“অভিনয় আসার ইচ্ছে ওর কোনদিনও ছিল না, ‘গোল্ড মেডেল’ পেতেই খিদেটা ওকে আরও বেশি করে চেপে ধরল!”— মেয়ে দীপাবলিকে নিয়ে বাবা চিরঞ্জিতের গর্ব! সুপারস্টারের কন্যা হয়েও আলোচনার বাইরে, নিজের পথেই হাঁটছেন তিনি!

বাংলা সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক ‘চিরঞ্জিত চক্রবর্তী’ (Chiranjeet Chakraborty) এখন অনেকটাই পরিবারকেন্দ্রিক। নব্বইয়ের দশকে প্রসেনজিৎ, তাপস পালের সঙ্গে চিরঞ্জিতের নামও সুপারস্টারদের তালিকায় ছিল অন্যতম। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি মানেই ছিল ব্লকবাস্টার ছবির গ্যারান্টি। কিন্তু এখন তিনি অভিনয় থেকে অনেকটাই দূরে, মাঝে মধ্যে ওটিটিতে কাজ করছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বরাবরই স্ত্রী রত্নাবলী (Ratnabali Chakraborty)এবং মেয়ে ‘দীপাবলি চক্রবর্তী’ (Deepabali Chakraborty) তাঁর জীবনের কেন্দ্রে থেকেছেন।

বর্তমানে মেয়ের বিয়ের পর, স্ত্রীর সঙ্গেই কাটছে অভিনেতার দিন। চিরঞ্জিতের মেয়ে দীপাবলি চক্রবর্তীও বাবার মতো লাইমলাইটে থাকেন না। তিনি এবং তাঁর মা বরাবরই মিডিয়ার চোখের আড়ালে থাকতে পছন্দ করেন। তবে দীপাবলি শুধু গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড থেকে দূরেই নন, বরং পড়াশোনার দিকেই তাঁর আসল মনোযোগ ছিল বরাবর। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী দীপাবলি পড়াশোনা করেছেন ‘গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলে’। তারপর ‘মাইক্রোবায়োলজি’ নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন বেঙ্গালুরুতে। সেখান থেকে এমএসসি পাশ করার পর তাঁর জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যেখানে জনপ্রিয় অভিনেতারা চান পরবর্তী প্রজন্মকে একই পেশায় রেখে যেতে, কেন তিনি মেয়েকে অভিনয়ে উৎসাহ দেননি? উত্তরে অভিনেতা বলেন, “পড়াশোনায় এত ভালো হয়ে উঠেছিল যে ‘গোল্ড মেডেল’ পেল, তারপর থেকেই সেই খিদেটা ওকে আরও বেশি করে চেপে ধরল। অভিনয় আসার ইচ্ছে ওর কোনদিনও ছিল না, আর পড়াশোনার প্রতি উৎসাহ দেখে আমরাও জোর করিনি।” তিনি আরও বলেন, “যারা পড়াশুনায় মোটামুটি বা অল্প ভালো তারা পেশা খোঁজে।

কিন্তু যারা একবার ওই মেডেল হাতে পায়, তারা পড়াশোনাকেই জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে বেছে নেয়।” তাঁর এই মন্তব্য শুধু দীপাবলির প্রতি গর্বই প্রকাশ করে না, বরং বাবা হিসেবে তাঁর দায়িত্ববোধ এবং মেয়ের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাও তুলে ধরে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে দীপাবলির বিয়ে হয় নাম করা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আকাশ আগারওয়ালের সঙ্গে। এরপর তাঁরা আমেরিকায় পাড়ি দেন এবং বর্তমানে টেক্সাসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বিদেশে থাকলেও দীপাবলি পড়াশোনার ধারা থামাননি।

আরও পড়ুনঃ ‘‘আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম শাশুড়িমার হাতের জাদু!’’—কেন রান্না করতে পারতেন না গায়িকা শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নিজের জীবনের অজানা কাহিনী জানালেন গায়িকা!

হাউস্টনের ‘হেলথ সায়েন্স সেন্টার’ থেকে তিনি ‘ডক্টরেট’ সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে ‘ইউটিএমডি ক্যা’ন্সার সেন্টারে’ ‘পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার’ হিসেবে নিজের পেশাগত জীবন শুরু করেন। ২০১৭ সালে তাঁদের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে স্বামী, মেয়ে এবং গবেষণাকেন্দ্রিক কর্মজীবন নিয়েই ব্যস্ত থাকেন দীপাবলি। তবে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, দীপাবলি কলকাতায় বাবা-মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতেও ভালোবাসেন। বিশেষ করে দুর্গাপূজো বা অন্য উৎসব উপলক্ষে তিনি ভারতে ফিরে আসেন। অন্যদিকে চিরঞ্জিত ও রত্নাবলীও সুযোগ পেলে মেয়ের কাছে আমেরিকায় যান।