বাংলা টেলিভিশনে একটা সময় নায়িকা হয়ে পর্দা কাঁপিয়েছেন তিনি। আজ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনয় করলেও তার এবং ঋষি কৌশিকের জুটি দর্শকদের মনে দারুন ভাবে জনপ্রিয়। যদিও মূল নায়িকার চরিত্রে তাঁকে ঋষি কৌশিকের বিপরীতে তাকে দেখা গেলেও আর অন্য কোথাও তাকে সেই অর্থে নায়িকা হিসেবে দেখা যায়নি। বরং পার্শ্ব চরিত্রে তিনি দাপিয়ে কাজ করে চলেছেন বাংলা টেলিভিশন দুনিয়ায়।
বুঝতেই পারছেন কার কথা বলছি তিনি অভিনেত্রী অপরাজিতা ঘোষ (Aparajita Ghosh)। টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিভাবান অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী তার স্বামী। তাদের মধ্যেকার স্বামী-স্ত্রীর দারুন কেমিস্ট্রি মাঝেমধ্যেই সোশ্যাল মাধ্যমের পাতায় ফুটে ওঠে। দীর্ঘ ১২ বছর একসঙ্গে দিব্যি কাটিয়ে ফেললেন তারা।
আজকালকার ভাঙা সম্পর্কের ভিড়ে কীভাবে টিকে গেল তাদের সম্পর্ক?
এই বিষয়ে সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছেন, যদি কোনও সম্পর্কে বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা থাকে তাহলে সেই সম্পর্ক অবশ্যই টিকে যায়! আসলে ভালোবাসার তো কোনও ফর্মুলা হয় না। ভালোবাসাটা থাকতে হয়। একইসঙ্গে অপরাজিতার বক্তব্য, কম্প্রোমাইজ আর অ্যাডজাস্টমেন্টের পার্থক্যটা বুঝতে হবে।
আমরা জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে, প্রতিটা পদে অ্যাডজাস্ট করি। আসলে অ্যাডজাস্ট করাটা জীবনের একটা অংশ। আর নিজের কাছের মানুষের জন্য অ্যাডজাস্ট করে যদি আমি ভালো থাকি তাহলে সেখানে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যেন আমি কম্প্রোমাইজ না করি। কোথাও যেন পরিবারে আমাকে দমিয়ে না রাখা হয় তাহলে সে সংসার বা সম্পর্ক সুখের নয়। অভিনেত্রীর মতে তখন সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।
অপরাজিতার মতে একই প্রফেশনে থাকা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুলনা, বডি শেমিং, মানুষের চেহারা নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য এই সমস্ত ঘটনা গুলো আমাদের সঙ্গে এমন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে যে সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। একটা মানুষের মন তার চেহারার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার কাছে। রোগা, মোটা, কালো, ফর্সা মানুষের মুখে বলিরেখা সবই সামাজিক নিয়ম সামাজিক প্রবৃত্তি। সেগুলো দিয়ে তাকে বিচার না করাই উচিত বলে মনে করেন তিনি। অসম্ভব পজিটিভ মানসিকতার মানুষ অপরাজিতা।
ঋত্বিক-অপরাজিতা দুজনেই ব্যক্তিগত জীবনেও ভীষণ সাধারন নিয়মে জীবন যাপন করেন। দীর্ঘ ১২ বছর একে অপরের হাতে হাত রেখে পথ হেঁটে ফেলেছেন টলিউডের পাওয়ার কাপল ঋত্বিক চক্রবর্তী ও অপরাজিতা ঘোষ। যদিও আজও তাদের মধ্যে কথা হারিয়ে যায়নি। তাদেরকে কথা বলার জন্য কথা খুঁজতে হয় না। ওই যে ভালোবাসা আর বন্ধুত্বটা রয়ে গেছে। সংসারের জাঁতাকলে হারিয়ে যায়নি সেই বন্ধুত্ব। তারা এখনও খুব ভাল বন্ধু। তারা খুব সুখী স্বামী-স্ত্রী।
