আজকাল বাংলা সিরিয়ালে যে বিভিন্ন ধরনের গল্প এবং প্রেক্ষাপট স্থান পাচ্ছে, একটা সময় তেমন হতো না। একটা সময় এমন ছিল যখন বাংলা সিরিয়াল বলতে শুধুমাত্র সামাজিক বিষয় বস্তু দেখানো হতো টিভির পর্দায়। তবে আজ সেখান থেকে অনেকটা সরে এসে উন্নত হয়েছে এবং বলা যায় আধুনিক হয়েছে টেলিভিশনের ভাবনা-চিন্তা।
মানুষ যত এগোচ্ছে তত সময় বদলে যাচ্ছে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের ভাবনা চিন্তাকে মেলে ধরতে টেলিভিশন স্থান পাচ্ছে নিত্য নতুন গল্প। কোনটায় মেয়েরা পুলিশ অফিসার হয়ে যাচ্ছে আবার কোনটায় তারা উকিল হয়ে যাচ্ছে। এমনকি ক্রিকেটার চরিত্র অবধিও দেখানো হয়েছে এক নারীকেন্দ্রিক ধারাবাহিকে। আর সম্প্রতি স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসার হিসেবে এক মহিলাকে দেখানো হচ্ছে।
সামাজিক দিক দিয়ে ভাবতে গেলে বেশ উন্নত ভাবনা এটা। কিন্তু সেখানেও একটা সমস্যা রয়েছে যেটা নিয়ে মূলত আজকের লেখা। আসলে টেলিভিশন ধারাবাহিকের নির্মাতারা মহিলাদের বেশি করে জায়গা দিতে গিয়ে সমাজের বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ এবং সম্মানীয় পদগুলিকে খুব ঠুনকো করে এবং নিচু করে দেখাচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে বেশ অনেকগুলো উদাহরণ তুলে ধরতে পারি। গুড্ডি, মিঠাই এবং তারপর জগদ্ধাত্রী ধারাবাহিকে এই একই বিষয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে মুখ্য চরিত্রেরাই সরবে স্বর্বা তারাই সব কিছু করতে পারে, আর বড় বড় আইএএস, আইপিএস অফিসাররা বড় বড় সংলাপ বলা ছাড়া কিছুই পারে না। সত্যিই কি তাই?
গুড্ডি ধারাবাহিকে অনুজ পুলিশ অফিসার কিন্তু সে এখন গুড্ডির পেছনে পড়ে আছে। আজ রাতে দুজন আবার লেডিস হোস্টেলের সময় কাটাবে যেন পুলিশ অফিসারের আর কোন কাজ নেই। তারপর মিঠাইয়ে এসেছে রুদ্রদা। নীপাকে বিয়ে করার পর থেকে এসিপি হলেও সে পড়েছে বিপাকে। কারণ সব সমস্যা মিঠাই আর উচ্ছেবাবু নিজেরাই সমাধান করে ফেলে রুদ্রকে ডাকার আগে। আর তারপর সম্প্রতি শুরু হয়েছে জগদ্ধাত্রী যেখানে এই মহিলা একজন স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসার অথচ হাবভাব দেখলেই মাথা গরম হয়ে যায়। নিজের বয়ফ্রেন্ডের গলা মেহেন্দির ফোনে শুনে চিনতে পারল না! এ কেমন স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসার? হাজার বার নিজের কানে শুনেও অপরাধীদের গলাই তো চিনতে পারবে না।
এই বিষয়টা নিয়ে হয়তো এবারে ধারাবাহিকের নির্মাতাদের ভেবে দেখতে হবে কারণ পুলিশ অফিসারদের বাড়ির স্ত্রী-মেয়েরা রীতিমতো রেগে লাল হয়ে গেছে। তাদের মনে হচ্ছে পদস্থ কর্তাদের রীতিমতো অপমান করা হচ্ছে যেটা ভালো সামাজিক বার্তা দিচ্ছে না।
“আমার হাত দেখে কি মনে হচ্ছে, আমি কি কাপড় কাচার জন্যই জন্মেছি? ডু ইউ থিঙ্ক সো!”— ঐন্দ্রিলার দাম্ভিক মন্তব্যে সমাজ মাধ্যমে তোলপাড়! ‘কেন, কাপড় কাচা কি খারাপ জিনিস? বরং না পারাটাই লজ্জার!’ ‘এত অহংকার ভালো না, হঠাৎ পরিস্থিতি বদলে গেলে কি হবে জানেন?’— নেটপাড়ার কটাক্ষ!