“নায়িকা হতে গেলে একটু ‘বুকের খাঁজ’ দরকার!”— পরিচালকের কুৎসিত মন্তব্যে শিউরে উঠেছিলেন শোলাঙ্কি! ‘ব্রে’স্ট সা’র্জারি’ না করলে নায়িকা হওয়া যাবে না, সরাসরি বলেছিলেন এক পরিচালক! অবশেষে ফাঁস করলেন অভিনেত্রী তাঁর নাম!

বর্তমানে বিনোদন জগতে ‘নায়িকা’ শব্দটার সঙ্গে জুড়ে গেছে এক অদৃশ্য শর্ত— সবদিক থেকে দেখতে হবে পারফেক্ট! আর সেই নিখুঁত রূপের পিছনে লুকিয়ে থাকে কসমেটিক সার্জারি (Cosmetic Surgery), ইনজেকশন, রূপচর্চার নামে শরীরের উপর একপ্রকার অত্যাচার। একের পর এক অভিনেত্রী এই চাপে পা দিচ্ছেন। কিন্তু এই মূলস্রোতের বাইরে দাঁড়িয়ে সাহস করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন টলিউডের (Tollywood) জনপ্রিয় অভিনেত্রী ‘শোলাঙ্কি রায়’ (Solanki Roy)

সম্প্রতি এক পডকাস্টে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শোলাঙ্কি জানান, তিনি কখনও মুখে কোনও ইনজেকশন নেননি, কোনও কসমেটিক সার্জারিও করাননি। আর এই ‘স্বাভাবিক’ থাকার সিদ্ধান্তই তাঁকে বারবার করিয়েছে হেনস্তা! অনেকেই তাঁকে বলেছেন, তাঁর মুখ সিনেমার পর্দায় ঠিক ‘মানায় না’। অথচ নিজের শরীরে কোনও কৃত্রিম হস্তক্ষেপ না করাটাই তো স্বাভাবিক হওয়া উচিত! কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা যেন উল্টো।

শুধু মুখ নয়, নিজের চিরকালীন রোগা চেহারার জন্যও নানা মন্তব্য শুনতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি একটা সময়ে আত্মবিশ্বাসের ভিত পর্যন্ত কেঁপে গিয়েছিল। কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি পারিবারিক অনুষ্ঠানে গেলেও মানুষ খোঁটা দিতে ছাড়তেন না, “এত রোগা কেন?” শুনতে শুনতে একসময় শোলাঙ্কি নিজেকে গুটিয়ে নেন। নিজেকে মেলে ধরার ইচ্ছে চাপা পড়ে যায় সমাজের সৌন্দর্য মাপার নিয়মে।

তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনান শোলাঙ্কি, যা আজও তাঁর মন উজ্জ্বল। এক পরিচালক তাঁকে বলেন, নায়িকা হতে গেলে ব্রেস্ট সার্জারি করা উচিত, কারণ বুকের ‘খাঁজ’ না থাকলে ‘নায়িকা’ হওয়া যায় না! শোলাঙ্কি হতবাক হলেও, সেই মুহূর্তে নিজেকে সামলে নেন। তবে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—এই কথাটা যদি কোনও নতুন বা অল্প বয়সী অভিনেত্রী শুনতেন, কীভাবে সামলাতেন? এই ধরণের মন্তব্য মানসিকভাবে যে কতটা গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে, তা কেবল ভুক্তভোগী মেয়েরাই বোঝেন।

আরও পড়ুনঃ “যাঁরা সমালোচনা করছে, তাঁরা হিংসা করে! আমি যেটা পারি, তাঁরা সেটা পারে না!”— গর্ভাবস্থার ছদ্মবেশে মধুবনীর মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি! সন্তান আসছে না, ব্যাগ আসছে! প্রচারের প্যাঁচে ক্ষু’ব্ধ দর্শক, রাজা-মধুবনীর ধোকাবাজিতে সরগরম নেটদুনিয়া! উঠল ‘সস্তা প্রচার’-এর অভিযোগ!

শোলাঙ্কির এই খোলাখুলি স্বীকারোক্তি ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, গ্ল্যামার দুনিয়ার ঝলমলে আলোর আড়ালে কতটা কালো ছায়া লুকিয়ে থাকে। সাহস করে সেই মুখোশ ছিঁড়ে সত্যি বলার মতো অভিনেত্রী টলিউডে হাতে গোনা। আর তাঁদের মধ্যে শোলাঙ্কি রায় আজ স্পষ্টতই আলাদা হয়ে উঠলেন—একটা নাম, যিনি সৌন্দর্যের নামে চলা এই অবৈধ চাপের বিরুদ্ধে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।