বাংলা টেলিভিশনের অভিনেত্রী ‘শ্বেতা ভট্টাচার্য’ (Sweta Bhattacharya) আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। অভিনয় জগতে দীর্ঘদিন ধরে নিজের পরিচিতি গড়ে তুললেও এবার তাঁর একটি মন্তব্যই তাঁকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে। একের পর এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। বর্তমানে ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে শ্যামলীর চরিত্রে তাঁর অভিনয়ও দারুণ সাড়া পাচ্ছে। কিন্তু সেই জনপ্রিয়তায় ভাঁটা পড়ল যখন তিনি প্রকাশ্যে জানালেন যে, “মাচা অনুষ্ঠান করতে আমার ভালো লাগে না, মাথার উপর অনেক দায়িত্ব, টাকার দরকার তাই এই ধরনের শো করি।”
উল্লেখ্য, এক সময় প্রতিটি পাড়ার প্রাণকেন্দ্র ছিল মাইক বাজিয়ে মাচা অনুষ্ঠান, যেখানে কিশোর কুমার বা লতা-আশার গান গেয়ে মাতিয়ে তুলতেন শিল্পীরা। আশি-নব্বই দশকের প্রজন্মের কাছে সেই স্মৃতি আজও ভীষণ মূল্যবান। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহুরে আড্ডা ও অনুষ্ঠান বদলে গেছে, আগের মতো আর এতটা রমরমা দেখা যায় না। তবুও গ্রামবাংলার মেলায়, গঞ্জের প্রান্তে কিংবা জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও যাত্রা, কীর্তন বা মঞ্চভিত্তিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে মানুষের ভিড় জমে। কিন্তু আধুনিক সময়ে অনেকেই এসবকে তাচ্ছিল্যের চোখে দেখেন, যেন এই শিল্পের মর্যাদা শহরের আলো-আঁধারি ভরা বড় স্টেজেই সীমাবদ্ধ।
শ্বেতার মাচা নিয়ে এমন বক্তব্য অনেকের কাছে অসম্মানজনক মনে হয়েছে। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। দর্শকদের মতে, মাচা অনুষ্ঠান বাংলার সংস্কৃতির এক অঙ্গ, যেখানে সাধারণ মানুষ শিল্পীদের কাছ থেকে গান, নাচ কিংবা অভিনয়ের স্বাদ পান। অথচ শ্বেতার মন্তব্যে মনে হয়েছে তিনি সেই মঞ্চকে হেয় করেছেন। তাই অনেকেই সরাসরি তাঁর উদ্দেশ্যে তির্যক মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। এক নেটিজেন লিখেছেন, “অতিরিক্ত ভালো সাজতে গেলে যা হয়! সিম্প্যাথী নিতে পছন্দ করে সবসময়! ১৫ বছর ধরে অভিনয় করছে তারপরও আবার মুখ্য চরিত্রে! এরপরও ওর টাকার অভাব ফুরায় না!
সবসময় একই কথা ওর মাথার উপর অনেক দায়িত্ব! কতটাকা লাগে বাপু! মোটামুটি সবসময় তো কাজের উপরই থাকো।” অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করছেন, শ্বেতা যদি সত্যিই মনে করে থাকেন মাচা তাঁর কাছে কেবল উপার্জনের মাধ্যম, তবে অন্তত কথাগুলো একটু ভদ্রভাবে বলা উচিত ছিল। এক সমালোচক লিখেছেন, “মাচা করা খারাপ কিছু না, এতে সাধারণ মানুষের অনেকটা কাছে আসা যায়.. আর এখন থেকে যখন আপনার দরকার পূরণ হচ্ছে, তখন ভদ্রভাবে স্টেজ শো বলা যেত না?!” এরকম মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তাঁর বক্তব্যের শব্দচয়নই বড় আঘাত করেছে মানুষের মনে।
আরও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ লিখেছেন, “যেই জায়গা টা আপনি ভালোবাসেন না, সেই জায়গাটা অনেক শিল্পীর কাছে মন্দির। বেশি ভালো সাজতে সাজতে ভুলভাল কথা বলে ফেলছেন।” অন্য এক নেটিজেন কটাক্ষ করেছেন, “কত বড় বড় শিল্পীরা মাচা করছেন, আর উনি কি যে বলেন নিজেই জানে না, তাহলে এই পেশায় উনার আসা উচিত হয়নি, আমাদের মতো সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করতে পারতেন, জলে নামবো কিন্তু চুল ভেজাবো না, উনার হয়েছে সেই অবস্থা!” এই মন্তব্যগুলো থেকেই স্পষ্ট, শ্বেতার বক্তব্য অনেকের কাছেই শিল্পীসুলভ বিনয়হীনতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ ছোটপর্দায় ঝড় তোলা অভিনেত্রী তিতাস ভৌমিক, ‘তোমায় আমায় মিলে’-র ‘কাকলি’ চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় আজও ভোলা যায় না! বিপুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেলেন তিনি? আজ পর্দা ছেড়ে কেন অন্তরাল জীবন? কোথায় আছেন, কী করছেন এখন?
এমনকি আরও একজন দর্শক পরিষ্কার ভাষায় লিখেছেন, “ম্যাডাম যেটা মাচা বলছেন সেটা একটি শিল্পীদের মঞ্চ, সবসময় কেউই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান করেন না। মাচা বলা বন্ধ করে নিজের শিল্পসত্ত্বা সেখানে প্রদর্শন করুন।” এই প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করছে, সাধারণ মানুষের চোখে শ্বেতার বক্তব্য তাঁর ভাবমূর্তিকে অনেকটাই নষ্ট করেছে। দর্শকদের কাছে একজন শিল্পীর আসল পরিচয় তাঁর ভক্তদের প্রতি দায়বদ্ধতা আর শ্রদ্ধাবোধ। অথচ শ্বেতার সাম্প্রতিক মন্তব্যে সেই শ্রদ্ধাবোধই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। জনপ্রিয় অভিনেত্রীর এই বিতর্কিত মন্তব্য কি তাঁর ক্যারিয়ারেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এখন সেটাই দেখার।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
“শুভশ্রীর সঙ্গে ছিলাম মাত্র ৪ বছর, রুক্মিণীর সঙ্গে ১২ বছর!” শুভশ্রীকে প্রতি কথায় অপমান করেন কেন? ‘বুড়ো ভাম, অন্যকে ছোট করার আগে নিজের দিকে তাকান!’ ‘শুভশ্রী আজ সফল, তোমরা শুধু সহ’বাস করেই যাও!’– দেবকে কড়া ভাষায় নিন্দা ভক্তদের!