“আমি তো তোতলা!”— দুর্বলতা ছিল সহচর, লড়াই করে নিজেকে গড়েছেন তৃণা! বাংলা বলতে পারতেন না, ভাষার খামতি পেরিয়ে আজ তিনিই বাংলা টিভির প্রথম সারির মুখ!

আজ তিনি একজন সফল অভিনেত্রী। শুধুমাত্র ‘পরশুরাম: আজকের নায়ক’ (Parashuram: Ajker Nayok) ধারাবাহিকের নায়িকা হিসেবেই নয়, বরং বাংলা ধারাবাহিক জগতের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ হিসেবে ‘তৃণা সাহা’ (Trina Saha) নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। একের পর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তাঁর দক্ষ অভিনয় দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তবে এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক কঠিন লড়াই, এক অদম্য চেষ্টা। অভিনয়ের প্রতি অগাধ ভালোবাসাই তাঁকে আজকের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে।

শুরুর দিকে তৃণার উচ্চারণ নিয়ে অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন। কেউ কেউ তাঁকে ‘তোতলা’ বলে অবজ্ঞা করেছিলেন, এমনকি বাংলা উচ্চারণ নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। কিন্তু সেই সময় নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে, সমস্ত সমালোচনার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আজ তিনি নিজেই অকপটে স্বীকার করেছেন, তাঁর তোতলামির সমস্যাটি ছিল সত্যিই একধরনের অসুবিধা। কিন্তু তিনি এটিকে লজ্জার নয়, বরং চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন।

অভিনয়ের মাধ্যমে তোতলামি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা আজ তাঁকে এক অনুপ্রেরণার নাম করে তুলেছে, এমনটাই দাবি তাঁর অনুরাগীদের। তৃণার এই যাত্রায় তাঁর পাশে ছিলেন প্রযোজক ও পরিচালক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তৃণা নিজেই জানিয়েছেন, বাংলা উচ্চারণ শেখাতে তিনি তৃণাকে বর্ণপরিচয় পড়িয়েছেন। একজন শিক্ষকের মতো ধৈর্য নিয়ে সাহায্য করেছেন যাতে তৃণা নিজের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন।

শুধু স্ক্রিপ্ট মুখস্থ নয়, বরং বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন তৃণার মধ্যে গড়ে তুলেছেন তিনি। তৃণার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, তিনি কোনওভাবেই নিজেকে নিখুঁত মনে করেন না। বরং নিজের খুঁতগুলো মেনে নিয়েই তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছেন। এই খোলামেলা স্বীকারোক্তি আর আত্মবিশ্বাস তাঁর চরিত্রকে যেন আরও দৃঢ়তা দিয়েছে। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য শুধু প্রতিভাই নয়, সাহসও যে দরকার, তা তৃণা বারবার প্রমাণ করেছেন।

আরও পড়ুনঃ “একদিকে মা, আরেকদিকে মেয়ে— এই দুই সম্পর্কই আমায় ভাঙতেও দেয় না, থামতেও না!”— মায়ের শরীরে ক্যা’ন্সার, দু’কেজির টিউমার! মেয়ে ভূমিকে আগলে রেখেই নিঃশব্দে লড়ে চলেছেন কন্যাকুমারী!

বাংলা ছবিতে কাজ না পাওয়া নিয়েও তৃণার মনে কোনও অভিযোগ নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, সবকিছুরই একটা সময় হয়। কারও সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট না করেই নিজের মতো করে এগিয়ে যেতে চান তিনি। তাঁর এই ইতিবাচক মানসিকতা এবং নিজের দুর্বলতা মেনে নেওয়ার সাহস তাঁকে আলাদা করে তুলেছে বাকিদের থেকে। অভিনয় জগতের বাইরেও তাঁর এই অভিজ্ঞতা অনেককেই জীবনে অনুপ্রেরণা জোগাবে নিঃসন্দেহে।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।