অভিনয় জগতে বহু বছর ধরে নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন ‘চান্দ্রেয়ী ঘোষ’ (Chandrayee Ghosh)। অভিনয় শুরু হয়েছিল সানন্দা পত্রিকায় মডেলিংয়ের হাত ধরে। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি চান্দ্রেয়ীকে। বড়পর্দা থেকে ওটিটি—সব মাধ্যমেই তিনি সাবলীল। তবে বাংলা ধারাবাহিকের দর্শকদের কাছে তাঁর নাম মানেই প্রথমেই মনে পড়ে যায় খল চরিত্রের একের পর এক অবিস্মরণীয় রূপ। ‘কটকটি রাক্ষসী’ থেকে ‘শৈল মা’—চরিত্রগুলোর মধ্যে দিয়ে তৈরি হয়েছে চান্দ্রেয়ীর এক আলাদা পরিচিতি।
অথচ এই চেনা পর্দার পেছনে রয়েছে এক কঠিন বাস্তব, এক লড়াইয়ের গল্প। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী শোনালেন নিজের জীবনের অজানা অধ্যায়। জানালেন, একসময় তাঁদের পরিবার ছিল স্বচ্ছল ও সুশিক্ষিত পরিবেশে বড় হওয়ার সমস্ত রকম সুযোগ ছিল তাঁর ও তাঁর দিদির। বাবা-মা সর্বদা চেয়েছিলেন মেয়েরা ভালো স্কুলে পড়াশোনা করুক, উন্নত পরিবেশে বেড়ে উঠুক।
কিন্তু জীবনের মোড়ে হঠাৎ করেই চাকরি হারান চান্দ্রেয়ীর বাবা। পরিবার পড়ে যায় গভীর আর্থিক সঙ্কটে। চাকরি হারানোর পর একেবারে সবকিছু হারাতে হয় তাঁদের। এমনকি খাবার কেনার মতো টাকাও ছিল না। সেসময় যিনি ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি চান্দ্রেয়ীর মাসি। প্রতিদিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার থেকে শুরু করে সংসারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাহিদা, সবেতেই পাশে ছিলেন তিনি।
অথচ এই দুঃসময়েও তাঁদের মা কখনও মেয়েদের বুঝতে দেননি কোনও কষ্ট। মেয়েদের পড়াশোনায় একটুও ঘাটতি হতে দেননি। চান্দ্রেয়ী জানিয়েছেন, জীবনে খারাপ সময়ে কীভাবে মনের জোর ধরে রাখা যায়, তা তিনি শিখেছেন তাঁর মায়ের কাছ থেকে। মা কখনও ভেঙে পড়েননি, কখনও দুশ্চিন্তায় ডুবে যাননি। বরং প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে শক্ত রেখেছেন পরিবারের জন্য।
আরও পড়ুনঃ সুবিধাভোগী বুড়ি! ছেলের অবর্তমানে বৌমার থেকে সেবা নিয়ে এখন ছেলেকে পেয়েই পাল্টি মেরেছে! কমলিনীর শাশুড়ির চরিত্র অসহ্য, বলছেন দর্শকরা!
আজ, সেই মা-ই যেন অভিনেত্রীর কাছে তাঁর নিজের মেয়ের মতো হয়ে গিয়েছেন। জীবনের সব কঠিন সময় পেরিয়ে আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। তবে এখনও স্বপ্ন দেখেন অভিনয়ের মাঝেই নিজেকে শেষ অবধি খুঁজে পাওয়ার। চান, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অভিনয় করে যেতে, এমনকি শুটিং ফ্লোরেই যেন পড়ে তাঁর শেষ নিঃশ্বাস—এটাই আজ তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ইচ্ছে।