কাঞ্চন মল্লিক ( Kanchan Mallick ) একজন অভিনেতার পাশাপাশি দক্ষ রাজনীতিবিদ। রাজনীতির ময়দানে নেমেই তিনি যেমন জনসাধারণের মন জয় করে ভোট জিতে বিধায়কের পদ পেয়েছেন তেমনি অভিনয় ক্ষেত্রেও তার অভিনয় অগণিত দর্শকের মনের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে অনেক আগেই। উত্তরপাড়ার বিধায়ক তিনি, একইসাথে বড় পর্দার চিরপরিচিত মুখ, কিন্তু অনেকেই জানেন না, অনেক লড়াই করেই টলিউডে ( Tollywood ) নিজের জায়গা পোক্ত করেছিলেন কাঞ্চন মল্লিক।
বড়পর্দায় অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে হাসি মজার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়, কিন্তু বাস্তবে অভিনেতার ব্যক্তিগত জীবনে প্রচুর উত্থান পতন রয়েছে। অভিনেত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর বর্তমানে শ্রীময়ী চট্টোরাজের সাথে তার সুখের দাম্পত্য জীবন হলেও ছোট থেকে অনেক লড়াই, অনেক তিক্ততা, অনেক কন্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়েই অভিনেতা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হয়ে টলিউডের মত একটি জায়গায় কমিক অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার এই লড়াইয়ের গল্প অনেক সময় একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন তারকা বিধায়ক।
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ছিলেন কাঞ্চন। পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। কোনওরকমে তাদের সংসার চলত। বাবা ছিলেন এক বেসরকারি কারখানার কর্মী। হঠাৎ করেই তার বাবার কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এরপরেও তারা ওপর কোনও আঁচ আসে নি, বাবা সংসার চালিয়ে গিয়েছেন এবং কাঞ্চন মল্লিক শৈশবের আনন্দ উপভোগ করেছেন বাবার ছত্রছায়ায়। কিন্তু এরপর দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় তার বাবা সম্পূর্ণভাবে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে বসে পড়লেন। এই সময় থেকেই অভিনেতার জীবনের লড়াই শুরু।
তখন কাঞ্চন মল্লিককে পরিবারের তরফ থেকে বলে দেওয়া হয় তার পরিবারের মধ্যে তিনি একমাত্র সদস্য যার পক্ষে উপার্জন করা সম্ভব, তাই তাকে উপার্জন করতে হবে। ১৫-১৬ বছর বয়সেই তখন তার ওপর সংসার দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। কাঞ্চন মল্লিক বলেন ছোট থেকেই তিনি ছিলেন সকলের কাছে ফাউয়ের মতো অতিরিক্ত। সেই সময় থেকেই কাঞ্চন মল্লিক মানুষ চিনতে শিখেছিলেন। পড়াশোনা করার পাশাপাশি কাজ করতেন কাঞ্চন মল্লিক। দিন রাত খেটে পরিশ্রম করতেন।
আরও পড়ুনঃ ‘এক আকাশের নীচে’তেও মহিলাদের যৌ’ন হেনস্থা করেছেন তিনি! রূপাঞ্জনা থেকে চৈতি, দেবলীনা সবাই কী মিথ্যে বলছে? আর উনি সাধু!
নিজের জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে কাঞ্চন মল্লিক বলেছেন হাজার বারোশো টাকা রোজগার করার জন্য সেলসম্যানের চাকরি থেকে শুরু করে মদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে জিনিস বিক্রি সবটাই করেছেন তিনি। কাজ করবার জন্য নাইট কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি সেই সময় চিকিৎসার অভাবে তার বোন মারা যায়। ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন তিনি, তবু মা-বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসতেন। তখন অভিনেতার একজন বন্ধু একটি থিয়েটার গ্রুপের একটি ছোট চরিত্রের জন্য অভিনেতাকে ডেকে নিয়ে যায়। সারাদিনের এত পরিশ্রমের মধ্যে থিয়েটার গ্রুপে কয়েক ঘন্টা সেই অভিনয় করেই তিনি জীবনীশক্তি খুঁজে পান, সেই থেকেই তার থিয়েটার ও অভিনয়কে ভালোবাসা এবং সেই থেকেই তার অভিনয় জগতে পদার্পণ।