শনিবার ছিল আরজি কর ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণার দিন। অবশেষে শিয়ালদহ আদালত রায় দিলো এই মর্মান্তিক ঘটনার। আগামী সোমবার ১২:৩০ টায় সঞ্জয় রায়ের জন্য বরাদ্দ শাস্তি ঘোষণা হবে বলে জানা গেছে। এই রায় সামনে আসতেই প্রশ্ন তুলেছেন টেলি অভিনেতা- অভিনেত্রীরা। তাঁদের প্রশ্ন সঞ্জয় রায় কি একাই দোষী? এই প্রশ্নই প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা গিয়েছে অভিনেত্রী উষসী, শ্রুতির কাছে, অন্যদিকে একই প্রশ্ন অভিনেতা দেবদূত ঘোষেরও।
বিচারক অনির্বান দাসের এজলাসে বহু প্রতীক্ষিত মামলা আরজি কর ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডের বিচার পাওয়া গেলো। এদিন সঞ্জয়কে কাঠগড়ায় তুলে বিচারক জানিয়ে দেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু), ১০৩(১) (খুন) ধারায় সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারপতি জানিয়েছেন, সোমবার সঞ্জয়ের পক্ষের কথাও শোনা হবে সাজা ঘোষণার পূ্র্বে। তবে সমগ্র দেশবাসীর আশা পূর্ণ হবে? অবশেষে কি এবার সুবিচারের পথে অভয়া?
এই রায় সামনে আসার পরই টেলি অভিনেতা অভিনেত্রীরা নিজের নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। অভিনেত্রী শ্রুতি দাস বললেন, “ধনঞ্জয়ের সময়েও ধন্ধে ছিলাম, এবারও ধন্ধে রয়েছি। ও যদি দোষী না হয় তো, এবার মুখ খুলুক। এখন তো আর কোনও ভয় নেই। ওর হয়তো মৃত্যুদণ্ড হয়ে যাবে। আর তো কিছু হারানোর নেই। যদি সঞ্জয় কিছু না করে থাকে, তো ওই একমাত্র পারে আসল বিচার পাওয়াতে। ধনঞ্জয়ের সময়ও শোনা গিয়েছিল, ধনঞ্জয়কে নাকি ফাঁসানো হয়েছিল। যদি সঞ্জয়ের ক্ষেত্রেও এটা হয়, তাহলে তো ওর মুখ খোলা উচিত। ও যদি সত্যিই প্রমাণ করতে চায় যে, কিছু করেনি। তাহলে এই সময়ই সব বলে দেওয়া উচিত সঞ্জয়ের। আর যদি দোষী না হয়েও,মুখ বুজে সব মেনে নেয়, তাহলে তো এর কোনও মানেই হয় না।”
পাশাপাশি উষসী চক্রবর্তী জানিয়েছেন “সঞ্জয়ের দোষী সাবস্ত্য করার মধ্যে দিয়ে কিন্তু সুবিচার পাওয়া গেল না। আর কারা দোষী, এই প্রশ্নটা তো আমাদের মনের মধ্যে জ্বলজ্বল করছে। আমাদের মেন ব্যাপারটা ছিল, অন ডিউটি হাসপাতালে একজন স্বাস্থ্যকর্মীর খুন। সঞ্জয় দোষী সাবস্ত্য হয়েছে, তা খুব ভালো কথা। কিন্তু ওর সঙ্গে আর কারা ছিল, তা তো জানা গেল না। সঞ্জয় তো নিশ্চয়ই সব জানে, আর কারা ছিল, কে ওকে ডেকে পাঠিয়ে ছিল, এসব প্রশ্ন তো সবার মনেই জাগছে। আমার কথা হল এই ধরনের মামলার রায়দান ইন ক্যামেরা হওয়া উচিত! অনেক মামলাই তো ইন ক্যামেরা হয়। আদালতের তো নিজস্ব ক্যামেরা থাকা উচিত। আমার মনে হয় সঞ্জয়ের কথা শোনা উচিত।”
আরও পড়ুনঃ কিডনি ছাড়া ও সবাইকে সব দিয়ে দিতে পারে, ওর মতো বড় মনের মানুষ হয় না! আদৃতকে প্রশংসায় ভরালেনসহকর্মীরা
অন্যদিকে অভিনেতা দেবদূত বলেছেন, “অভয়ার বাবার কথার সূত্র ধরেই বলছি, উনি বলেছিলেন এ ধরনের ঘটনা একজন মানুষ ঘটাতে পারে না। এই প্রশ্ন কিন্তু গোটা পৃথিবীর মানুষের। কতজন দোষী তা আমরা গুণতে চাই না। সঞ্জয় নিজে কথা বলতে চেয়েছে, বিচারপতি বলেছেন সোমবার সঞ্জয়ের কথা শুনবেন। কিন্তু আমার কথা হল, যেভাবে বিচার হচ্ছে, সিদ্ধান্ত হচ্ছে তা যেন মানুষের কাছে প্রকাশিত হয়। সঞ্জয় যখন কথা বলবে, তখন যেন বিনা বাধায় সে কথা বলতে পারে। তারপর বিচারক সঞ্জয়ের কথা শুনে সত্য-মিথ্যা সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর উপর আমার আস্থা রয়েছে। আজকের এই রায় সুবিচারের পথে একটা স্টেপিং স্টোন। আমার মনে হয় সঞ্জয় পুরো ঘটনার সঙ্গে সংযুক্ত, কিন্তু নির্ভয়াকে খুন করার নেপথ্যে কী উদ্দেশ্য ছিল, যদি ও একা করে থাকে, তাহলে তা কেন? এটা মানুষ জানতে চায়।”