Ayesha Bhattacharya: “উদ্বোধনের আগেই বাচ্চাদের দলে ঢুকে ঠাকুর দেখে নিয়েছি”! সেলিব্রিটি হলেও দশমীতে পাড়ার ভাসান নাচ মিস করেন না তিনি! Exclusive “পুজোর গপ্পো” আড্ডায় “কাঞ্চি” অভিনেত্রী আয়েশা ভট্টাচার্য

পুজোর আনুষ্ঠানিক সূচনা তো মহালয়াতেই হয়ে গেছে। তবে সিরিয়ালের জন্যে পঞ্চমী অবধি শুটিং। তারপরই শুরু পুজোর প্ল্যান আর হইচই। শিরোনাম পড়ে অনেকেই হয়তো বুঝে গেছেন আমরা কার কথা বলছি।

হ্যাঁ, তিনি হলেন জনপ্রিয় টেলি তারকা আয়েশা ভট্টাচার্য। এই মুহূর্তে কাঞ্চির জন্যে তাঁর ব্যস্ততা তুঙ্গে। তার সঙ্গে টুকটাক পুজোর কাজও সারছেন। কাজে যেতে যেতেই আমাদের সঙ্গে টুক করে আড্ডা সেরে ফেললেন আয়েশা। শেয়ার করলেন নিজের পুজোর প্ল্যান।

আগেই বললাম পঞ্চমী অবধি তাঁর শুটিং। এবার নতুন সংযোজন ষষ্ঠী গেট টুগেদার তাও আবার সিরিয়ালের শ্বশুরমশাইয়ের বাড়িতে। সপ্তমীতে কোনও প্ল্যান নেই আপাতত তবে প্ল্যানিং চলছে। অষ্টমীতে বন্ধুদের সঙ্গে লাঞ্চ থেকে ডিনার অবধি দেদার আড্ডা। নবমীটা পুরোপুরি নিজের পরিবারকে দিতে চান আয়েশা। প্যান্ডেল হপিং সেভাবে হয়ে ওঠে না নায়িকার তবে ষষ্ঠীর দিন মাঝরাতে কাছাকাছি ঠাকুরগুলো দেখার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। আবার মাঝে মাঝে ফাঁকায় ফাঁকায় একাদশীর দিন একটু প্যান্ডেল হপিং করে আসেন তিনি। তবে আয়েশা বললেন সেভাবে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে না ঘুরলেও আর দুঃখ নেই কারণ এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে একাধিক প্যান্ডেল একসঙ্গে দেখা যায়।

কথায় কথায় উঠে এলো ছোটবেলার প্রসঙ্গ। তখন লাইন দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা এই প্যান্ডেল সেই প্যান্ডেল ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা, লাইন দিয়ে রেস্তোরাঁয় খাওয়া চলত। আর সেই সঙ্গে ছিল আলাদা করে পুজোর শপিং। যদিও আয়েশা সারা বছর ধরে টুকটাক শপিং করতেন তবে এই সময়টায় তা বেড়ে যেত। এখন সেগুলো পাল্টেছে। ছুটির দিনে একটু গেট টুগেদার, বাড়িতে বসে আড্ডা দেওয়া এগুলো করতে তাঁর বেশি ভালো লাগে। তবে এত কিছু পাল্টে গেলেও একটা জিনিস তাঁর কাছে এখনও একইরকম থেকে গেছে ছোটবেলা থেকে আর সেটা হলো দশমীর ভাসান নাচ। গড়িয়ার পাড়ার প্যান্ডেলে দশমীর ভাসান নাচ মানেই লোকজন ডেকে ডেকে নিয়ে যেত পাড়ার মেয়ে টুকটুককে। ওই পাড়ায় দশমীর দিন ভাসানের জন্য আলাদা করে সুন্দরভাবে আয়োজন করা হয়। তাই সেটা কোনোভাবেই মিস করতে চান না অভিনেত্রী।

নায়িকার কাছে একটা মজার প্রশ্ন রেখেছিলাম যে এখন তিনি সেলিব্রেটি। তাই এখন লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লোকের মাঝে ফুচকা খাওয়া এগুলো যদি আবার করতে পারেন তিনি কি করবেন? আয়েশা সঙ্গে সঙ্গে একটা মজার ঘটনা শেয়ার করলেন। লোকজনের ভিড় যাতে তাঁকে চিনতে না পারে তাই একবার তিনি মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে, সানগ্লাস পরে নিজেকে ঢেকেঢুকে সোজা প্যান্ডেলে ঢুকে গিয়েছিলেন। সেটা অবশ্যই তিনি করতেন পঞ্চমী বা ষষ্ঠীর দিন যখন ভিড়টা একটু কম থাকতো তুলনামূলকভাবে।

আর এখানেই শেষ নয়, এমনকি তিনি বাচ্চাদের দলে ঢুকে উদ্বোধনের আগেই ঠাকুরের মুখ দেখে এসেছেন। সেটা ছিল ২০১৯ সাল। আসলে প্যান্ডেলে উদ্বোধনের আগে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না কাউকেই। শেষে আয়েশার মা জোর করে এক উদ্যোক্তাকে অনুরোধ করেন যে দূর থেকে এসেছেন তাই বাচ্চাদের সঙ্গে যেন তাঁর বাচ্চাটিকেও ঢুকিয়ে দেওয়া হয় দর্শনের জন্য। দিনটা ছিল পঞ্চমী। আর এটা একবার নয় বেশ কয়েকবার তিনি করেছেন স্বীকার করলেন। তবে মুখ ঢেকে গেলেও অনেকেই মাঝে মাঝে চিনতে পারতেন চোখ দেখে এবং প্রশ্ন করতেন তিনি কি আয়েশা ভট্টাচার্য? নায়িকা সবিনয়ে নাকচ করে দিতেন। আর এই সবকিছুর জন্যই কখনওই পুজোর সময় কলকাতার বাইরে যেতে চান না অভিনেত্রী।

পুজোর গল্প হচ্ছে আর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে কথা হবে না এমনটা কি হয়? পুজোর ওই কটা দিন সমস্ত ডায়েট ভুলে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন আয়েশা। সেটা শুরু হয় সপ্তমী থেকে। ফুচকার পাশাপাশি চাইনিজ খেতে খুব বেশি ভালবাসেন। এমনকি ওই সময়টাই বাড়িতে রান্না ঘরের দরজাই রীতিমত বন্ধ থাকে।

পুজোর অবিচ্ছেদে অংশ প্রেম কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নায়িকার সেভাবে প্রেম হয়ে ওঠেনি কারণ তিনি দাবি করেন তিনি খুব লাজুক প্রকৃতির। তবে অষ্টমীর দিন ধুতি-পাঞ্জাবি পরা সুপুরুষ দেখলে একটু ক্রাশ খাওয়া এমনটা হয়েছে অনেকবার। তবু প্রেম হয়নি আর তাই প্রতিবারের মতো এবারেও তিনি সিঙ্গেল।

পুজোর আড্ডার ফাঁকে আয়েশা সকলের জন্য মায়ের কাছে মঙ্গল কামনা করতে ভুললেন না। সম্প্রতি নায়িকা শুরু করেছেন একটি সিনেমার শুটিং। তাই চেঙ্গিসের কাজ যেন ভালোভাবে মিটে যায় এমনই প্রার্থনা করবেন তিনি এইবার মায়ের কাছে।

সাক্ষাৎকার: তিতলি ভট্টাচার্য