বর্তমান সমাজে বিয়ে যেমন স্বাভাবিক একটি পর্ব, তেমনই সহজ হয়েছে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসাও। সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ—সবার ক্ষেত্রেই আজকাল বিয়ের পর পরই সম্পর্ক ভাঙার নজির দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে ছেলেদের বিয়ে নিয়ে এক ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আনলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ‘মিঠু চক্রবর্তী’ (Mithu Chakraborty)। কিন্তু কি এমন সাহসিকতার কাজ করলেন তিনি?
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে মিঠু জানান, বহু আগেই তিনি তাঁর ছেলেদের বলে দিয়েছিলেন—“বিয়ে করো, কিন্তু নিজেও বাড়ি ছেড়ে আলাদা সংসার করতে পারবে এমন সক্ষমতা আগে দেখাও।” অভিনেত্রী নিজেই স্বীকার করেন, তার অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর মতে, সংসারে যখন দুটি মানুষ থাকে, তখন ছোটখাটো অশান্তি, মতানৈক্য, এমনকি অপছন্দের মুহূর্ত আসবেই। কিন্তু সেটা যেন মা-বাবা, শশুর-শাশুড়ি মায়ের সামনে না ঘটে, সেই চেষ্টাই ছিল মিঠুর।
মিঠুর কথায়, “আজকালকার ফ্ল্যাটগুলিতে ঘরের আয়তন যথেষ্ট কম। এমন পরিস্থিতিতে পাশের ঘরে যদি স্বামী-স্ত্রী কোনও ভালো-মন্দ কথা বলে, অন্যদের শোনা উচিৎ নয়। তেমনি আমাদের বয়স হচ্ছে, ছেলে-বউরা যদি রাত জেগে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আনন্দ করতে চায়, এক বাড়িতে সেটা সম্ভবও নয়।” তিনি মনে করেন, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক যাই হোক না কেন, উভয়ের বাড়ির সঙ্গে দূরত্ব থাকলে অনেক সমস্যাই এড়ানো যায়।
সেই কারণেই তিনি চেয়েছিলেন তাঁর ছেলেরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে নিজের মতো স্বাধীনভাবে সংসার গড়ে তুলুক। অভিনেত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি এমন মা নই যে প্রতিদিন ছেলের সংসারে ঢুকে পড়ব বা নিয়ন্ত্রণ করতে যাব।” এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ছেলেরা যখন এই সিদ্ধান্ত শোনে, প্রথমদিকে অবাক হয়েছিল। এমনকী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও হতবাক হয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ “টিফিনের পয়সায় সিনেমা দেখতাম, কোল্ড ড্রিঙ্কসের ঢাকনা ছুড়তাম!” “এখন টিকিট কেনাই দায়, তার ওপর পপকর্ন কিনলে বাজেট উড়ে যায়!” “মাল্টিপ্লেক্স মানেই আকাশছোঁয়া খরচ!”— বাংলা সিনেমা কেন পিছিয়ে পড়ছে, ব্যাখ্যা দিলেন শাশ্বত! বাঙালি আর সিনেমা দেখে কী করে? প্রশ্ন তুললেন অভিনেতা!
কিন্তু মিঠু জানতেন—এই পথই সবার মঙ্গলের জন্য সঠিক। বাস্তব জীবন থেকে শেখা এই দৃষ্টিভঙ্গি আজ সমাজে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নেটদুনিয়ায় ইতিমধ্যেই মিঠুর এই মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই প্রশংসা করেছেন তাঁর মানসিক দৃঢ়তা ও আধুনিক চিন্তাধারা। বর্তমান সময়ে সম্পর্ক, বিয়ে এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিয়ে তাঁর এই স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিঃসন্দেহে বহু মা-বাবার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।