছে রুখামভাই রাওয়াতকে সম্মান জানিয়েছিল গুগল। কিন্তু এশিয়ার প্রথম নারী চিকিৎসককে গুগল সম্মান জানাতে ভুলে যায়।
কাদম্বিনী দেবী প্রথম নারী যিনি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ডায়াসে জায়গা করেছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন এশিয়ার প্রথম নারী চিকিৎসক। তিনি যুক্তরাজ্যে ডাবলিন, গ্লাসগো, এডিনব্রাতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এমনকি কলকাতার লেডি ডাফ্রিব হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজের কাজ শুরু করেছিলেন কাদম্বিনী দেবী। নিজের মৃত্যুর আগ অব্দি তিনি জনসেবা করে গিয়েছিলেন।
আজ কাদম্বিনী দেবীর জন্মদিনে গুগল থেকে সম্মান জ্ঞাপন করে, ডুডল বানানো হয়েছে। সেটি বানিয়েছেন ব্যাঙ্গালোরে বসবাসকারী একজন বাঙালি আর্টিস্ট। তার নাম অদ্রিজা। এই কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন তিনি।