টিভির পর্দায় দেখা নিয়মিত ধারাবাহিকগুলো কখনও কখনও সত্যিই হয়ে ওঠে মানুষের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। দর্শকরা গল্পগুলোর সঙ্গে নিজেকে এতটাই একাত্ম করে ফেলেন যে প্রিয় চরিত্ররা খারাপ বা ভালো কিছুর সম্মুখীন হলে, তাঁদেরও সেই দুঃখ-আনন্দ অনুভব হয়। সমাজ মাধ্যমে প্রায়ই দর্শকদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় ধারাবাহিক গুলিকে ঘিরে। এবারও যেন সেই ঘটনার ব্যতিক্রম হলো না। স্টার জলসার ‘চিরসখা’ (Chiroshokha) ধারাবাহিকে বর্তমান প্লট অনুযায়ী প্লুটোর মৃ’ত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।
ধারাবাহিকের চরিত্রগুলি থেকে আপামর দর্শক, কেউই যেন ধাক্কা সামলে উঠতে পারছেন না। সাধারণত ধারাবাহিকের গল্পে কোনও চরিত্র আ’ত্মহ”ত্যার চেষ্টা করলেও, শেষ মুহূর্তে তার জীবন ফিরে আসে। এক্ষেত্রে দেখা গেল ব্যতিক্রম। অনেকদিন একরকম গল্পে অভ্যস্ত হয়ে এই ব্যতিক্রম যেন দর্শকদের দৃষ্টিকটু লেগেছে। অনেকেই বলছেন, মানুষ ধারাবাহিক দেখে নিতান্তই বিনোদনের জন্য। সেক্ষেত্রে দর্শকদের পছন্দের চরিত্রকে এমন করে চরম পরিণতিতে ঠেলে দেওয়া লেখিকার উচিত হয়নি।
সম্প্রতি পর্বে দেখা গেল, প্লুটোর মৃ’তদেহ শববাহী গাড়িতে করে শ্মশানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, এমন দৃশ্য ধারাবাহিককে অত্যন্ত কম দেখা যায়। একদিকে যেমন মিঠি নিজেকে সামলাতে পারছে না, কোথাও না কোথাও গিয়ে নিজেকেই দোষী মনে করছে এখন। সে ভাবছে সময় থাকতে যদি প্লুটোর হাতটা ধরে নিতো, তাহলে এই পরিণতি হতো না। কিন্তু সবচেয়ে বড় ধাক্কা পেয়েছেন প্লুটোর অভিভাবকরা। গল্প থেকে বাস্তব সর্বত্রই মায়েরা নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারেন না। এখানেও প্লেটোর মাকে যথাযথ আবেগ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে প্লুটোর বাবার কথাগুলো যথেষ্ট মনে গেঁথে যাওয়ার মতো। একপর্যায়ে তাকে বলতে শোনা যায়, “ছেলেটার জ্বর হলে সেই কষ্ট সহ্য করতে পারতো না। কোনদিনও ওকে একটা আঘাতও পেতে দেইনি… আজ হাত ধরে আগুনের মধ্যে ঠেলে দিতে হবে। কি করে সহ্য করবে ও এত তাপ? পুরো শরীরটা শেষ হয়ে যাবে ওর!” এই কথাগুলির প্রতিটা শব্দ এতটাই শক্তি রাখে যে দর্শকদের চোখ থেকে জল আনতে বাধ্য। এদিকে দর্শকদের প্রতিক্রিয়াও কিছু কম না। সমাজ মাধ্যমে অনেকেই নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন বলেছেন, “শববাহী গাড়িতে এভাবে নিয়ে যাওয়া আমি মেনতে পারলাম না।
আমি প্লুটোর মা হলে প্রতিবাদ করতাম।” অন্যজনের কথায়, “প্লুটো মরে গেলে সমস্যা তো সমাধান কিছু হলো না, না ওর মা শিক্ষা পেলো না মৌ শিক্ষা পেলো। বেঁচে থাকতেই বোঝানো যেতে পারতো প্লুটোর মনের কথাটা। উনি একটা সামাজিক বার্তা দিলেন, মেরুদণ্ডহীন ছেলে মেয়ের যদি কাউকে পছন্দ থেকেই থাকে। তবে সুইসাইড করো। জাস্ট ছি ছি ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছি না!” আরও একজন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন,”আমি প্রতিদিন দেখি কিন্তু এই সীনটা দেখে আমার সত্যি সত্যি খুব খারাপ লেগেছে। প্লুটো মারা গেছে কান্নাকাটি হচ্ছে সব ঠিক আছে।
আরও পড়ুনঃ কিছুদিন আগেই হারিয়েছেন প্রিয়জনকে, শরীরে বাসা বেঁধেছে চতুর্থ স্তরের ক্যা’ন্সার, মৃ’ত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে প্রতিদিন নতুন করে বাঁচছেন জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেত্রী-পরিচালক! তাঁর লড়াইয়ের কাহিনী চোখে জল আনবে আপনার
এরপর শববাহী গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে এটা না দেখালেই পারতো!” অন্যজনের কটাক্ষ, “এভাবে দেখানো উচিত নয়। এত ডিটেল দেখানোর কি আছে? কাঁচের গাড়ির ভিতরে শোয়ানো একেবারেই উচিত নয়। যতই হোক একটা ইয়াং ছেলে, তার বাড়ির লোকদের কত খারাপ লাগে দেখতে।” প্রসঙ্গত, এই ধারাবাহিকে প্লটোর চরিত্রে অভিনয় করছেন পার্থ বেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের ছেলে হয়ে অভিনয়ের স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় আসা। পরবর্তীতে জুনিয়র আটেস্ট হিসেবে কাজ করলেও এইটি তার জীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।