সবাই ভেবেছিল মিরাকল হবে, কিন্তু প্লুটো সত্যিই নেই! মায়ের জেদের ব’লি প্লুটো— এমন পরিণতি কি ধারাবাহিকের জন্য অতিরিক্ত নির্মম নয়? লেখিকার এই সিদ্ধান্ত কি ঠিক? নাকি প্লুটোকে বাঁচিয়ে দিলেই ভালো হতো! আপনাদের মতে এটা কতটা বাস্তবসম্মত?

স্টার জলসার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরসখা’-র (Chiroshokha) সাম্প্রতিক পর্বে এমন এক মোড় এসেছে, যা দর্শকদের নাড়া দিয়ে গিয়েছে গভীরভাবে। বিয়ের আসর ভরে উঠেছিল আনন্দে, কিন্তু হঠাৎই সেখানে নেমে আসে শোকের ছায়া। এক মায়ের জেদের কাছে হার মানে ছেলের ইচ্ছে, আর সেই হতাশার চরম পরিণতিতে প্লুটো নিজের জীবনই শেষ করে ফেলে। নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে কনের সাজে অপেক্ষা করছিল মৌ, অথচ সঙ্গী হয়ে ওঠার আগেই ঘরে নি’থর পড়ে থাকল প্লুটোর দে’হ!

গল্পের এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে একটি চিঠি, যা প্লুটো লিখে গিয়েছিল পরিবারের উদ্দেশ্যে। সেই চিঠি পড়তেই ভেঙে পড়েন বাবা, আর চারপাশের সবাই স্তম্ভিত হয়ে যান। চিঠির মতে, এই ঘটনার মূল দায়ী আসলে প্লুটোর মা। কারণ মিঠির প্রতি প্লুটোর ভালোবাসা উপেক্ষা করে জোর করে অন্য সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল তার ওপর। কিন্তু প্লুটোর মা তখনও মিঠিকেই দোষারোপ করতে থাকেন। এই দৃশ্যগুলো যেন দর্শকদের মনে আরও প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়— একজন মা ঠিক কতটা সন্তানের ইচ্ছে উপেক্ষা করে চলতে পারে?

এদিকে কনের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তুতি চলছেই। অতিথিদের আনাগোনা, আলো-আলোয় ভরা ঘর, হাসির গল্পে মেতে ওঠা বন্ধুদের আড্ডা— সবই মুহূর্তের মধ্যে অচেনা হয়ে যায়। কারণ পত্রের তখন চলছে জীবনের সবচেয়ে করুণ অধ্যায়। মৌ, যে সেজে উঠেছিল কনে সাজে, সে জানতই না যে তার প্রতীক্ষার মানুষ আর কোনওদিন ফিরবে না। এই দ্বন্দ্বময় পরিস্থিতি গল্পটিকে করেছে আরও বাস্তব, আবার একই সঙ্গে তা দর্শকদের ভেতরে জাগিয়েছে অসংখ্য সংশয়। দর্শকের দৃষ্টি দিয়ে প্রশ্ন উঠছে, এই মৃত্যু আদৌ কি প্রয়োজন ছিল?

অনেকেই যেমন মনে করেছেন, তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালের প্লুটোকে নিয়ে গেলে হয়তো মিরাকলের মতো কিছু ঘটত, হয়তো নতুন করে শুরু হতো প্লুটো আর মিঠির জীবন। কিন্তু লেখিকা সেই সম্ভাবনাকে উল্টে দিয়ে দেখিয়েছেন— বাস্তবে সব গল্প সুখের সমাপ্তি পায় না। তবুও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কি সত্যিই প্লুটোর পরিণতি এভাবেই দেখানো উচিত ছিল? নাকি তাকে বাঁচিয়ে রাখাই যুক্তিযুক্ত হতো? মিঠির জন্য নিঃসন্দেহে এই ঘটনা একটা বড় আঘাত, কিন্তু মৌয়ের কী অবস্থা হবে এরপর?

আরও পড়ুনঃ টলিপাড়ায় গুঞ্জন! শন ব্যানার্জি নন, নীল ভট্টাচার্যই লীনা গাঙ্গুলীর নতুন ধারাবাহিকের নায়ক? নায়িকার রূপে ফিরছেন মধুমিতা সরকার

মিঠি প্রাক্তনের প্রীতি একটু হলেও উদাসীন হয়েছিল, কিন্তু মৌ নিজের বর্তমান-ভবিষ্যৎ প্লুটোর সঙ্গেই কল্পনা করেছিল। এই পর্ব দেখে অনেক দর্শকের মনে প্রশ্ন জেগেছে— গল্প কি বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই হলো, নাকি অতিরিক্ত নাটকীয়তার খাতিরে এমন সমাপ্তি টানা হলো? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, একজন সন্তানের জীবনে কি জেদের চাপ প্রাধান্য পাওয়া উচিত, নাকি তার নিজের ইচ্ছে, নিজের সুখকেই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন? চিরসখা-র এই মোড় দর্শকদের মনে তাই শুধু দুঃখ নয়, রেখে গেল গভীর বিতর্কের খোরাকও।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।