“যাঁরা এখনও লড়ছেন তাঁরা মিষ্টির বাক্স হাতে আসে কিন্তু যারা চূড়ান্ত সফলতা পেয়েছে তারা মনে রাখেনি”—২২ হাজারেরও বেশি পর্ব উপহার দিয়ে সফলতার শীর্ষে স্নেহাশিস, তাও রয়েছে আক্ষেপ

টেলিভিশনের পর্দায় আজকের দিনে যে ধারাবাহিকই শীর্ষে, তার পেছনে রয়েছে এমন একজন শিল্পীর মেধা ও পরিশ্রম যিনি বড়পর্দা ছেড়ে ছোটপর্দায় নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। দীর্ঘ ২০ বছরের পেশাজীবনে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নামই এখন ছোটপর্দার সফলতার প্রতীক। তবে যে স্বাচ্ছন্দ্য এবং সম্মান তিনি এখন পান, তা সহজে আসেনি।

স্নেহাশিস জানান, “যাঁরা চূড়ান্ত সফল, তাঁরা ভুলেও আমাকে মনে রাখেন না। কিন্তু যাঁরা এখনও লড়ছেন, তাঁরা মিষ্টির বাক্স হাতে এসে শুভেচ্ছা জানান।” এই কথায় তাঁর জীবন দর্শনের এক অন্তর্নিহিত সত্য ফুটে ওঠে। মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান, শৈশব থেকে গান, বাদ্যযন্ত্র ও নাটকের প্রতি অনুরাগ তাঁর সৃজনশীলতার ভিত্তি গড়ে তুলেছে। ক্লাস টেন থেকে তিনি ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে পড়াতেন, এবং এখনও সুযোগ পেলে তা চালিয়ে যেতে চান।

বড়পর্দায় খ্যাতি অর্জনের পরও তিনি ছোটপর্দায় নামিয়েছেন পদক্ষেপ। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রয়াত নির্দেশ অনিমেষ ভট্টাচার্য তাঁর প্রতিভা অনুধাবন করেছিলেন। বুম্বাদার হাত ধরে তিনি অনেক হিট ছবির কাহিনি লিখেছেন, এবং ২০০৫ সালে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খুলে ধারাবাহিক নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন। আজকের তার টেলিভিশন ধারাবাহিক জনপ্রিয়তা, তার প্রযোজনা সংস্থা ‘ব্লু’জ়’ এবং বলিউডে হিন্দি ধারাবাহিকের সফলতা এই দীর্ঘ যাত্রার ফল।

স্নেহাশিস বলেছেন, “প্রায় ২২ হাজারেরও বেশি পর্ব, ৪৫টি টেলিফিল্ম, ২৫টি সিনেমা এবং অজস্র গান—সবকিছু আমি উপহার দিয়েছি। আমার প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ সফল হয়েছে।” ছোটপর্দায় আসার পরও তিনি একথা প্রমাণ করেছেন যে টেলিফিল্ম বড় ছবির সমতুল্য হতে পারে। সাম্প্রতিক ‘আজকের পরশুরাম’ এমনই একটি উদাহরণ, যেখানে তিনি চেষ্টা করেছেন চলচ্চিত্রের স্বাদ টেলিভিশনে আনতে।

আরও পড়ুনঃ টিআরপি লড়াইয়ে নতুন মোড়, অবশেষে রাণী ভবানীকে হারিয়ে ফের শীর্ষে পরশুরাম! চিরসখা ছুঁল সাফল্যের শিখর! স্টার জলসার জয় অব্যাহত, কোন ধারাবাহিক এগিয়ে, কে পিছিয়ে?

প্রথম ধারাবাহিক ‘কখনও মেঘ কখনও বৃষ্টি’ আজও স্মৃতিতে অম্লান। কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মিমি দত্তের সঙ্গে ১১৭৬ পর্বের এই ধারাবাহিক দর্শকদের মন জয় করেছিল। প্রথম কাজের এই সাফল্য স্নেহাশিসকে কখনো পিছনে তাকাতে দেয়নি। আজ, ২০ বছরের পর, তিনি কেবল একজন প্রযোজক বা গল্পকার নন, তিনি ছোটপর্দার জন্য এক অনন্য শিল্পী এবং প্রেরণার প্রতীক।