মায়ের চেষ্টায় হয়েছেন অভিনেত্রী, আজ‌ও জীবনের কঠিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মাতৃহারা স্রোত ওরফে স্বপ্নীলা চক্রবর্তী

জি বাংলার (Zee Bangla) জনপ্রিয় ধারাবাহিক মিঠিঝোরা (Mithijhora)। শুরুর থেকেই অর্গানিক স্টুডিওর এই ধারাবাহিকটি মন জয় করে নিয়েছিল দর্শকদের। রাই, নীলু এবং স্রোত, তিন বোনের লড়াইয়ের কাহিনী পর্দায় বেশ পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা। তবে ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রের রাইপূর্ণা হলেও যে চরিত্রটি শুরুর থেকেই দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সেটা হল রাইয়ের ছোট বোন স্রোতের চরিত্র।

মিঠিঝোরার প্রতিবাদী স্রোতের চরিত্রে দর্শকদের মন জয় করছেন স্বপ্নীলা চক্রবর্তী

প্রতিবাদী, স্পষ্ট বক্তা, পরিশ্রমী, সৎ এই চরিত্রটি শুরুর থেকেই বেশ পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা বাবার আদর্শ এবং শিক্ষাকে মাথায় রেখে জীবনের লড়াই চালিয়ে গেছে স্রোত। মা, দাদা এমনকি মেজ দিদি নীলুও যখন রাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলছে, বারবার রাইকে অপমান করছে, এমনকি রাইয়ের গায়ে হাত তুলেছে তখনও সব কিছুকে সরিয়ে সত্যের পাশে দাঁড়িয়েছে স্রোত।

এমনকি সার্থক স্যারের অন্যায় ব্যবহারও মুখ বুঝে সহ্য করে নেননি সে। আড়ালে নয়, সকলের সামনেই স্পষ্টভাবে তার বিরোধিতা করতে দেখা গেছে স্রোতকে। তবে শুরু প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবেই নয়, তবে শুরু ধারাবাহিকেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও এরকম প্রতিবাদী আপনাদের সকলের প্রিয় স্রোতস্বিনী ওরফে স্বপ্নীলা চক্রবর্তী। মিঠিঝোরা ধারাবাহিকটি শুরু হওয়ার সময় একবার দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চে এসেছিলেন স্বপ্নীলা। সেখানেই ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়ার কাহিনী জানিয়েছিলেন তিনি।

Bengali serial

মায়ের হাত ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন স্বপ্নীলা চক্রবর্তী

অভিনেত্রী জানান তার ছোটবেলা কেটেছে আসানসোলে। ছয় মিসি, মা, বাবা এবং ছোট বোনকে নিয়েই ছিল তার জীবন। ছোট থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন অভিনেত্রী হওয়ার। মেয়ের ইচ্ছার কথা জানতে পেরে পাশে দাড়ান স্বপ্নীলার বাবা মা। মেয়েকে নিয়ে কলকাতার নানা জায়গায় অডিশন দিতে নিয়ে যেতেন স্বপ্নীলার মা। শত ব্যস্ততা, কষ্টের মাঝেও মেয়েকে শিখিয়েছিলেন থিয়েটার।

মায়ের মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব সামলে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্নীলা চক্রবর্তী

আরও পড়ুন: সেনগুপ্ত বাড়িতে ফের ধামাকা! মাঝরাতে সেনগুপ্ত বাড়ির দরজায় টোকা দিল কে? দরজা খুলতেই চমকে উঠল গোটা পরিবার!

তবে হঠাৎ ক্যান্সারে কারণে অকালে প্রয়াত হন অভিনেত্রী স্বপ্নীলার মা। অভিনেত্রী জানিয়েছেন “মা আমার জন্য সবকিছু করেছে কিন্তু মা আমার অভিনয় জীবন দেখে যেতে পারেনি। তবে মায়ের অভাব কখনও বুঝতে দেননি বাবা। স্রোতের মতোই আমার মা বাবাও শিখিয়েছে অন্যায়ের সামনে মাথা নত করে যাবে না।” অভিনেত্রী এও জানান মিঠিঝোরা আসলে তার তৃতীয় ধারাবাহিক। অডিশন দিয়েই এই ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন স্বপ্নীলা। মায়ের মৃত্যুর পর ভিআরসি দিয়ে বাবা এবং বোন চলে আসেন কলকাতায়। বর্তমানে বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য তিনি নিজেই। বাবার অসুস্থ থেকে, বাজার সবটাই করেন অভিনেত্রী নিজে। অভিনয় সংসার সামলে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনা। বর্তমানে ইংরেজিতে স্নাতক পড়ছেন অভিনেত্রী। তার জীবনের লড়াই শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে হয়ে উঠেছিলেন দর্শক।