বাংলার ঊর্ফি জাভেদ ! ভারতীয় নারীর অহংকার শাড়িকে ড্রেস বানিয়ে পরতেই বিতর্কের মুখে শোলাঙ্কি রায়

শাড়ি (Saree),যা ভারতের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেটিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। তবে কখনও কখনও এই পরীক্ষামূলক ফ্যাশন বিতর্কের জন্ম দেয়। সম্প্রতি, এসভিএফ ও হইচই যৌথভাবে শহরের এক বিলাসবহুল ৫ তারা হোটেলে আয়োজন করে ‘গল্পের পার্বণ ১৪৩২’ (Golper Parbon 1432) নামে একটি অনুষ্ঠান যেখানে মূলত এই দুই প্রযোজক সংস্থার তরফ থেকে লঞ্চ করা হয় ২৬ টি নতুন সিনেমা ও ওয়েব সিরিজের পোস্টার। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির গণ্যমান্য সব কলাকুশলীরা।

এদিন অনুষ্ঠানের থিম ছিল ‘লাল-কালো-সাদা’ আর এই ড্রেস কোড অনুসরণ করেই সকলে পড়ে এসেছিলেন নজর কারা পোশাক। যেখানে টলিউড অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী ওয়েট লুক নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানান সমালোচনা, সেখানে টলিউডের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর শাড়ি পরার ভঙ্গি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। কেউ বলছেন, “এটি আধুনিকতার ছোঁয়া”, আবার কেউ মনে করছেন “এটি ভারতীয় অহংকার শাড়ির অপমান”। একজন ক্ষোভ উগরে লিখেছেন, “এর চেয়ে এটা শাড়ি হিসেবে পড়লে অসম্ভব সুন্দর লাগতো!”

fashion

অন্যদিকে, আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “শাড়ি কাটল, ড্রেস হল না, আবার শাড়িও থাকলো না! এটা কেমন স্টাইল?” অনেকেই মনে করছেন, শাড়ির নিজস্ব সৌন্দর্য বজায় রাখা উচিত এবং অপ্রয়োজনীয় পরিবর্তন তাকে বিকৃত করে দিচ্ছে। কথা হচ্ছে ছোট পর্দা তথা বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ‘শোলাঙ্কি রায়’ এর। এদিন অভিনেত্রী ধরা দিলেন চওড়া সোনালি রঙের পাড় ও কালো উপর সোনালি কাজ করা বেনারসি শাড়ির তৈরী ফিউশন এক ড্রেসে। একজন তো লিখেই বসেছেন, “একেবারে বাঙলার ঊর্ফি জাভেদ লাগছে”। তবে, অনেকেই এই নতুন স্টাইলকে সমর্থন করেছেন।

আরও পড়ুনঃ দারুণ খবর! ৯১ বছর বয়সে নতুন উদ্যমে পর্দায় ফিরছেন ‘জন্মভূমি’-র পিসিমা! কোথায় দেখা যাবে তাঁকে?

এক অনুরাগী লিখেছেন, “She’s looking so breathtaking!” আবার আরেকজন বলছেন, “সিনেমার চরিত্রর মতন যদি পোশাকেও পরিবর্তন আসে, তাহলে নতুনত্ব মন্দ নয়।” যদিও এই শাড়ি বিতর্ক থামার কোনো লক্ষণ নেই, তবু ফ্যাশনের এই নিরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে সমান প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। কিছু ফ্যাশন বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে নতুনত্ব আনা উচিত, কিন্তু একে পুরোপুরি পরিবর্তন করা উচিত নয়। একজন নেটিজেনের ভাষায়, “শাড়িটা আমাদের ঐতিহ্য, তাই এটাকে তার নিজস্ব সৌন্দর্যে রাখা উচিত।”

যদিও বর্তমান প্রজন্ম ট্র্যাডিশনাল পোশাককে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসে, তবে তা যেন তার মৌলিকতা হারিয়ে না ফেলে। এই বিতর্কের মধ্যেই টলিউডের এই অভিনেত্রী চুপ রয়েছেন। তিনি হয়তো মনে করেন, ফ্যাশন হল ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়, এবং সমালোচনা আসবে-যাবে। তবে একথা অনস্বীকার্য, বাংলার সিনেমা ও ফ্যাশনে নতুন মাত্রা যোগ করতে গিয়ে অনেক সময় এমন কিছু সৃষ্টি হয় যা চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। প্রশ্ন থেকেই যায়—এটি নতুন ট্রেন্ড, নাকি ভারতীয় ঐতিহ্যের অপমান?