“বড়দের যারা সম্মান করে না, তাদের আমি অপছন্দ করি”, “ছেলেও জানে নিয়ম না মানলে মা কথা বন্ধ করে দেবে”— মা হিসাবে অঞ্জনাও ‘ইন্দ্রাণী’র মতোই কঠোর! ছেলেকে কড়া শাসনে রেখেই মানুষ করেছেন অভিনেত্রী! জানেন তাঁর জীবনের নীতি?

পর্দায় তাঁকে দেখা যায় কখনও গম্ভীর এক মায়ের ভূমিকায়, কখনও কঠোর এক অভিভাবক হিসেবে। তার ব্যক্তিত্ব এতটাই শক্তিশালী যে, কোনও চরিত্রে তাঁকে রাখলেও নিজের ছাপ রেখে যান তিনি। সম্প্রতি জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘কুসুম’-এ (Kusum) তাঁর অনবদ্য অভিনয় ফের নজর কাড়ছে দর্শকদের। ধারাবাহিকে ইন্দ্রাণী নামে এক চরিত্রে দেখা যাচ্ছে ‘অঞ্জনা বসু’কে (Anjana Basu), যার চরিত্রের রাশভারী ভাব, নিয়মনিষ্ঠা আর দৃঢ় মানসিকতা এক আলাদা মাত্রা দিচ্ছে গল্পকে।

ইন্ডাস্ট্রিতে অঞ্জনা বসুকে নিয়ে একটাই কথা প্রচলিত – তিনি সহজে মিশে যান না, একটা দূরত্ব তৈরি করে রাখেন নিজের চারপাশে। এই কারণেই অনেকেই মনে করেন, প্রথম সাক্ষাতেই তাঁর সামনে কথা বলা কঠিন। বাস্তব জীবনে যেমন নিয়ম মেনে চলেন, চরিত্রের মধ্যেও সেই কঠোর শৃঙ্খলার ছাপ দেখা যায়। কিন্তু এ কি শুধুই বাইরের ইমেজ, নাকি বাস্তবেও তিনি ঠিক তেমনই? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের জবাব দেন অভিনেত্রী নিজেই।

অঞ্জনা বলেন, “আসলে নিজের চারদিকে একটা ‘অরা’ তৈরী করে রেখেছি, যেটা ভেদ করে অনেকেই ঢুকতে পারে না। আমি কখনই এমন কিছু করি না যাতে পদস্খলন হতে পারে। জ্ঞানত আমি এটাই মেনে চলি সব সময়ে, যে কারোর ব্যক্তিগত স্তরে ঢুকে নাক গলানো উচিত নয়।” তাঁর কথায়, এমন আবরণ তৈরি করতে হবে, যেটা ভেদ করা সকলের পক্ষে সহজ নয়। ধারাবাহিকে সবসময় যেমন তিনি আদর্শ মা, গম্ভীর এবং অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না, পর্দার বাইরে অঞ্জনাও কি রকম মা?

অভিনেত্রীর কথায়, “আমি কুসুমের ইন্দ্রানীর মতোই কঠোর। এক কথায় এই চরিত্র যেন আমারই প্রতিচ্ছবি। ইন্দ্রানীর মতোই অঞ্জনাও ভুলকে মেনে নেয় কিন্তু অন্যায়কে নয়। বড়দের যারা সন্মান করে না, তাদের আমি অপছন্দ করি। আমার ছেলে আমায় খুব মেনে চলে আর আমার প্রতিটা সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করে। এখন ও কলকাতায় থাকে না, কিন্তু ছোট থেকে কোনদিনও একা একা বন্ধুদের সাথে বা রাতে কোথাও যাওয়ার বায়না করেনি। শুধু শহর ছাড়ার আগে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে চেয়েছিল।

আমি বলেছিলাম ছয়টার মধ্যে বাড়ি ঢুকতে হবে।” তাঁর এই কঠোর মানসিকতা শুধুই পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনের মা হিসেবেও তিনি প্রায় একইরকম। ‘কুসুম’-এ ইন্দ্রাণীর মতোই বাস্তবের অঞ্জনা নিজের সন্তানকে বড় করেছেন অনুশাসনের মধ্যে রেখে। জানালেন, তাঁর ছেলে কোনওদিনই বাড়ির নিয়ম ভাঙেনি। ছোট থেকে নিজে থেকেই বুঝে চলেছে। কারণ সে জানে, মা রেগে গেলে কেবল বকবে না, কথা বলাও বন্ধ করে দিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ “আমি তো তোতলা!”— দুর্বলতা ছিল সহচর, লড়াই করে নিজেকে গড়েছেন তৃণা! বাংলা বলতে পারতেন না, ভাষার খামতি পেরিয়ে আজ তিনিই বাংলা টিভির প্রথম সারির মুখ!

এই নিখুঁত শৃঙ্খলা, ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা আর স্পষ্ট মতাদর্শই অঞ্জনা বসুকে আলাদা করে তুলেছে টলিউডের অন্যান্য অভিনেত্রীদের থেকে। তিনি আদর্শ মা হোন বা শাসক চরিত্রে রূপান্তরিত হোন, তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে যেন এক আত্মবিশ্বাসী, দৃঢ়চেতা নারীর ছায়া প্রতিফলিত হয়। ‘কুসুম’-এ তাঁর অভিনীত ইন্দ্রাণী চরিত্রটি দর্শকের মন ছুঁয়ে যাওয়ার কারণও এই বিশ্বাসযোগ্যতা—যেটা বাস্তব আর পর্দার মাঝে খুব একটা ফারাক রাখে না।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।