বাঙালি বৌদের সাজের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ শাঁখা-পলা (Shankha-Pola)। এই ঐতিহ্যকেই হৃদয়ে ধারণ করেন অভিনেত্রী ‘মধুবনী গোস্বামী’ (Madhubani Goswami)। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে নিজের প্রিয় দোকানে গিয়ে নিয়ম করে শাঁখা-পলা পরেন তিনি। তবে শুধু সাধারণ শাঁখা-পলা নয়, বিশেষ কারুকার্য করা, নিজের পছন্দ মতো সাজানো শাঁখা-পলাতেই বিশ্বাস করেন তিনি। সেই কারণেই প্রতিবছর এই আচার তাঁর কাছে এক বিশেষ উপলক্ষ। সম্প্রতি নিজের ভ্লগে অভিনেত্রী শেয়ার করেছেন তাঁর এই রীতি, কীভাবে তিনি এই প্রথা পালন করেন, আর কেন তা তাঁর জীবনে এতটা গুরুত্বপূর্ণ।
এবার অবশ্য সেই নিয়মে খানিক বদল এসেছে। সাধারণত পুজোর ঠিক আগে এই রীতি পালন করলেও এ বছর জুন মাসেই শাঁখা-পলা পরে এসেছেন মধুবনী। সময়ের আগে হলেও, এই রীতির প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এতটুকুও কমেনি। বরং এ বছর পলার ডিজাইনেও এসেছে ভিন্নতা। শাঁখার মতোই কারুকার্য মেলে এমন পলা তৈরি করিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “প্রতি বছর মহালয়ার পরে আসি, এ বার একটু আগেভাগেই এলাম। আসলে সময় বার করাই দায় হয়ে যাচ্ছিল।”
তবে শাঁখা-পলা নিয়ে অভিনেত্রীর সাম্প্রতিক পোস্ট ঘিরে তৈরি হয়েছে নানান বিতর্ক। অনেকেই বলেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এসব অলঙ্কার শুধুই সাজের উপকরণ। কিন্তু মধুবনীর বিশ্বাস, এগুলো শুধুমাত্র গহনা নয়, বরং স্বামীর মঙ্গল এবং শুভচিহ্ন হিসেবে বাঙালিয়ানার প্রতীক। তাঁর মতে, ফ্যাশনের দোহাই দিয়ে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলো না পরেন, সেটা তাঁর নিজের পছন্দ হতে পারে, কিন্তু এই ঐতিহ্যের গুরুত্ব একেবারে খাটো করে দেখা ঠিক নয়।
অবশ্য অভিনেত্রী নিজেই ব্যতিক্রমীদের সম্মান করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, যাঁরা প্রফেশনের কারণে শাঁখা-পলা পরতে পারেন না, তাঁদের সিদ্ধান্তে তিনি সম্মান জানান। কিন্তু যাঁরা এগুলোকে ‘গাঁইয়া’, ‘ওল্ড ফ্যাশনড’ বলে ব্যঙ্গ করেন, তাঁদের জন্যই এই পোস্ট। তাঁর মতে, অনেক মহিলাই এই শাঁখা-পলা পরার সুযোগ পান না, অথচ যাঁদের সেই সৌভাগ্য আছে, তাঁরা যেন অন্তত সেই গুরুত্বটুকু বোঝেন।
আরও পড়ুনঃ “এক সময় ভাত জুটত না, খাবার কেনার একটা টাকাও ছিল না”— বাংলা টেলিভিশনের শক্তিশালী খলনায়িকার বাস্তব জীবন অনেকেরই অজানা! নিজের সংগ্রামের কথাই এবার জানালেন চান্দ্রেয়ী!
তবে এই পোস্টেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারও মতে, মোটা শাঁখা-পলা পরা আদৌ কোনও নতুন ট্রেন্ড নয়। এমনকি অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তের দিদি রাই সেনগুপ্তও মন্তব্য করেছেন, এই রীতি বহু পুরনো। হয়তো মধুবনী সেই ঐতিহ্যকে নিজের মতো করে পুনর্জীবিত করতে চেয়েছেন। কিন্তু তাতে অতীত ভুলে যাওয়ার কোনও জায়গা নেই বলেই মনে করছেন নেটিজেনদের একাংশ।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
