পর্দার দুঁদে ভিলেন আজ সময়ের কাছে পরাজিত! শরীরের ভ’গ্নদশায় চূড়ান্ত পরিণতি বর্ষীয়ান অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের! লাঠি ভর করেও চলতে অক্ষম, সাহায্য করছে অন্যের হাত! শোকাহ’ত দর্শক থেকে শিল্পী মহল!

সময় এবং বয়স কাউকেই রেহাই দেয় না, এই কথাটা চিরসত্য। মানুষটা হতে পারে মহান মনিষী অথবা ঘৃণ্য অপরাধী, শেষ জীবনের পরিণতিটা কমপক্ষে সবার সমান। ঠিক তেমনই বাংলা সিনেমার পর্দায় যাঁকে দর্শক ভিলেন রূপে দেখে শিউরে উঠতেন, তিনি আজ একেবারেই অন্য বাস্তবের মুখোমুখি। বর্ষীয়ান অভিনেতা ‘বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়’-এর (Biplab Chatterjee) বর্তমান চেহারাটা যেন শেষ জীবনের সেই নির্মম সময়ের সাক্ষী। তবুও টলিউডে তাঁর অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই।

সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বিপ্লব ধীরে ধীরে পরিণত হন সেই সময়ের অন্যতম ভয়ঙ্কর পর্দার খলনায়কে। দর্শক তাঁকে ঘৃণা করেছেন চরিত্রের জন্য, গালমন্দ করেছেন সিনেমা হলে বসেই, আর সেটাকেই তিনি নিজের অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ পুরস্কার ভেবেছেন। ১৯৪৭ সালের ৮ জুলাই জন্ম, ১৯৭০ সালে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। অভিনয়, থিয়েটার, টেলিভিশন— সব জায়গাতেই তাঁর দাপুটে উপস্থিতি আজও মনে রেখেছে মানুষ। তবে বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের জীবন শুধু অভিনয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না।

বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন একেবারে মাটির মানুষ। এমনকি রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সক্রিয় ছিলেন তরুণ বয়সে। কমিউনিস্ট পার্টির হয়ে লড়াই করেছেন, ভোটের ময়দানেও দাঁড়িয়েছিলেন একসময়। আর সেই কারণেই তাঁকে টালিগঞ্জের অনেক চিত্র পরিচালকের চোখে ‘অসুবিধাজনক’ করে তুলেছিল। তিনি নাকি কাজ পেতে কখনও মাথা নত করেননি, সোজা মেরুদণ্ডে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। আর সেই কারণেই শেষদিকে তিনি অনেক কাজের সুযোগও হারিয়েছেন। বর্তমানে তেমন কাজও পান না তিনি।

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে তাঁর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে অভিনেতা লাঠি নিয়েও সোজা হাঁটতে পারছেন না। দু’জন লোকের ভরসা ছাড়া পা ফেলার ক্ষমতাই যেন নেই আর। দীর্ঘ কেরিয়ারে দর্শককে ভীত করেছে তাঁর অভিনয়, অথচ আজ তাঁকে দেখেই মানুষের চোখে জল আসছে। একসময়কার পর্দার দুঁদে ভিলেন বিপ্লবকে নিয়েই আজ নানা মন্তব্য ঘুরছে জনমনে। কেউ কেউ সহমর্মিতা জানাচ্ছেন, আবার অনেকে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না। ৭৮ বছর বয়সেই এই পরিণতি অনেককে ভাবিয়েছে।

অনেকে বলছেন, “সারাজীবন নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করার ফলেই আজ এই পরিণতি!” আবার কেউ পাল্টা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বয়সই আসল কারণ, এর সঙ্গে শিল্পীর চরিত্রাভিনয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। তুলনায় আনা হচ্ছে আরও প্রবীণ শিল্পীদের নাম, যাঁরা এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই বিতর্কই যেন তাঁর দুর্বল শারীরিক অবস্থাকে আরও আলোচনার কেন্দ্রে এনে ফেলেছে। বয়স, অসুস্থতা, আর শারীরিক ভগ্নদশা মিলে যেন এক অপ্রতিরোধ্য বন্ধন তৈরি করেছে তাঁর চারপাশে। তবুও আজ এই মানুষটার সবচেয়ে বড় চাওয়া, সবার আশীর্বাদ আর একটু শান্তি।

আরও পড়ুনঃভুয়ো দাম্পত্যের আড়ালে অপরাধের সাম্রাজ্য, সে’ক্স র‍্যা’কেট থেকে মে’য়ে’পা’চার— এক এক করে বেরোচ্ছে চন্দ্র-সোহিনীর অপরাধ তালিকা! মানবিকতার সুযোগ নিয়ে চলছিল অন্ধকার ব্যবসা! পালানোর ছক ভেস্তে গেল, প্রমাণ হাতে মেঘালয়ের পুলিশের জালে ধরা পড়ল দু’জনে!

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।
https://www.facebook.com/share/r/1Ct8wvK3N5/