“পুজো করি না, বরং সব খাওয়াই।” “আমরা মটন খেলে, গোপালকেও দি”— নবনীতা-রাজার বক্তব্যে ধর্মীয় আবেগে চরম আঘাত! গোপালকে ‘মাংস’ ভোগের কথায় ক্ষোভের ঝড়! ‘আপনারাই হিন্দু সমাজের লজ্জা, ছিঃ!’ ‘গোপাল খেলার জিনিস নয়, এই পাপের চরম শাস্তি পাবেন!’– দর্শকদের তীব্র প্রতিক্রিয়া!

বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ ‘নবনীতা দে’ (Nabanita Dey) বর্তমানে স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘গৃহপ্রবেশ’-এ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন। এর আগে ‘তোমাদের রাণী’, ‘খোকা বাবু’, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘মেয়েবেলা’ এবং ‘রাঙা বউ’ সহ নানা মেগা সিরিয়ালে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে নবনীতা স্বামী ‘রাজা চট্টোপাধ্যায়’ (Raja Chatterjee) এবং কন্যাকে নিয়ে সুখী পরিবার গড়েছেন। রাজাও একজন প্রতিভাবান অভিনেতা, যিনি প্রধানত টেলিভিশনের খল চরিত্রে অভিনয় করেন। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের জুলাইয়ে নবনীতা দ্বিতীয়বার রাজাকে বিয়ে করেন।

দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে রাজার সঙ্গে, নবনীতার প্রথম পক্ষের মেয়ের সুসম্পর্কও বজায় রয়েছে। সম্প্রতি তারা নেতাজিনগরে একটি নতুন ফ্ল্যাট আর নিজেদের জিমও শুরু করেছেন, তার সঙ্গে সমাজ মাধ্যমেও বেশ খোলামেলা থাকেন তিনি। নবনীতা ও স্বামী রাজা, কন্যা-সহ সম্প্রতি নর্থ বেঙ্গলে অবসরযাত্রায় গিয়েছিলেন। পরিবারিক এক দুপুরের মধ্যাহ্নভোজের ভিডিওই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ক্লিপটিতে দেখা যায়, সপরিবারে বসে খাচ্ছেন তাঁরা এবং হঠাৎ নবনীতার মেয়ে একটি পিতলের ‘গোপাল মূর্তি’কে নিজের প্লেট থেকে ভাত খাইয়ে দিচ্ছে!

ঘটনাটা অনেকের চোখে অস্বস্তিকর মনে হয়েছে। ঘটনা সামনে আসার পর নবনীতা ঘটনাটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বললেন, “আমরা গোপালকে ঠাকুর হিসেবে নয়, সন্তান হিসেবে পালন করি। আমি কখনওই ফুল-জল দিয়ে ওকে পুজো করি না, বরং আমাদের সঙ্গে রাখি সবসময়। আমরা যা খাই ওকেও তাই খাওয়াই, আমরা যদি পান্তা ভাত খাই, ও পান্তা ভাত খাবে আর আমরা যদি মটন খাই ও সেটাও খাবে।” ভিডিও প্রকাশিত হতেই নেটিজেনরা সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। অনেকেই নবনীতার আচরণকে অনুপযুক্ত বলে চিহ্নিত করেছেন, কেউ আবার কটূক্তি-ভরা মন্তব্য করতেও ছাড়েননি।

কেউ বলেছেন, “আপনাদের অভিনয়ের সাথে সবকিছু গুলিয়ে দেবেন না, গোপাল আপনার অভিনয়ের পাত্র নয়!” কারোর মতে, “আপনারাই হিন্দু সমাজের লজ্জার কারণ! গোপাল ছেলে খেলার জিনিস নয়, উনি ভগবান আর দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে!” কারোর কটাক্ষ,”পুতুল নিয়ে খেলা করছেন কিন্তু ওটা ঠাকুর, এই পাপটা তোলা থাকছে ওপারে গিয়ে জবাব দিতে হবে। কারন কৃষ্ণ ভক্তরা মাছ-মাংস ছুঁয়ে দেখে না আর সেখানে তাকে এইসব ভোগ দেওয়া হচ্ছে ছিঃছিঃছিঃ!” তো কেউ এবার বলেছেন, “ঠাকুর নিয়ে ইয়ার্কি মারছেন? অতি আধুনিকতার ফল এটা।

ঠিক সময় বুঝতে পারবেন। ভগবান এদেরকে চরম শাস্তি দেবে, অত্যন্ত চরম যেটা ওরা কল্পনা করতে পারবে না!” কেউ আবার আর্থিক প্রণোদনা-সম্বন্ধে সন্দেহ উত্থাপন করে বলেছেন, “আর কোনও দিক থেকে টাকা-পয়সা আসছে না, তাই যা পাচ্ছে তাই করছে। এখন দেখলে গোপালকে নিয়ে একটা ভিডিও করি, লোকের ছিঃ বলুক আর ছাই বলুক, পয়সা তো আসবে! অভিনয় তোরাই শিখেছিস সত্যি কথা।” এই প্রতিক্রিয়ার ঝড়ে জন্মেছে একটি বড় বিতর্ক— অনেকে বলছেন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সেলেবদের খোলাখুলি থাকা স্বাভাবিক হলেও,

আরও পড়ুনঃ “শুভশ্রী ইন্টেন্সলি ইন্টেলিজেন্ট একজন অভিনেত্রী!” “দুই সন্তানকে কোলে নিয়ে মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলেছে, ওর মতো কেউ নেই!”— শুভশ্রীকে নিয়ে আবেগঘন মন্তব্য কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের! শুভশ্রী আর অন্যদের মধ্যে কোন পার্থক্য তুলে ধরলেন তিনি?

ধর্মীয় বা সংগঠিত আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই ধরনের বদল বোঝাপড়া ছাড়া করা উচিত নয়। আবার একাংশ বলছেন, নবনীতার অভিজ্ঞতা ও পারিবারিক মানসিকতা অনুধাবন না করে অনাকাঙ্ক্ষিত সমালোচনা করা হচ্ছে। ঘটনায় কেউ নিন্দা জানালেন, কেউ কটাক্ষে ডুবলেন, সব মিলিয়ে এই ঘটনা দ্রুতই বাক-যুদ্ধের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্পষ্ট যে, সমাজ মাধ্যমে ব্যক্তিগত আচরণ ও ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে যে কোনও ছোট ঘটনার দ্রুত বড় প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। শেষ একটা কথাই বলা যায়, বিতর্ক হলেও প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাসকে সম্মান করা জরুরি।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।